Sylhet Today 24 PRINT

জামাইকে ফাঁসাতে মেয়েকে খুন করলেন বাবা, ৭ বছর পর রহস্য উন্মোচন

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ২২ জানুয়ারী, ২০২৩

ভালোবেসে বিয়ে করায় ক্ষুব্ধ বাবা আবদুল কুদ্দুস খাঁর হাতেই পরিকল্পিত খুনের শিকার হন টাঙ্গাইলের কালিহাতির তরুণী পারুল আক্তার। শুধু তাই নয় সেই খুনের দায় মেয়ের জামাইয়ের ওপর চাপাতে চেয়েছিলেন কুদ্দুস।

এ হত্যাকাণ্ডের সাত বছর পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে ধরা পড়েছেন কুদ্দুস ও তার সহযোগী মোকাদ্দেছ ওরফে মোকা মণ্ডল। গ্রেপ্তার দুজনই আদালতে এ বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআইর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি জানান, কুদ্দুস তিন মেয়ের মধ্যে পারুল আক্তারকে ভালো জায়গায় বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারুল দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় কালিহাতির মো. নাছির উদ্দিন ওরফে বাবুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তারা বিয়ে করতে চাইলেও পারুলের বাবা রাজি হননি। একপর্যায়ে ২০১২ সালে নাসির ও পারুল পালিয়ে বিয়ে করে আশুলিয়ায় বসবাস শুরু করেন। নাসির চাকরি নেন পোশাক কারখানায়। একসময় নানা কারণে তাদের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি দেখা দিলে পারুল তার বাবাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। ওই সময় ভালো ছেলে দেখে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে মেয়েকে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখান কুদ্দুস। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ১৯ জুলাই পারুল তার বাবা বাড়িতে চলে যান। কিন্তু ওই দিন কুদ্দুস তার মেয়েকে নিজ বাড়িতে না নিয়ে ভূঞাপুরে বন্ধু মোকাদ্দেছের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, পারুলকে জয়পুরহাটের তুলসী গঙ্গা নদীর পাশে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ নদীতে ফেলে দিয়ে অভিযুক্তরা টাঙ্গাইলে চলে আসেন।

ঘটনার তদন্তের বিষয়ে পিবিআই প্রধান বলেন,‘ ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট পারুলের স্বামী নাছিরের পরিবারের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের আদালতে মামলা করেন পারুলের বাবা। কালিহাতি থানা পুলিশ তদন্ত করে প্রেম করে বিয়ে করার সংশ্লিষ্টতা পায়। কিন্তু ঘটনাস্থল তাদের এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকা মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে।’

‘পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি), পিবিআই (টাঙ্গাইল), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করে একই প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর কুদ্দুস নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন আদালতে মেয়ের জামাইর বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আবেদন করেন। এর ধারাবাহিকতায় আদালত মামলাটি তদন্ত করার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। পিবিআই নাসিরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। কিন্তু তদন্তে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা না মিললে কুদ্দুসকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অসংলগ্ন তথ্য দেন তিনি। এতে সন্দেহ হলে মুঠোফোনের তথ্য যাচাই করে জানা যায়, কুদ্দুসই তার মেয়েকে হত্যা করেছেন।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.