Sylhet Today 24 PRINT

হারের পর ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন হিরো আলম

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম।

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনী এলাকা কাহালু সদরের স্টেশন বাজারে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে যান উপনির্বাচনে অংশ নেওয়া সামাজিক মাধ্যমের আলোচিত-সমালোচিত এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর। গত বুধবারের এ উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৫ ভোটে হেরে যান হিরো আলম।

হিরো আলম দুপুর ১২টার দিকে কাহালু সদরের স্টেশন বাজারে গেলে সেখানে স্থানীয় লোকজন জড়ো হন। এ সময় তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সবাই দেখেছেন, গতকাল নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা আমাকে নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, “প্রতিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর প্রার্থীরা এসব কথা বলেনই যে ভোট সুষ্ঠু হয়নি, কারচুপি হয়েছে। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।” নন্দীগ্রাম উপজেলায় কেন্দ্রে কেন্দ্রে নাকি আমার কোনো এজেন্ট ছিল না। ফল পাল্টানোর যে অভিযোগ করা হয়েছে, তার নাকি ভিত্তি নেই, সাক্ষ্যপ্রমাণও নেই।’

এরআগে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে ফল পাল্টানোর যে অভিযোগ ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছিলেন নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা।

নির্বাচন কমিশনারের এ মন্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম বলেন, ‘ক্ষমতায় আছেন তো অনেক বড় বড় কথা বলেন। আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম, ফল বাতিল করে গণভোট দেন। একতারা প্রতীকে হিরো আলম, মশাল প্রতীকে তানসেন (এ কে এম রেজাউল করিম) প্রার্থী থাকবেন। প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি দেন। আপনারা সব নির্বাচন কমিশনার মাঠে আসেন। মশাল নাকি একতারা—কে বেশি জনপ্রিয় প্রমাণ করতে গণভোট দেন। যদি একতারা হেরে যায়, আমি নাকে খত দেব, জীবনে কখনো নির্বাচনে যাব না।’

নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানার উদ্দেশে হিরো আলম বলেন, ‘আপনি মাঠে এসে অভিযোগের তদন্ত না করে ঢাকা থেকেই হুট করে মন্তব্য করলেন। আপনি নন্দীগ্রামে এসে দেখেছিলেন, আমার এজেন্ট ছিল না? এজেন্ট ছিল, কিন্তু ফলাফলের কাগজ দেওয়া হয়নি। ভোট নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ ছিল না, এখনো নেই। ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। ভোটে হেরে যাইনি। ফল চুরি করেছেন। এ কারণে ফলাফলে হেরেছি।’

হিরো আলম আরও বলেন, ‘আমার এমপি হওয়া নিয়ে, সংসদে যাওয়া নিয়ে অনেকের ঘুম হারাম, মাথা কামড়ায়। একজন এমপির কাজ কী? সংসদে কথা বলা। আমি কি কথা বলতে পারি না? আমার চেহারা নিয়ে এত আপত্তি কেন? এত নাটক কেন? সেখানে কেন ভালো চেহারার লোক লাগবে? আমাকে সংসদে নিয়ে গিয়ে কি অভিনয় করাবেন? আমি আপনাদের মতো ভালো কথা বলতে পারি না। বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলি, এ জন্য আপনাদের বাঁধে। আপনাদের মা-বাবা আছে জন্য পড়ালেখা করতে পেরেছেন, শিক্ষিত হয়েছেন। স্পিকার হয়েছেন, মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন, কমিশনার, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন। আমাদের মতো নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মতো অবস্থা হলে এটা হতে পারতেন না। শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কথা বলেন। অনেক এমপি তো স্বশিক্ষিত। সংসদে ঠিকমতো “স্পিকার” উচ্চারণ করতে পারেন না। আপনাদের এত যোগ্যতা থাকলে দেশের এই অবস্থা কেন? কেন জনগণ আপনাদের ধিক্কার দিচ্ছে।’

বুধবার অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে হিরো আলম বগুড়া ৪ ও ৬ আসনে অংশ নেন। বগুড়া-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারলেও বগুড়া-৬ আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয় তার।

ভোটারদের অনেকেই কান্নাকাটি করছেন, মন খারাপ করেছেন দাবি করে হিরো আলম বলেন, ‘এ জন্যই আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমরা হারিনি। ভোটে জয়ী হয়েছি। আমাদের ফল ছিনতাই হয়েছে। ছিনতাই হওয়া ফল উদ্ধারে আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। আপনারা ভোট দিয়েছেন, সেই ভোটের ফল বুঝিয়ে দিতে হবে। না হলে পুনর্নির্বাচন দিতে হবে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.