Sylhet Today 24 PRINT

সেই ছবির তরুণটির নাম ‘হাকিম’, নেটওয়ার্কের বাইরেই থেকে গেলেন সাব্বির

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ৩১ মে, ২০১৫

মা আশা করেছিলেন, বন্ধু বান্ধবরাও আশা করেছিল। জীর্ণ শীর্ণ চেহারা হলেও মা বলছিলেন এটা তাঁর ছেলে সাব্বিরই। কিন্তু সাব্বিরের পরিবারকে আরেকবার কষ্ট পেতে হল। এএফপির সূত্র যে জানাচ্ছে এই ছবির ছেলেটির নাম হাকিম। সাব্বির নামে কেউ ওই নৌকা থেকে উদ্ধার হননি।

সেন্ট মার্টিনে ১৩ মাস আগে সাগরে ভেসে যাওয়া সাব্বির ইন্দোনেশিয়ায় এমন একটি খবর সাব্বিরের পরিবারের দাবির বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে এএফপির ফের অনুসন্ধান চালিয়ে দেখে ওই ছেলেটির নাম  আব্দুল হাকিম।

ছবিটি সম্পর্কে এএফপির ঢাকা ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম শনিবার জানান, তাদের সংবাদ সংস্থার তোলা ওই ছবি নিয়ে কথা কথা ওঠার ওপর জাকার্তায় যোগাযোগ করে তারা জেনেছেন যে ছবির ওই তরুণ বাংলাদেশি হলেও তার নাম আব্দুল হাকিম।   

“ছবিটি আমাদের। ছবিটি সাব্বিরের বলে কথা উঠার পর আমরা জাকার্তা ব্যুরোকে জানাই। তারা আবার অনুসন্ধান করে।” সেখানে উদ্ধার মিজানুর রহমান নামে একজনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন শফিকুল আলম, যিনি ছবির ওই তরুণের সঙ্গী।

“আব্দুল হাকিম অসুস্থ। তাই তার সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। মিজান জানিয়েছে, হাকিমের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফের লেদা গ্রামে। তারা তিন বন্ধু সেখানে আছে।” অবৈধভাবে মালয়েশিয়া পাড়ি জমাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে সাগরে ভাসমান কয়েক হাজার মানুষ এখন ইন্দোনেশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে।

ওই আশ্রয় শিবিরে এক তরুণের ছবি বাংলাদেশের সংবাদপত্রে দেখার পর সাব্বিরের মা দাবি করেন, ওই তরুণ তারই ছেলে সাব্বির। গত বছর বাংলা নববর্ষে বন্ধুদের সঙ্গে সেইন্ট মার্টিন দ্বীপে বেড়া গিয়ে ডুবে গিয়েছিল সাব্বির। তার সন্ধান আর মেলেনি।   

শফিকুল আলম বলেন, “ওই ছবিটি আমরা ১০ মে প্রকাশ করেছিলাম। তবে অন্য ছবিগুলোর বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারি না।”এর আগে দুটি দৈনিক পত্রিকার প্রকাশিত একটি ছবি দেখে সাব্বিরকে খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছিল তাঁর পরিবার।

আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির ৩৩ জন বন্ধুর সঙ্গে ২০১৪ সালে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে সেইন্ট মার্টিন দ্বীপে গিয়েছিলেন।

ওই বছরের ১৪ এপ্রিল সাগরে গোসলে নেমে ডুবে যান কয়েকজন। এরপর কয়েকজনকে জীবিত এবং চারজনের লাশ উদ্ধার করা গেলেও সাব্বিরের পাশাপাশি ইশতিয়াক বিন মাহমুদ উদয় নামে তার এক বন্ধুর খোঁজ আর মেলেনি।

কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাব্বির ফটোগ্রাফিও করতেন। মেমোরী মেকারস নামে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে আলোক চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজও করতেন তিনি।দৃক গ্যালারিতে সাব্বিরের ছবির প্রদর্শনীও হয়েছিল। বিদেশে বেশ কয়েকটি প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার।

কক্সবাজার যাওয়ার আগে গত বছরের ১২ এপ্রিল সাব্বির তার ফেইসবুক পাতায় স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, “চলে যাচ্ছি দোস্ত ! একদম নেটওয়ার্কের বাইরে !!”।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.