Sylhet Today 24 PRINT

৭ দলের সমন্বয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশ

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৮ আগস্ট, ২০২২

ছোট ছোট সাতটি দল ও সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ করেছে। আর এর পরপরই নানা ইস্যুতে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে তারা।

এই জোটে আছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে। জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব এতে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চ হবে জনগণের মুক্তির কাফেলা।’

তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র নয়, ওপেন ঘোষণা করে সরকারবিরোধী আন্দোলন করবে গণতন্ত্র মঞ্চ৷ সরকারবিরোধী লড়াইয়ের বিকল্প নেই।’

জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে সংগ্রামে অংশ নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

মঞ্চের রূপরেখা তুলে ধরেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি জানান, আগামী বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিক্ষোভ ও মিছিল করবেন তারা। এই কর্মসূচির বিস্তারিত পরে জানাবেন তারা।

জোটের রূপরেখায় বলা হয়, ‘আগামী নির্বাচন সামনে রেখে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা এবং অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে এবং একটি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’

এই জোটের দুটি দল ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির শরিক হিসেবে ঐক্যফ্রন্টে ছিল। এগুলো হলো জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য।

বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়তে বিভিন্ন দলের সঙ্গে যে সংলাপ করেছে, তাতে এই জোটের পাঁচটি দল অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য ছাড়াও আছে গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। প্রতিটি বৈঠকের পর যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা এসেছে।

গত ৩ আগস্ট রাজধানীতে একটি আলোচনায় গণতন্ত্র মঞ্চের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেয়া হয়। সেদিন নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না ও গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে গিয়ে তারা তৃতীয় শক্তি হতে চান। তাদের বিবেচনায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির চরিত্র একই।

সেদিন মান্না বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভিত্তি নেই। মানুষের এখন এমন অবস্থা তারা আওয়ামী লীগকেও বিশ্বাস করে না। আবার বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকেও বিশ্বাস করে না। তারা বিকল্প চায়। আমরা সে চেষ্টা করছি।…আমরা একটা পরিবর্তন চাই এবং মানুষকে সেটি বোঝাতে হবে। এই পরিবর্তন শুধু সরকারের পরিবর্তন না, রাষ্ট্রব্যবস্থারও পরিবর্তন।’

নুর বলেন, ‘আমরা গত ৩৪ বছরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলকেই ক্ষমতায় দেখেছি। আমরা দুই দলেরই চরিত্র দেখেছি। তাদের চরিত্র একই। এই দুই দল ক্ষমতায় থাকলে জনগণের কিছুই হবে না। এ জন্য তৃতীয় কোনো শক্তিকে আমাদের ক্ষমতায় নিতে হবে।’

বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়ার আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে আমাদের ঐক্য গড়তে হবে। এই ঐক্যে একটা নির্যাতিত দল হিসেবে বিএনপিকে সঙ্গে রাখতে পারি। কিন্তু তাদের হাতে ক্ষমতা ছাড়া যাবে না।’

আত্মপ্রকাশের পর জোটের রূপরেখায় বলা হয়, ‘রাষ্ট্রের তিন অঙ্গ- সংসদ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা ও সরকারের জবাবদিহির কার্যকরী ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

‘সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার। একই সঙ্গে ফেডারেল পদ্ধতির সরকারব্যবস্থা বিষয়ে আলোচনার জন্য জাতীয় কমিশন গঠন।

‘বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, নিম্ন আদালতকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে তার পরিচালনা ও তদারকি উচ্চ আদালতের হাতে ন্যস্ত করা, প্রধান বিচারপতিসহ বিচারক নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

‘মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নীতিতে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের জীবন ও মর্যাদা নিশ্চিত করা।

‘দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির টেকসই প্রকৃতিবান্ধব ভিত্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল জনগণের জন্য সমান সুযোগের নিশ্চয়তা তৈরি।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.