Sylhet Today 24 PRINT

এক চীন নীতিতেই অটল বাংলাদেশ

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ০৪ আগস্ট, ২০২২

স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনায় নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে ‘এক চীন নীতি’। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুনরায় এই নীতির পক্ষে নিজ অবস্থান ব্যক্ত করেছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে দেশের এই অবস্থান তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। এর আগে চীনকে সমর্থন করে এক বিবৃতি নিজস্ব ফেসবুক পেজে পোস্ট করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এটা নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশ বরাবরই এক চীন নীতিতে বিশ্বাস করে। এ নিয়ে নতুন কোনো উত্তেজনা চায় না ঢাকা।

‘এমনিতেই বিশ্ব এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। নতুন সমস্যা তৈরি হোক, এটা আমরা চাই না। বাংলাদেশ সব সময়ই এক চীন নীতিতে বিশ্বাস করে। এ নিয়ে নতুন করে কোনো সংঘাত চায় না বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, তাইওয়ান প্রণালিতে উদ্ভূত সংকট গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযত থাকার আহ্বান জানায়।

এতে বলা হয়, এই ইস্যুতে কোনো পক্ষেরই এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া ঠিক হবে না, যা বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করে।

বাংলাদেশ ‘ওয়ান চায়না’ নীতির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে এবং ইউএন চার্টার ও সংলাপের মাধ্যমে সব পক্ষকে মতভেদ দূর করার আহ্বান জানাচ্ছে।

এদিকে ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং তার ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশের এক চীন নীতি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। ইউএস হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি চীনের চীনের তীব্র বিরোধিতা উপেক্ষা করে ২ আগস্ট তাইওয়ান অঞ্চল পরিদর্শন করেন। এটি এক চীন নীতি এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্র নীতি ও বিধানের গুরুতর লঙ্ঘন।

‘পেলোসির এই সফরে যৌথ বিবৃতি চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করে, তাইওয়ানের স্বাধীনতার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে একটি ভুল সংকেত পাঠায় এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক ভিত্তির ‌ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চীন দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করে এবং কঠোর নিন্দা জানায়।’

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘বিশ্বে কেবল একটি চীন রয়েছে, তাইওয়ান চীনের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সরকার পুরো চীনের প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র আইনি সরকার। এক চীন নীতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সর্বজনীন ঐকমত্য এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি মৌলিক বিষয়।

‘চীনের তাইওয়ান অঞ্চলে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফর শুধু তাইওয়ান প্রণালিজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং এই অঞ্চলে উত্তেজনা ও সংঘাত সৃষ্টি করে, ইতোমধ্যে সমস্যায় জর্জরিত বিশ্বে আরও অনিশ্চয়তা নিয়ে আসে।’

লি জিমিং বলেন, “চীন ও বাংলাদেশ ভালো প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং নির্ভরযোগ্য অংশীদার। দুই দেশ সব সময় নিজ নিজ সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা-সংক্রান্ত মূল স্বার্থের বিষয়ে একে অপরকে বুঝেছে এবং সমর্থন করেছে। এক চীন নীতির প্রতি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি ও ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’র দৃঢ় বিরোধিতার প্রশংসা করে চীন।

‘আমরা বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ এক চীন নীতি মেনে চলবে, তাইওয়ান প্রশ্নে চীনের বৈধ ও ন্যায্য অবস্থান বুঝবে ও সমর্থন করবে এবং আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি রক্ষায় চীনের সঙ্গে একত্রে কাজ করবে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.