Sylhet Today 24 PRINT

র‍্যাবের ‘নিখোঁজ’ তালিকার অনেকেই প্রকৃত নিখোঁজ নয়

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২১ জুলাই, ২০১৬

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র‍্যাব) পক্ষ থেকে নিখোঁজ হিসেবে আড়াই শতাধিক লোকের যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই প্রকৃতপক্ষে নিখোঁজ নন। এদের অনেকেরই খোঁজ মিলেছে।

পারিবারিক কলহ, প্রেমঘটিত নানা কারণেও অনেকে বাড়ি ছেড়েছেন। কেউ আবার মামলার আসামি হিসেবে কারাগারে আটক আছেন। এর বাইরেও নতুন করে আরো অনেকের নিখোঁজ হওয়ার খবর মিলছে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে।

পুলিশ ও র‌্যাবের গোয়েন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে সারাদেশের ২৬১ জন নিখোঁজের তালিকা প্রকাশ করা হয় র‌্যাবের ফেসবুক পাতায়।

তবে ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া জানিয়েছেন, নিখোঁজ তালিকার সবাই জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত নয়। নিখোঁজ তালিকার কেউ কেউ এরমধ্যে ফিরে এসেছেন।

তালিকার ১ নম্বরে থাকা সাইদুল ইসলাম রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারি হিসেবে কাজ করছেন। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রহমতউল্লাহ শিক্ষক হত্যায় জড়িত অভিযোগে কারাগারে আটক।

এ তালিকায় থাকা জিলানী ওরফে আবু জান্দাল সিরিয়ার যুদ্ধে নিহত বলে দাবি করেছে আইএস।

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরে নিখোঁজ হয়েছিলেন মগবাজারের ব্যবসায়ী ছানাউল্লাহ, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন।

আবার অনেকের নিখোঁজ হওয়ার খবরটিও সঠিক নয় – যার মধ্যে রয়েছে মগবাজারের জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জের সৈয়দ জাহাঙ্গীর।

দুমাসেরও বেশি সময় নিখোঁজ থাকার পর ফিরে এসেছেন এমন তালিকায় আছেন ঢাকা সেনানিবাসের দুই বাসিন্দা আফিফ মানসিফ চৌধুরী ও শামীম দেওয়ান।

দু-একদিন কিংবা এক সপ্তাহ নিখোঁজ থাকার পর ফিরে আসার মধ্যে রয়েছে রাজধানীর বাসিন্দা মাহমুদুর রহমান কাজল, আদনান, মেহেদী হাসান, এস এম তাহসান ও মুদি দোকানী ছানাউল্লাহ।

এ ছাড়া, দাম্পত্য কলহ, প্রেমঘটিত কারণে নিখোঁজ ছিলেন কুষ্টিয়ার মারজুক হায়দার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজমিস্ত্রি বাদশা আলী।

এ তালিকার বাইরে দিনাজপুর, নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়ও নিখোঁজের সংখ্যা বাড়ছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ তালিকা হালনাগাদের নির্দেশ দিয়েছে।

উল্লেখ্য, র‌্যাবের অনলাইন মিডিয়া সেলের ফেসবুক পাতায় গত মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) রাত সোয়া ১১টার দিকে নিখোঁজ ২৬২ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়।  র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, এদের বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে র‌্যাবের নিকটতম ক্যাম্পে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। অথবা ০১৭৭৭৭২০০৫০ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া ফেসবুকে www.facebook.com/rabonlinemediacell/ এবং [email protected] অ্যাড্রেসে মেইল করে তথ্য জানানোর অনুরোধ করা হয়।

গত ১ জুলাই গুলশানে ক্যাফেতে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জিম্মিকে হত্যার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত পাঁচ জঙ্গি বেশ কিছু দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন বলে তাদের পরিবারের ভাষ্য।
এর ছয়দিনের মাথায় ঈদের সকালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়ে নিহত আবীর রহমানও কয়েক মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন।

গুলশানে হামলাকারীদের তিনজন নিবরাস ইসলাম, মীর সামেহ মুবাশ্বের ও রোহান বিন ইমতিয়াজ এবং শোলাকিয়ায় হামলাকারী আবীর ছিলেন ঢাকার উঁচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের দুজনের নিখোঁজের তথ্য জানিয়ে কয়েক মাস আগেই থানায় জিডি করেছিল পরিবার।

এছাড়া ওই হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের নামে একটি ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশে আরও হামলার হুমকিদাতা তিন যুবকও বেশ কিছুদিন ধরে নিখোঁজ বলে পরিচিতরা জানান।

নিখোঁজ তরুণ-যুবকদের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি প্রকাশের পর ঘরছাড়াদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে নিখোঁজদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে র‍্যাব এক তালিকা প্রকাশ করে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.