Sylhet Today 24 PRINT

তুরস্ক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফেরে জঙ্গি নিব্রাস, হত্যার ছক কষে বনানীর ফ্ল্যাটে!

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১১ জুলাই, ২০১৬

৪ মাস আগে নিব্রাস ইসলামসহ ৭ জঙ্গি তুরস্ক থেকে দেশে আসে। বিমানবন্দরে সন্দেহভাজন হওয়া ৩জনও আটকও হয়েছিল পরে জামিনে ছাড়া পায়। পরে  গুলশান হামলার দুই মাস আগে বনানীতে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বাড়ির একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয় তারা। সেখান থেকেই করা হয় হামলার ছক। ওই প্রভাবশালীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। কেন তিনি ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছিলেন জবাবে  বলেছেন, কেয়ারটেকারই ভাড়া দিয়েছিল। ওই কেয়ারটেকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা সূত্রে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যই জানা গেছে।

তবে তুরস্ক থেকে আসা ৭ জঙ্গির মধ্যে ৩ জন গুলশান হামলায় অংশ নেয়ার তথ্য পাওয়া গেলেও বাকি ৪ জনের কোন হদিস মেলেনি। ওই ৪ জঙ্গি দেশের কোথাও পালিয়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে মীর সাবেহ মোবাশ্বের এসেছিল মালয়েশিয়া থেকে। নিব্রাসের সাথে রোহান ইমতিয়াজও তুরস্কতে টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল বলে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন। গত মার্চের শেষ দিকে রোহান আগারগাঁওয়ে কম্পিউটার সিটিতে গিয়েছিল বলে তার এক পরিচিত দেখতে পেয়ে বাবা ইমতিয়াজকে খবর দেন তবে মুহুর্তেই সে লাপাত্তা হয়ে যায়।

এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা প্রথমে টার্গেট করেছিল একটি পাঁচ তারকা হোটেল। কিন্তু হোটেলের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে ভেতরে ঢোকার পর কতজন বিদেশি পাওয়া যাবে সেটা নিয়ে নিশ্চিত হতে পরেনি তারা। তাই অপেক্ষাকৃত বেশি বিদেশি পাওয়া যায় এমন রেস্টুরেন্ট পছন্দ করে। এমন আরো দু’টি তিনটি রেস্টুরেন্ট রেকি করলেও শেষ অবধি বেছে নেয় হলি আর্টিজানকে। কারণ সন্ধ্যার পর এই রেস্টুরেন্টে বিপুল সংখ্যক বিদেশি অবস্থান করেন। সেটা নিশ্চিত হয়েই তারা হামলা চালায়।

 গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, তুরস্ক ফেরত যুবকদের কয়েকজন এখনও পলাতক। এছাড়া মালয়েশিয়া থেকে কয়েকজন ছাত্র দেশে ফিরে এসেছে। তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের যোগাযোগ রয়েছে। এই পলাতক জঙ্গিদের খোঁজার চেষ্টা চলছে। আবার বিমানবন্দরে ধরা পড়ার পর কিভাবে জঙ্গিরা জামিনে ছাড়া পেল, আদালতে তাদের নেটওয়ার্ক খুঁজছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

এসব তথ্য জানার পরই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল বিচারকদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করে বলেছেন, জঙ্গিদের জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচারকদের আরো কঠোর হতে হবে। জঙ্গিদের জামিনের ব্যাপারে বিচারকদের সতর্ক হওয়ার আহবান জানান তিনি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ বলেন, ‘পরপর দু’টি হামলায় জঙ্গিদের যে উদ্দেশ্য ছিল সেটি পরাভূত হয়েছে। একটি হলো আতঙ্ক ছড়ানো। কিন্তু আমি দেখলাম বাংলাদেশের বেশিরভাগ                 মানুষ এই হামলার পর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং তারা খুব সোচ্চার। এদিক থেকে তারা যে ভয় দেখিয়ে জয় করতে চেয়েছিল সেটা সম্ভব হলো না। আরেকটি হলো বিদেশিদের হত্যা করে বিদেশিদের অনুকম্পা পেতে চেয়েছিল কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠী। সেখানে বিদেশিদের যে অবস্থান বাংলাদেশের জঙ্গি বিরোধী তত্পরতায় তারা পাশে থাকবে। ফলে তাদের এই উদ্দেশ্যটাও সফল হয়নি। সেক্ষেত্রে এই উদ্দেশ্য সফল না হওয়ার জন্য আমরা পরবর্তী সময়ে কিশোরগঞ্জে হামলা হতে দেখলাম। আমার মনে হয়, সেখানেও উদ্দেশ্য খুব একটা সফল হয়নি। সেই কারণে তাদের বেপরোয়া অবস্থান থেকে আরো হয়ত হামলা করার চেষ্টা তারা করবে।’

 

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.