Sylhet Today 24 PRINT

যুক্তরাষ্ট্রে ৮ লবিস্ট নিয়োগ করেছে বিএনপি-জামায়াত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ২৬ জানুয়ারী, ২০২২

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন- ফাইল ছবি

সরকার ও দেশবিরোধী প্রচারণা চালাতে বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি-জামায়াত আট লবিস্টফার্ম নিয়োগ করেছে বলে সংসদে তথ্য দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ অধিবেশন শুরু হলে বুধবার এ-সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন তিনি।

গত ২৩ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকা বিএনপির লবিস্ট নিয়োগের তথ্য চান। সে সময় বিস্তারিত তথ্যের জন্য তিনি সময় চেয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লবিস্ট নিয়োগ দেশটির আইন অনুযায়ী বৈধ প্রক্রিয়া। ভারত, পাকিস্তান, কাতার, ইরান, ইরাক, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কাসহ পৃথিবীর অনেক দেশ ও প্রতিষ্ঠানই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য লবিস্ট নিয়োগ করে থাকে। জামায়াত-বিএনপি মোট আটটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে।

‘এগুলো আমার তথ্য নয়, যেগুলো নিবন্ধন করেছে সে তথ্যগুলোই দেয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে একটি ফার্মকে নিয়োগ করেছিল জামায়াত। এর উদ্দেশ্য ছিল, তখন যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চলমান ছিল, সেটা বন্ধ করার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের জন্য তারা এই লবিস্ট নিয়োগ করে এবং এর জন্য তারা দেড় লাখ ডলার দেয়। তারা এ কাজগুলো করে যাতে বিচার বন্ধ করা যায়। তখনও তারা ইউএস কংগ্রেসের মেম্বারদেরও এনগেজ করেছিল। আরও ৫০ হাজার ডলার দিয়ে কেসিবিয়ান অ্যাসোসিয়েটস নামের একটি কোম্পানিকে তারা নিয়োগ করে একই কারণে।

‘ইউএস সরকারকে প্রভাবিত করার জন্য তাদের একটি সংস্থা হলো পিস অ্যান্ড জাস্টিস। জিয়াউল ইসলামের পক্ষ থেকে একটি জামায়াত-বিএনপির প্রতিষ্ঠান এক লাখ ৩২ হাজার ডলার দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ করে একই কারণে। পরে যদি দেখেন কমডাক্ট পাবলিক অ্যাফেয়ার্স আউট রিচ, সে জন্য তারা লবিস্ট নিয়োগ করে।’

জামায়াতের পাশাপাশি বিএনপিও লবিস্ট নিয়োগ করে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি ফেব্রুয়ারি ২০১৫ থেকে এপ্রিল ২০১৭ এতগুলো দিন ২৭ লাখ ডলার প্রতি মাসে দিয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার। এই তথ্যগুলো আমি বানাইনি, এগুলো আমেরিকান ওয়েবসাইটে আছে। আপনারাও দেখতে পারেন। সেখান থেকেই আমরা সংগ্রহ করেছি।

‘আমেরিকায় যে লবিস্ট নিয়োগ করা হয় তারা তাদের আইন অনুযায়ী কী কারণে নিয়েছে, কত টাকা নিয়েছে, সেটা রেজিস্ট্রার করে। সেখান থেকে আমরা তথ্য পেয়েছি। ২০১৯ সালের অক্টোবরে, এটা খুব তাজ্জবের বিষয়। বিএনপির কিছু নেতারা আমেরিকায় গিয়েছেন। তাদের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করার জন্য, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ার জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিল। এটা খুবই দুঃখের বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘যেটা মুজিবুল হক চুন্নু সাহেব বলেছিলেন যে লবিস্ট নিয়োগ করা অন্যায় নয়, কিন্তু লবিস্ট কী কারণে নিয়োগ করা হয়েছে, সেটা হচ্ছে দেখার বিষয়। আরেকটি বিষয় লবিস্টের টাকা কোথা থেকে গেল, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলতে চাই যে, তারা যে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন দুঃখের বিষয় হচ্ছে, তাদের লবিস্টরা এমন সব বক্তব্য তুলে ধরেছেন তা দেশের মানুষ জানলে দুঃখিতই শুধু হবে না, তাদের ধিক্কার দেবে। কারণ লবিস্টরা চিঠি দিয়েছে, আমেরিকানদের বলেছে, তোমরা যে বাংলাদেশে সাহায্য-সহযোগিতা করো- এগুলো তোমরা বন্ধ করে দাও।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো বন্ধ করলে কী হবে? এই যে আপনারা যারা বিরোধী দলে আছেন, যে যেখানে আছেন, নাগরিকরা দুই বেলা খেতে পারেন, ইলেকট্রিসিটি পান, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে- এই উন্নয়ন যেন ব্যাহত হয়, এ জন্য তারা ইউএস সরকারে বলছেন এগুলো। আমি বিশ্বাস করতে পারি না, নিশ্চয়ই বিএনপির মাঠে ময়দানে যে কর্মীরা আছেন, তারা কেউই চাইবেন না দেশের অমঙ্গল হোক।

‘তারা কেউই চাইবেন না ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হোক। কিন্তু তাদের কিছু নেতৃস্থানীয় লোক তাদের অগোচরে এমন কাজ করেছেন যে, আমার বিশ্বাস, এখানে যারা সংসদ সদস্য আছেন, তারা এক বাক্যে স্বীকার করেন এ ধরনের লবিস্ট তারা বাংলাদেশের জন্য চাইবেন না।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.