Sylhet Today 24 PRINT

সততায় মুগ্ধ হয়ে বাবুলের সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন ওসি মোশাররফ

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৬ জুন, ২০১৬

আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগের কথা। একই জেলায় পুলিশে চাকরি করতেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল ওয়াদুদ ও পরিদর্শক (ওসি) মো. মোশাররফ হোসেন। সেই সুবাদেই সহকর্মী ওয়াদুদের ছেলে বাবুল আক্তারের সঙ্গে পরিচয়। তার আচার-আচরণে মুগ্ধ হয়েছিলেন মোশাররফ। তিনি সিদ্ধান্ত নেন বড় মেয়ে মাহমুদা আক্তার মিতুর সঙ্গে তার বিয়ে দেবেন। ঊর্ধ্বতন সহকর্মীর মনোভাব শুনে খুশি হন ওয়াদুদও। এরপরই বিয়ে। বিয়ের পর বিসিএস দিয়ে পুলিশে যোগদান করেন বাবুল আক্তার।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সদ্য পদোন্নতি পাওয়া চট্টগ্রামের এসপি বাবুল আক্তারের সঙ্গে ২০০২ সালে তৎকালীন ঝালকাঠির পরিদর্শক মোশাররফ হোসেনের মেয়ে মাহমুদা আক্তার মিতুর বিয়ে হয়। বর্তমানে ওসি মোশাররফ অবসরে।

পটুয়াখালীর বাউফলের কাশিপাড়ায় গ্রামের বাড়ি হলেও অবসরকালেই ঢাকার খিলগাঁও মেরাদিয়া ভূঁইয়াপাড়ায় (বাসা নং ২২০/এ) বাড়ি করেন মোশাররফ। সেখানেই মূলত মেয়ে মিতু ও জামাই বাবুলের যাতায়াত ছিল বেশি।

ছেলে তাপু ও মেয়ে মাহিকে নিয়ে সুখেই চলছিল মিতু-বাবুলের সংসার। কিন্তু রোববার সকালে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ও গুলিতে চট্টগ্রামে নিহত হন মিতু।

প্রাথমিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা, পরিকল্পিত এবং টার্গেট করেই এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন মিতুকে (৩২) হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আগে থেকে তার (মাহমুদা খাতুন মিতু) গতিবিধি লক্ষ্য এবং নজরধারী করছিল সন্ত্রাসীরা। হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক আলামত দেখে এ ধারণা করছে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলছেন, পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে বাবুল আক্তারের সততা ও সাহসিকতায় ভীত ছিল দুর্বৃত্তরা। স্ত্রীকে খুন করে বাবুলকে দুর্বল করার কৌশল নিয়েছে তারা।

ঘটনার পর রোববার দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, আত্মীয়-স্বজনদের ভিড়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেয়ের মৃত্যুর সংবাদে মোশাররফ হোসেন তার স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে নিয়ে চট্টগ্রামে চলে গেছেন। বিকেল মেয়ের মরদেহ নিয়ে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে তাদের।

মিতুর বড় খালা মমতাজ বলেন, “মোশাররফ ঝালকাঠিতে থাকতে এসআই ওয়াদুদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়। ওয়াদুদের অনেক গল্প আমরা শুনেছিলাম। সেই থেকে বাড়িতেও যাতায়াত ছিল। ওয়াদুদের ছেলে বাবুলকে দেখে মোশাররফের খুব পছন্দ হয়। এরপরই বড় মেয়ে মিতুর সঙ্গে বিয়ের কথা ভাবেন। সহকর্মীর সঙ্গে কথাটা শেয়ার করার পর তিনিও মত দেয়ায় পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় বাবুল ও মিতুর।

তিনি আরো বলেন, “অদৃষ্টে কি ছিল আল্লাহ ভাল জানেন, ওমন মেয়েকে মানুষও মারতে পারে ভাবা যায় না। কোনো দিন উচু স্বরে কথা বলতো না মেয়েটা। কখনো শুনিনি জামাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া বিবাদের কথা। পর্দায় থেকে নামাজ পড়তো। সেই মেয়েকে মানুষ খুন করে কেমনে?”

বাড়ির কেয়ারকেটার ফোরকান বলেন, ‘মিতু আপু গত মাসেও আইছিল। গত ৪দিন হলো বাবুল ভাই ঢাকায় আসছেন। তিনিও আসবেন আসবেন করে আসতে পারেননি। এরই মধ্যে মিতু আপু খুনের দুঃসংবাদ শুনতে পাই। এখন বাসায় কেউ নেই। সবাই চট্টগ্রাম গেছে। আজই মরদেহ আনা হবে ঢাকায়। এখানে জানাযা নামাজ শেষে গ্রামের বাড়িতে দাফন হবে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.