Sylhet Today 24 PRINT

মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করা সেই নারী কাউন্সিলর ও তার মা গ্রেপ্তার

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ৩০ জুলাই, ২০১৭

মেয়েকে ধর্ষণের পর মা ও মেয়ের মাথা ন্যাড়া করার ঘটনায় বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মার্জিয়া আক্তার রুমকি ও তার মা রুমিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রোববার (৩০ জুলাই) রাতে পাবনা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। বগুড়ার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কাউন্সিলর ও তার মাকে পাবনা থেকে বগুড়ায় নিয়ে আসছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।

গ্রেপ্তার হওয়া কাউন্সিলর রুমকি বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের বরখাস্ত হওয়া আহ্বায়ক তুফান সরকারের স্ত্রী আশার বড় বোন। সেই হিসেবে রুমকির মা রুমি তুফানের শাশুড়ি হন।

এরআগে দুপুরে শহর শ্রমিক লীগ আহবায়ক তুফান সরকার, তার সহযোগী রুপম ও আলী আজমকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। দুপুর আড়াইটার দিকে বগুড়ার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম শ্যাম সুন্দর রায় এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ জানান, দুপুরের দিকে তুফান সরকারসহ তিনজনকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি তুফান সরকার ও তার সহযোগীরা এসএসসি পাস এক ছাত্রীকে ভালো কলেজে ভর্তি করার কথা বলে গত ১৭ জুলাই শহরের নামাজগড় এলাকায় তাদের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে এ ঘটনা কাউকে না জানাতে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ধর্ষণের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে গত শুক্রবার বিকেলে তুফান সরকারের স্ত্রী আশা ও তার বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মার্জিয়া আক্তার রুমকিসহ কয়েকজন মিলে ওই ছাত্রী ও তার মাকে বেধড়ক পিটিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেন। তাদের বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে মেয়ের মা বলেন, ‘আমরা সমাধানের জন্য কমিশনারের (কাউন্সিলর) কাছে গেছি। কমিশনার উল্টা মা আর মেয়ের চুল কেটে, এসএস পাইপ দিয়ে আমাদের মা-মেয়েকে মারছে। অনেক নির্যাতন করছে, পাঁচ মিনিট পরপর টর্চারিং, পাঁচ মিনিট পরপর আমাদের মাইর। কমিশনার (কাউন্সিলর), কমিশনারের মা ও তার বোন আশা। এই তিনজনার চরম বিচার চাই, চরম শাস্তি হোক।’

রোববার দুপুরে মা ও মেয়েকে হাসপাতালে দেখতে যান বগুড়ার জেলা প্রশাসক নূর-ই আলম সিদ্দীক। এ সময় তিনি ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে তাদের চিকিৎসা ও পড়ালেখা খরচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহন করা হবে বলেও জানান।

সাংবাদিকদের জেলা প্রশাসক বলেন, ‘পরিবার থেকে আইনগত সাপোর্ট দেওয়ার যে জায়গাটি, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ওকে আইনগত যতটুকু সাপোর্ট দেওয়া প্রয়োজন এই মামলাটি পরিচালনা করার ক্ষেত্রে এবং ন্যায্য বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে, এই কাজটি আমরা করব। পুলিশের মতো করে আইজি রিপোর্ট, তদন্ত করে যাবে পুলিশ বিভাগ। আমরা একটি অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ ইনকোয়ারি করব- এটার সাথে যে জনপ্রতিনিধি জড়িত আছে, তার বিরুদ্ধে যাতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেই জায়গাটি আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।’

শনিবার ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে তুফান, রুমকি ও আশাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মেয়েটির মা। শুক্রবার রাতেই পুলিশ মূল আসামি তুফান, তার সহযোগী রূপম, আলী আজম ও আতিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে গতকাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আতিকুর। আজ বাকি তিনজনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.