Sylhet Today 24 PRINT

\'যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানানোয় খালেদার প্রকাশ্যে বিচার হওয়া দরকার\'

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ৩০ আগস্ট, ২০১৬

যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানানোয় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিচার প্রকাশ্যে জনগণের সামনে হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ (৩০ আগস্ট) মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাৎ বার্ষিকীর স্মরণসভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।   

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া তাদেরকে (যুদ্ধাপরাধী) মন্ত্রীও বানিয়েছে। খালেদা জিয়া যাদেরকে মন্ত্রী বানিয়েছিল তাদের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ফাঁসি হয়েছে। যাদের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ফাঁসি হয়েছে, তাদেরকে যে মন্ত্রী বানিয়েছিল তার কী শাস্তি হবে- সেটাও দেশবাসীকে ভাবতে হবে। এ সময় এখন তার কী শাস্তি হবে, প্রশ্ন করে তিনি বলেন, আজকে দেশে মানুষের মাঝে এই সচেতনতাই সৃষ্টি করতে হবে- যারা যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছে, সেই খালেদা জিয়ার বিচার প্রকাশ্যে জনগণের সামনে হওয়া দরকার।   

বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, নামে মুক্তিযোদ্ধা ছিল, নানা খেতাবও পেয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কাজ কী করেছে? মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করেছে। যে জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ ছিল, মার্শাল ল’ অর্ডিনেন্স দিয়ে সংবিধান সংশোধন করে এই জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে। (বঙ্গবন্ধুর) খুনিদের পুনর্বাসন করেন জিয়াউর রহমান। পঁচাত্তরের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, যারা স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী, তাদের পুনর্বাসন করেছে, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপদেষ্টা বানিয়েছে। সে (জিয়াউর রহমান) কী করে স্বাধীনতা বিশ্বাস করে? এসময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯টি ক্যু হয়েছে। একেকটি ক্যু হওয়া মানেই সামরিক বাহিনীর অফিসার ও সৈনিকদের জীবন নিয়ে খেলা। হাজার হাজার অফিসার, সৈনিকদের (জিয়াউর রহমান) হত্যা করেছে।   
 
শেখ হাসিনা বলেন, যারা যুদ্ধাপরাধী, তাদের ভোটের অধিকার ছিল না। ওই অর্ডিনেন্সের মাধ্যমে সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদের কিছু অংশ সংশোধন করে তাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। রাজনীতি ও দল করার সুযোগ দিয়েছে। তাহলে সে কী করে মুক্তিযোদ্ধা আর সে কী করে স্বাধীনতার স্বপক্ষ? তিনি বলেন, পঁচাত্তরের পরে আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। চার বছর পর্যন্ত তারা কারাগারে। জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে তাদের যে ছিনিমিনি খেলা! হ্যাঁ-না ভোট, রেফারেন্ডাম, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন- প্রতিটি নির্বাচন ছিল প্রহসনের খেলা। সেখানে নির্বাচনে ভোট দেয়ার অধিকার কারও ছিল না।   

প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় বসে যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই নির্বাচনের রেজাল্ট হয়েছে। নির্বাচনকে নিয়ে খেলা তো সেখান থেকেই শুরু। তিনি আরো বলেন, এদেশের মানুষের তখন কথা বলার অধিকার ছিল না, চলাফেরার অধিকার ছিল না। পঁচাত্তরের পর থেকে দেশে কারফিউ ছিল। প্রতি রাতে কারফিউ। সেটাকে কারফিউ গণতন্ত্র বললে আলাদা কথা। যেখানে কারফিউ দিয়ে দেশ চলে সেখানে গণতন্ত্র আসে কীভাবে?   

পঁচাত্তরের আগস্টের স্মৃতি উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে এ দেশের মানুষ সব অধিকারই হারিয়েছিল। স্বাধীনভাবে চলার অধিকার হারিয়েছিল। কথা বলার অধিকার হারিয়েছিল। তাদের বেঁচে থাকার অধিকারও হারিয়েছিল।   

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটা একটা করে রায় আসছে, আর সে রায় কার্যকর হচ্ছে। এ রায় কার্যকরের মাধ্যমে (যুদ্ধাপরাধের) বোঝা লাঘব হচ্ছে। দেশ অভিশাপমুক্ত হচ্ছে।

ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহারা খাতুন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, শাহে আলম মুরাদ ও সাদেক খান বক্তব্য রাখেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.