Sylhet Today 24 PRINT

জোহাকে ফেরত চান স্ত্রী

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৭ মার্চ, ২০১৬

বুধবার রাত ১২টায়ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন প্রযুক্তিবিদ তানভীর হাসান জোহা। কাজ শেষ করে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় ফিরবেন বলে জানান। কিন্তু আর ফেরেননি। এরপর থেকেই বিভিন্ন থানা ও হাসপাতালে খোঁজ নিতে শুরু করেন স্ত্রী কামরুন নাহার ও পরিবারের সদস্যরা।

পরে বন্ধু ইয়ামিরের মাধ্যমে পরিবার জানতে পারে একদল লোক জোহাকে চোখ বেঁধে সিএনজি অটোরিকশা থেকে নামিয়ে তুলে নিয়ে গেছে।
 
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে ডা. কামরুন নাহারের সঙ্গে কথা বলে এরকমই জানা গেছে।

তিনি বলেন, ‘সে দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের আইটি বিষয় নিয়ে কাজ করছিল। কখনো কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করে নিখোঁজের বিষয়টা নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে আছি।’

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যদি জোহাকে কোনো গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করা হোক। আমরা জোহাকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাই- বলেন কামরুন নাহার।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘জোহার সন্ধান না পেয়ে প্রথমে আমরা কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে  যায়। কিন্তু সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ঘটনা কচুক্ষেতের, তাই এ বিষয়ে যা করার কাফরুল থানা করবে। পরে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কাফরুল থানা এবং ক্যান্টনমেন্ট থানায় গেলে তারাও জিডি নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।’

তানভীর হাসান জোহা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের ‘সাইবার নিরাপত্তা’ বিভাগের ডিরেক্টর (অপারেশন)। অবশ্য প্রকল্পটি বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০১ মিলিয়ন বা প্রায় ৮০০ কোটি টাকা চুরি যাওয়ার ঘটনায় র‌্যাবের ছাড়া তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলেন। আর এ বিষয়ে গণমাধ্যমে এমন কিছু তথ্য দিয়েছেন যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দাবিকৃত তথ্যের সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ। গণমাধ্যমকে তথ্য দেয়ার পর থেকেই তাকে নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছিল বলে জানা যাচ্ছে।

জোহার স্ত্রী কামরুন নাহার বলেন, ‘তিনি বুধবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাত ১টার দিকে বাসায় ফেরার পথে রাজধানীর কচুক্ষেত এলাকায় তাকে বহনকারী সিএনজি অটোরিকশাটি থামিয়ে কয়েক জন লোক জোহার চোখ বেঁধে কোথায় যেন নিয়ে যান।’

আপনি কীভাবে জানলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জোহার সাথে অফিস শেষ করে ফিরছিলেন বন্ধু ইয়ামির। তিনিই ঘটনাটি আমাদের জানান।’

ইয়ামিরের বরাত দিয়ে কামরুন নাহার বলেন, ‘অফিস থেকে বের হওয়ার পর সিএনজিতে ওঠেন জোহা। কচুক্ষেত এলাকায় দুই-তিনটি গাড়ি তার সিএনজিকে ঘিরে ধরে। এরপরই জোহাকে চোখ বেঁধে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।’

জোহার পরিবারের জিডি নেয়া হয়নি- এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে কলাবাগান থানার ওসি মো. ইকবাল হোসেনের যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘জোহার পরিবার থেকে কেউ জিডি করতে এসেছিলেন বলে আমার জানা নেই।’

এদিকে, জোহা নিখোঁজের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,  ‘তদন্তের স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রযুক্তিবিদ তানভীর হাসান জোহাকে গ্রেপ্তার করতে পারে, তবে বিষয়টি আমি নিশ্চিত নই।’

তিনি আরো বলেন, ‘রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনায় সরকারের প্রযুক্তির সঙ্গে যারা কাজ করেন তদন্তের স্বার্থে এমন অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।  কিন্তু জোহাকে এ ব্যাপারে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না তা আমি নিশ্চিত নই।’

জোহা নিখোঁজ হওয়ার পর জিডি করতে গেলে থানা থেকে তা নেয়া হয়নি, পরিবারের এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবগত নই।’

এদিকে টাকা চুরির তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি’র কাছে জোহার ব্যাপারে চানতে চাইলে তারাও বলেছেন, এ ব্যাপারে তাদের কিছু জানা নেই।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.