Sylhet Today 24 PRINT

রামপাল নিয়ে ইউনেস্কো কিছু শর্ত দিয়েছে: প্রতিমন্ত্রী

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৭ জুলাই, ২০১৭

রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তবে তিনি বলেন, যেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে সেখানেই চলতে পারবে।

প্রতিমন্ত্রী এও জানান, পরিবেশ সুরক্ষার জন্য ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। সেগুলো বাংলাদেশ মেনে নিয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে শর্তগুলো মানা হবে বলে তাদের আশ্বস্ত করেছি।

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানের বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

নসরুল হামিদ আরও বলেন, গত বুধবার পোল্যান্ডের ক্রাকাও শহরে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ৪১তম সভায় বাংলাদেশের সুন্দরবনের বিষয়টি আলোচনায় ওঠে। সেখানে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। ওই প্রতিনিধিদলটি এই কেন্দ্রের কারণে পরিবেশে যেসব প্রভাব পড়বে সেগুলোও তুলে ধরেছেন। তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন পরিবেশ সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে সুন্দরবনে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না।

নসরুল হামিদ আরও জানান, ইউনেসকো যেসব প্রশ্ন উত্থাপন করেছে তার প্রতিটি উত্তর যুক্তি দিয়ে বাংলাদেশ তুলে ধরেছে।

গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো) রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যাপারে তাদের আপত্তি তুলে নিয়েছে। একই সঙ্গে সুন্দরবনের নাম বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

২ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্রের ৪১তম বার্ষিক অধিবেশনে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

তবে ইউনেস্কো ও বিশ্ব ঐতিহ্যবিষয়ক কমিটির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে মন্তব্য করা হয়নি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে সুন্দরবনের নাম বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ গেল কি গেল না, সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।

বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির খসড়া সিদ্ধান্ত অনুসারে, সুন্দরবন ও তার আশপাশের এলাকা (দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল) নিয়ে একটি কৌশলগত পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা প্রতিবেদন করতে হবে। ওই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার আগে রামপালসহ ওই এলাকায় কোনো ধরনের শিল্পকারখানা না করার পক্ষে ইউনেস্কো থেকে বলা হয়েছিল।

খসড়া সিদ্ধান্তে বলা হয়েছিল, সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া পশুর নদ খননের আগে অবশ্যই পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা করতে হবে। সুন্দরবনের প্রতিবেশগত পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন (ইকোলজিক্যাল মনিটরিং রিপোর্ট) দিতে হবে। এই সুপারিশগুলো বাংলাদেশ কতটা বাস্তবায়ন করল, সে ব্যাপারে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশকে প্রতিবেদন দিতে হবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সুন্দরবন রক্ষায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সে জন্য সরকার সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্মান যেন বজায় থাকে, সে জন্য বাংলাদেশ সব ধরনের উদ্যোগ নেবে।

ওই দলে ছিলেন বিদ্যুৎসচিব আহমদ কায়কাউস, ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেসকোর স্থায়ী প্রতিনিধি এম শহিদুল ইসলাম, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জিয়াউর রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রইছুল আলম মণ্ডল, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান খালিদ মাহমুদ, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হুসাইন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সুলতান আহমেদ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.