Sylhet Today 24 PRINT

মুক্তিযোদ্ধা কবি রফিক আজাদকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে চিরবিদায়

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৪ মার্চ, ২০১৬

একাত্তরের রণাঙ্গনের যোদ্ধা, ষাটের দশকের কবি, প্রেম ও দ্রোহের কবি রফিক আজাদকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানালো বাংলাদেশ।

একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারজয়ী এই কবির মরদেহ সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হলে পুলিশের একটি চৌকস দল এই মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেয়।

সরকারের মন্ত্রী, লেখক-শিল্পী-বুদ্ধিজীবী আর নানা ভক্ত পাঠকের শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় কবির কফিন।  

সোমবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মরদেহ গ্রহণ করেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ড. মুহাম্মদ সামাদ।

দুই দফা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সোমবারই মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন দ্রোহ ও ভালোবাসার এ কবি।

শহীদ মিনারে প্রথমে পরিবারের পক্ষ থেকে রফিক আজাদের মরদেহে শ্রদ্ধা জানান তার স্ত্রী দিলারা হাফিজ, ছেলে রাহুল আজাদ, অভিন্ন আজাদ ও অব্যয় আজাদ এবং কবির ভাই নুরুল ইসলাম খান।

মুক্তিযুদ্ধে কবি রফিক আজাদের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয় এবং তার কফিনে জাতীয় পতাকা জড়িয়ে দেওয়া হয়।

সকাল ১০টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে এ নাগরিক শ্রদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রফিক আজাদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার এক সময়ের কর্মস্থল বাংলা একাডেমিতে।

রফিক আজাদের শেষযাত্রার আয়োজনের বিষয়ে জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ জানান, বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষে জোহরের নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে রফিক আজাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে মরদেহ নেওয়া হবে ধানমণ্ডিতে কবির বাসায়। এরপর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

এদিকে মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বাংলা একাডেমি ও জাতীয় কবিতা পরিষদের যৌথ আয়োজনে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে কবি রফিক আজাদ স্মরণে নাগরিক শোকসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।

উল্লেখ্য, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় এবং একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি রফিক আজাদ শনিবার (১২ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মৃত্যুকালে  কবির বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর রফিক আজাদ প্রায় দুই মাস ধরে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন।

গত জানুয়ারিতে রফিক আজাদের ‘ব্রেইন স্ট্রোক’ হলে তাকে প্রথমে বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে নেওয়া হয় আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর তাকে আনা হয়েছিল বিএসএমএমই্‌উতে।

জনপ্রিয় কবি রফিক আজাদের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে আছে ‘অসম্ভবের পায়ে (১৯৭৩); সীমাবদ্ধ জলে, সীমিত সবুজে (১৯৭৪); নির্বাচিত কবিতা (১৯৭৫); চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া (১৯৭৭)।

ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে তাকে একুশে পদক দেওয়া হয়।

১৯৪১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার গুণী গ্রামের এক অভিজাত পরিবারে জন্ম রফিক আজাদের।

তিনি ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর করে কর্মজীবন শুরু করেন শিক্ষকতায়।

বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত পত্রিকা ‘উত্তরাধিকার’র নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে ১৯৭২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.