Sylhet Today 24 PRINT

আগেই সতর্ক করেছিলো ভারত, আরো হামলার আশঙ্কা

গুলশান হামলা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৫ জুলাই, ২০১৬

জঙ্গি হামলার বিষয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সতর্কবার্তা পেয়েছিল ঢাকা। গত মাসেই কয়েকটি মূল্যায়ন প্রতিবেদনের মাধ্যমে সম্ভাব্য জঙ্গি হামলার বিষয়ে এ সতর্কবার্তা দেয়া হয়। বাংলাদেশী একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, মূল্যায়ন প্রতিবেদনের মাধ্যমে জঙ্গি হামলার সম্ভাব্যতার কথা জানানো হলেও এতে এমন কিছু ছিল না, যা গুলশানের রেস্তোরাঁয় শুক্রবারের হামলা ঠেকানোয় সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারত। তবে এতে ভারতের কিছু গোপন ক্যাম্পে বাংলাদেশী জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ নেয়ার বিষয়ে জানানো হয়। এছাড়া ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ক্রমবর্ধমান প্রোপাগান্ডার বিষয়েও ঢাকাকে সতর্ক করা হয়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে আলোচনায় ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারত থেকে পাওয়া গোয়েন্দা সতর্কতা বার্তাগুলোর অন্যতম ছিল, জঙ্গিরা এ মুহূর্তে বড় কোনো অপারেশন চালানোর পরিকল্পনা করছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের হাতে বেশকিছু সূত্র পৌঁছালেও, এগুলোর যোগসূত্রে হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছ কোনো ধারণা তৈরি সম্ভব ছিল না।’

বাংলাদেশী আরেক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশী তদন্তকারীদের মনোযোগ এখন হামলায় অংশ নেয়া জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ও রসদ সংগ্রহের বিষয়টিতে কেন্দ্রীভূত। আর হামলার দিন হিসেবে জঙ্গিদের রমজানের শেষ শুক্রবারের (জুমাতুল বিদা) পবিত্র দিনটি বেছে নেয়ার বিষয়টিও তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে।

এপ্রিলেই আইএসের মুখপত্র দাবিকে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা চালানোর হুমকি দেয়া হয়েছিল। অন্যদিকে বাংলাদেশের সন্ত্রাসী সংগঠন জামা’আতুল মুজাহীদিন (জেএমবি) ২০১৪ সালের পর থেকেই একের পর এক বিদেশী সাহায্যকর্মী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও রাজনৈতিক প্রগতিশীলকে হত্যা করে চলেছে। আর এসব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে ছোট ছোট আগ্নেয়াস্ত্র আর ছোরা ব্যবহারের মাধ্যমে। এর বাইরে বেশকিছু বোমা হামলাও চালিয়েছে তারা। আর এসব হামলার জন্য ব্যবহূত বোমার সরবরাহ এসেছে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের কিছু গোপন কারখানা থেকে।

২০১৪ সালে বর্ধমানে বোমা কারখানায় বিস্ফোরণের পর ভারতের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (এনআইএ) যেসব গোয়েন্দা এ নিয়ে তদন্ত করেছেন, তারাও জানিয়েছেন, কারখানাটিতে বেশ কয়েকজনকে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছিল।

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে আসামের দাউখানগরে একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প আবিষ্কার করে ভারতীয় পুলিশ। এখানে জেএমবি ক্যাডারদের অস্ত্র ব্যবহারসহ প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছিল। চলতি বছরে আসামেরই আমগুড়ি গ্রামে আরেকটি জেএমবি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প চালানোর দায়ে চিরং জেলা থেকে আরো সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্থানীয় ধর্মীয় নেতা জয়নুল আবেদিন ওই সময়ে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে যোগ দেয়ার জন্য আশপাশের গ্রামগুলো থেকে লোক সংগ্রহ করছিলেন।

আসাম পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বেশকিছু এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ জোরদার নয়। ফলে সেখানে অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষণ দেয়া হলেও তা খুঁজে বের করতে সময় লাগে অনেক। এছাড়া এ এলাকাগুলোয় নানা অপরাধে লিপ্ত বিদ্রোহীদের সংখ্যাও কম না। জঙ্গিরা সম্ভবত অ্যাসল্ট রাইফেলসহ অন্যান্য অস্ত্র এসব বিদ্রোহীর কাছ থেকেই সংগ্রহ করে।

আরো হামলার আশঙ্কা

এদিকে শুক্রবারের হামলার পর সামনের দিনগুলোয় এ ধরনের আরো ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বাংলাদেশকে সতর্ক করে দিয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। ভারতীয় সংবাদ চ্যানেল ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, বাংলাদেশকে দেয়া সতর্কতা বার্তায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশে জঙ্গিরা এখনো সক্রিয়। বিশেষ করে সীমান্তে এ সক্রিয়তা অনেক বেশি। এছাড়া বাংলাদেশে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতও সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে তুলেছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.