Sylhet Today 24 PRINT

জামায়াতের হরতাল বিভ্রাট

নিউজ ডেস্ক |  ০৬ জানুয়ারী, ২০১৬

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে একের পর এক শীর্ষ নেতার সর্বোচ্চ সাজার আদেশ আসায় দৃশ্যত দিশেহারা জামায়াতে ইসলামী তাদের আমির মতিউর রহমান নিজামীর প্রাণদণ্ডের রায়েও একই কর্মসূচি দিতে গিয়ে বিভ্রাট ঘটিয়েছে।

আপিল বিভাগ নিজামীর রায় ঘোষণার পর ৬ জানুয়ারির তারিখে বিবৃতি দিয়ে তারা হরতাল ডেকেছে এক মাস আগের তারিখে।

অবশ্য পরে নিজেদের ওয়েবসাইটে সেই তারিখ সংশোধন করে নিয়ে ৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার হরতালের কথা বলেছে একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলটি।

পাবনায় হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার দায়ে দেড় বছর আগে নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বুধবার সেই সাজাই বহাল রেখেছে।

রায়ের ঘণ্টাখানেক পর হরতালের বার্তা দিয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠানো হয়। জামায়াতের ওয়েবসাইটেও একই বার্তা পাওয়া যায়।

এতে বলা হয়- “সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির, সাবেক মন্ত্রী, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ ও ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং আগামীকাল ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর জনাব মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আজ ০৬ জানুয়ারি নিম্নোক্ত যুক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন।”

বেশ কিছু সময় পর ওই বার্তায় হরতালের তারিখ সংশোধন করে ‘আগামীকাল ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার’ এর জায়গায় ‘আগামীকাল ৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার’ লিখে আবারও বিবৃতি পাঠায় জামায়াত।

জামায়াতে ইসলামীর আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান।

স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর দমন-পীড়ন চালাতে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটিতেও তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে এ মামলার বিচারে উঠে আসে।

এই রায় যখন হয়, ৭২ বছর বয়সী নিজামী তখন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। বিগত চার দলীয় জোট সরকারের এই মন্ত্রী চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলারও মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি।

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিজামীর আগে যে পাঁচ মামলার রায় সর্বোচ্চ আদালত থেকে এসেছে, তার মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এবং সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃতুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

এছাড়া জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আপিল শুনানি চলার মধ্যেই মারা গেছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াত আমির গোলাম আযম, যিনি ছিলেন একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের হোতা।

প্রতিটি রায়ের পরই জামায়াতে ইসলামী হরতাল ডেকেছে। এই কর্মসূচিতে গত দুই বছরে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক নাশকতাও ঘটিয়েছে দলটির নেতা-কর্মীরা।

খবর: বিডিনিউজ

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.