Sylhet Today 24 PRINT

যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে বিনিয়োগে ৩ বাধা বাংলাদেশে

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ৩০ মার্চ, ২০২৪

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তিন ধরনের বাধার কথা উল্লেখ করে একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেগুলো হলো— ঘুষ, দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর (ইউএসটিআর) প্রকাশিত ২০২৪ সালের বৈদেশিক বাণিজ্যে বাধাবিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বাধাগুলো চিহ্নিত করে।

অশুল্ক বাধা হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এখনও ‘কাস্টমস ভ্যালুয়েশন লেজিসলেশন’ সম্পর্কে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে (ডব্লিউটিও) অবহিত করেনি। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ও বাছাইপ্রক্রিয়ার কথা বলে থাকে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয় ইলেকট্রনিক প্রকিউরমেন্ট পোর্টাল চালু করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদাররা বিভিন্ন দরপত্রে প্রত্যাশিত পণ্যের পুরনো কারিগরি মান নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। এছাড়া কারিগরি মান পছন্দের দরদাতাদের কাজ দেওয়ার উদ্দেশ্যে নির্ধারণ করা হয় কি না, তা নিয়ে মার্কিন অংশীদারদের সন্দেহ আছে।

মার্কিন কয়েকটি কোম্পানি দাবি করেছে, বাংলাদেশে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্বীরা ক্রয়প্রক্রিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির দরপত্র ঠেকাতে বাংলাদেশি অংশীদারদের ব্যবহার করেছে। মার্কিন কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে সরকার নিলামে ক্রয়প্রক্রিয়ায় দরপত্র বাছাইয়ে কারচুপির অভিযোগ করেছে। বাংলাদেশ সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত ডব্লিউ চুক্তির অংশীদার বা সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত ডব্লিউটিও কমিটির পর্যবেক্ষক নয়।

মেধাসম্পদ সুরক্ষায় বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উদ্যোগ নিলেও এর কার্যকর প্রয়োগ নিয়ে নিশ্চিত নয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নকল পণ্য সহজলভ্য। ভোগ্য পণ্য, পোশাক, ওষুধ ও সফটওয়্যার খাতের পণ্যগুলো বাংলাদেশে নকল হচ্ছে বলে মার্কিন অংশীদাররা অভিযোগ করেছেন।

বাংলাদেশে ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধার কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বিভিন্ন আইন নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিনিয়োগ থেকে লভ্যাংশ বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার কথা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা তুলে ধরেছে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে রেমিট্যান্স বিদেশে পাঠাতে আইনি জটিলতার কথাও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

শ্রম ইস্যুতে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করে। এটি এখনো বহাল রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে দুর্নীতি একটি বিস্তৃত ও দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা এবং দুর্নীতি দমন আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হয় না। সুবিধা প্রদান এবং উপহারের অবৈধতা সত্ত্বেও বাণিজ্যিক লেনদেনে ঘুষ এবং চাঁদাবাজি ব্যবসার সাধারণ বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ চাওয়ার কারণে মার্কিন কোম্পানিগুলো লাইসেন্স ও বিডের অনুমোদন পেতে দীর্ঘ বিলম্বের অভিযোগ করেছে।

প্রতিবেদনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে উল্লেখ করা বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রণীত সরকারি চাকরি আইন বিল হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে— যেকোনো সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করার আগে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দুদকের ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে। এরপরও দুদক ক্রমবর্ধমানভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করছে। তবে সেখানে বহু মামলাই অমীমাংসিত থেকে যাচ্ছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.