সিলেটটুডে ডেস্ক | ১৯ জানুয়ারী, ২০২২
২০১৮ সালের দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মীরেরবাগ বালুচর ওরিয়েন্টাল স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহাগকে অপহরণের পর খুনের মামলায় ইয়াসিন মাহমুদ শাহীনকে (২৮) মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। পাশাপাশি শাহীনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়াও দণ্ডবিধির আইনের ২০১ ধারায় তাকে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত জাহানের আদালত আসামির উপস্থিততে এ রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে ইয়াসিন মাহমুদ শাহীনকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শাকিল জিয়াছমিন এসব তথ্য জানান।
এদিন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সোহাগের পরিবার। সোহাগের বাবা ইদ্রীস খান বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করব, উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে। আসামির দ্রুত ফাঁসি কার্যকর হবে। কারও যেন আমাদের মত বাবা-মায়ের বুক খালি না হয়। গত ৪ বছর আগে আমার ছেলে পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান পরীক্ষা বাসায় ফিরছিল, ওই সময় তাকে অপহরণ করা হয়। এরপর আমার ছেলেকে নির্মমভাবে স্কচটেপ পেচিয়ে হত্যা করা হয়। তার কিন অপরাধ ছিল? সে কি অন্যায় করেছিল? আমার ছেলে হত্যাকারীর বিচার যেন দ্রুত শেষ হয়।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সোহাগ স্কুল থেকে এসে তার মা সুফি বেগমের মোবাইল নিয়ে গেমস খেলতে খেলতে বাসার বাইরে যায়। এ সময় কৌশলে শাহীন ভুক্তভোগী সোহাগকে অপরহরণ করে নিয়ে যায়। পরে সোহাগের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তিনি। এক ঘণ্টার মধ্যে টাকা না দিলে সোহাগকে মেরে ফেলার হুমকি দেন শাহিন। সোহাগের পরিবার বিষয়টি র্যাবকে জানায়। র্যাব বিষয়টি থানাকে জানাতে বলে। এরই মাঝে আরও ২/৩ বার টাকা চেয়ে ফোন দেয় শাহিন। পরে থানা পুলিশ মোবাইল টেকনোলজির সহায়তায় শাহিনকে মীরেরবাগ বালুর মাঠ থেকে গ্রেপ্তার করে। তার স্বীকারোক্তি মতে বাসা থেকে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সোহাগের হাত, নাক, মুখ, স্কচটেপ দিয়ে বাঁধা সোহাগকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওইদিনই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত সোহাগের বাবা।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর মামলাটি তদন্ত করে শাহিন এবং তার বন্ধু সাজ্জাদ আহমেদ নিশাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সাব-ইন্সপেক্টর আশরাফুল আলম। এরপর সাজ্জাদকে অব্যাহতি দিয়ে শাহিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।
মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।