Sylhet Today 24 PRINT

শান্তি ও নিরাপত্তায় বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে রোল মডেল: প্রধানমন্ত্রী

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৯ মে, ২০২৩

বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে বাংলাদেশ সর্বজন স্বীকৃত বিশ্বের বুকে রোল মডেল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২৯ মে) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ গত ৩৫ বছর ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে অন্যান্য দেশ শান্তিরক্ষী পাঠাতে চায়নি, সেখানেও আমরা শান্তিরক্ষী প্রেরণ করেছি। শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ একটি নির্ভরযোগ্য নাম। আমরা সর্বজন স্বীকৃত বিশ্বের বুকে রোল মডেল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা যাতে বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং এবং বিপজ্জনক অঞ্চলসমূহে সৃষ্ট জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে সেজন্য আমরা তাদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ দিয়ে সর্বদা প্রস্তুত রেখেছি। মিশন এলাকার পরিবেশ, আবহাওয়া ও ভূমির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নত প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জামাদিসহ পোশাক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। আমরা বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টগুলো অত্যাধুনিক মাইন-রেজিস্ট্যান্ট অ্যাম্বুশ প্রটেক্টেড যানবাহন এবং শান্তিরক্ষীদের যোগাযোগের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করেছি। আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন ও প্রশিক্ষণ একটি চলমান প্রক্রিয়া যা আমরা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবো।

তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে আমি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গকারী সব শান্তিরক্ষীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সব আহত শান্তিরক্ষীসহ বর্তমানে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত শান্তিরক্ষীর প্রতি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল বাঙালি জাতিরই নন, তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের মুক্তির বার্তাবাহক ও শান্তির দূত। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলায় প্রদত্ত তার প্রথম ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি একান্ত দরকার। এই শান্তির মধ্যে সারা বিশ্বের নর-নারীর গভীর আশা-আকাঙ্ক্ষা মূর্ত হয়ে রয়েছে। ন্যায় নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত না হলে শান্তি কখনও স্থায়ী হতে পারে না’।

তিনি বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা রোধ, সাম্য-মৈত্রী, গণতন্ত্র রক্ষা এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ব শান্তি পরিষদ বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে ‘জুলিও-কুরি শান্তি পদক’-এ ভূষিত করে। তিনি সেই পদক উৎসর্গ করেছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদদের এবং বীর সেনানীদের।

সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে পৌঁছে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বৈরিতা নয়’ -এটাই হবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির মূলভিত্তি।

শেখ হাসিনা বলেন, সংঘাত নয় শান্তি চাই। যে কোনো সংঘাত আলোচনায় সমাধান চাই। অস্ত্র প্রতিযোগিতা আমরা চাই না। সংঘাতের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও শিশু। বাংলাদেশ সবসময় শান্তিতে বিশ্বাস করে। শান্তির জন্য যা যা করার দরকার, বাংলাদেশ তাই করবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ব শান্তি রক্ষাই শুধু নয়, নিজের দেশেও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করছি আমরা। ২০০৮ সালের পর থেকে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে এবং স্থিতিশীল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আছে বলেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশই পারে একটি দেশকে উন্নয়নশীল করতে। আমরা চাই, ২০৪১ সালের মধ্যে এই বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। সেজন্য এই স্থিতিশীল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.