Sylhet Today 24 PRINT

চিত্রনায়িকা শিমুকে হত্যার পর নিখোঁজের জিডি করেন স্বামী

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ১৮ জানুয়ারী, ২০২২

চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুকে হত্যার পর তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল স্ত্রী নিখোঁজ হওয়ার কারণ দেখিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। রোববার রাত ১২টায় রাজধানীর কলাবাগান থানায় এই জিডি করা হয়।

এর আগে নোবেল তার বাল্যবন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদের সহযোগিতায় শিমুর মরদেহ দুটি চটের বস্তায় ভরেন। মরদেহ কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ইউনিয়নের আলীপুর ব্রিজের ৩০০ গজ উত্তরে পাকা রাস্তা সংলগ্ন ঝোপের ভেতর ফেলে আসা হয়।

সোমবার সকালে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। এরপর আটক করা হয় শিমুর স্বামী নোবেলসহ দুজনকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের উল্লেখ করে পুলিশের পক্ষ থেকে এমনটা দাবি করা হয়েছে।

ঢাকা জেলা পুলিশ বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন নোবেল। হত্যার কারণ হিসেবে তিনি পারিবারিক কলহের কথা জানিয়েছেন। তবে বিস্তারিত তদন্ত শেষে হত্যার প্রকৃত কারণ বলা যাবে।

শিমু হত্যার ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন। নোবেল, তার বন্ধু ফরহাদ ও আরেকজনকে আসামি করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলাটি করা হয়।

এর আগে দুপুরে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, ‘পারিবারিক বিষয় ও দাম্পত্য কলহের কারণে শিমুকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করেছে নোবেল এবং লাশটি গুম করতে সহায়তা করেছে ফরহাদ। দুজনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা গেছে।’

জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের উল্লেখ করে মারুফ হোসেন বলেন, ‘রোববার সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে শিমুকে তার স্বামী নোবেল হত্যা করে। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি যে কলাবাগানে গ্রিনরোডের বাসাতেই শিমুকে হত্যা করা হয়েছে।’

রোববার সকালে হত্যা করা হলেও মরদেহটি কখন কেরানীগঞ্জে ফেলা হয় তা জানাতে পারেনি পুলিশ।

কলাবাগান থানায় নোবেলের করা জিডির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বিপ্লব হাসান বলেন, ‘জিডিতে নোবেল উল্লেখ করেছেন যে তার স্ত্রী সকালে কাউকে না বলে বেরিয়েছেন। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।’

স্ত্রীকে হত্যার পর নিজেকে সন্দেহের বাইরে রাখতেই নোবেল জিডি করেছেন- এমন ধারণা কলাবাগান থানা পুলিশের।

পুলিশ পারিবারিক কলহের কথা বললেও শিমুর ভাই খোকন বলছেন, ‘টুকটাক সমস্যা সব পরিবারেই থাকে। এমন কোনো সমস্যা ছিল না, যেটার জন্য শিমুকে মেরে ফেলতে হবে।’

'ওই বাড়িতে আমাদের অন্য আত্মীয়-স্বজনও থাকেন। শিমুকে হত্যার সময় তার দুই সন্তান ওই আত্মীয়দের বাসায় ছিল।’

তবে সন্তানরা নিজ বাসা ছেড়ে অন্য বাসায় কেন ছিল তা জানাতে পারেননি তিনি।

সোমবার মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রাখা হয়।

ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার দুপুরে ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘শিমুর গলায় দাগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রশি বা এ জাতীয় কিছু দিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

নোবেল ও ফরহাদ তিনদিনের রিমান্ডে

শিমু হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নোবেল ও নোবেলের বন্ধু আব্দুল্লাহ ফরহাদকে তিন দিনের হেফাজতে নিয়েছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক চুন্নু মিয়া মঙ্গলবার আসামিদের আদালতে হাজির করে দশদিনের রিমান্ড চান।

শুনানি শেষে সন্ধ্যায় ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম তিনদিন রিমান্ডের আদেশ দেন।

হত্যার কারণ সম্পর্কে নোবেল অনেক কিছুই বলেছেন বলে জানান কেরানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী রমজানুল হক। রিমান্ড শেষে সেসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.