Sylhet Today 24 PRINT

পিলখানা হত্যা: হাই কোর্টে দণ্ড কমল যাদের

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৭ নভেম্বর, ২০১৭

পিলখানায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার মামলায় বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ৪৫ জন আসামি হাই কোর্ট থেকে খালাস পেয়েছেন। আর ১৫২ জনের মধ্যে ১৩৯ জনের ফাঁসি বহাল রয়েছে। মৃত্যুদণ্ড থেকে ৪ জনকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন। আবার ১৬০ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আরও ১২ জন বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

এ ছাড়া নিম্ন আদালতে ২৫৬ জন বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৯ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন হাই কোর্ট। হাই কোর্ট মৃত্যুদণ্ড থেকে ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। আবার নিম্ন আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাই কোর্ট ৩১ জনকে যাবজ্জীবন এবং চারজনের সাত বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন।

এই হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে দুজন রাজনীতিবিদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলী সোমবার দেওয়া হাই কোর্টের রায়ে নির্দোষ প্রমাণ হয়েছেন। অপর রাজনীতিবিদ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাংসদ নাসিরুদ্দিন আহমেদ (পিন্টু) কারাবন্দি অবস্থায় মারা যান।

বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতি হলেন মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।

উল্লেখ্য, নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ছয়জন আসামি মারা গেছেন।

হাই কোর্টে যারা খালাস পেলেন
১৫২ জন বিচারিক আদালতের ফাঁসির দণ্ড পেলেও আপিল করলে হাই কোর্ট চারজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। তারা হলেন, হাবিলদার খায়রুল আলম, নায়েব সুবেদার মো. আলী, হাবিলদার বিল্লাল হোসেন খান ও সিপাহি মেজবাহ উদ্দিন। ফাঁসির আসামি ডিএডি মির্জা হাবিবুর রহমান ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মারা যান।

১৬০ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামির মধ্যে হাই কোর্ট থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন ১২ জন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলী, ডিএডি মো. সিরাজুল ইসলাম, সিপাহী শাহিদুল ইসলাম, নায়েব সুবেদার আলা উদ্দিন, ঝাঁড়ুদার আমাদুল হক, রাশেদ আলী খোকা, মো. আলম, মানিক চন্দ্র, আলমগীর হোসেন, হাবিলদার কামাল উদ্দিন, সিপাহী সাইদুল ইসলাম ও সিপাহী আতিকুর রহমান।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত যে দুজন আসামি মারা গেছেন। বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু ২০১৫ সালের ৩ মে কারাগারে মারা যান। আর সিপাহী শফিকুল ইসলাম মারা যান ২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর।

বিভিন্ন মেয়াদে বিচারিক আদালতে কারাদণ্ড পাওয়া ২৫৬ জন আসামিদের মধ্যে খালাস পেয়েছেন ২৯ জন। এরা হলেন, ল্যান্স নায়েক মনজরুল ইসলাম, সিপাহী হামিদুল ইসলাম, ঝাড়ুদার আবদুল মাজেদ, নায়েব সুবেদার আবদুল কাদের, সিপাহী শাহ জালাল শিকদার, সিপাহী আবদুল মতিন, ল্যান্স নায়েক সাদেক আলী, সিপাহী শাহাব উদ্দিন, পাচক আমিরুল ইসলাম, সিপাহী শেখ ফরিদ, সিপাহী ইন্তাজ আলী, সিপাহী সরোয়ার হোসেন, হাবিলদার বাবুল ইসলাম, সিপাহী আবুল কালাম, সিপাহী রাকিবুল ইসলাম লিমন, সিপাহী মো. শফিকুল ইসলাম, হাবিলদার আবদুল বারিক, সিপাহী মাহবুবুল আলম, সিপাহী আজাজুল হক রাহী, নায়েক মো. ওয়াজেদ আলী, সিপাহী আনিসুর রহমান, হাবিলদার খন্দকার পনির উদ্দিন, কার্পেন্টার শামসুল হক, সিপাহী শেখর প্রসাদ চৌধুরী, সিপাহী মো. আরাফাত হোসেন, সিপাহী মোকাররম হোসেন, সিপাহী জিয়াউল হক ও সিপাহী কামরুল হাসান (পলাতক)।

২৮ জন বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে কোনো আপিল করেনি।

হাই কোর্টে ১০ বছর কারাদণ্ড পেয়েছেন ১৮২ জন। ২ জনের ১৩ বছর, ৮ জনের সাত বছর, ৪ জনের তিন বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন হাই কোর্ট। মারা গেছেন তিন জন। এরা হলেন জেসিও সুবেদার আবদুল কাইয়ুম। তিনি ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট মারা যান। আর জেসিও নায়েব সুবেদার শাহিদুল ইসলাম ২০১৪ সালের ৭ অক্টোবর এবং ল্যান্স নায়েক আবদুল বারেক মারা যান ২০১৬ সালের ২৫ মে।

ফাঁসির দণ্ড থেকে কমে যাবজ্জীবন
মৃত্যুদণ্ড থেকে কমে আটজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাই কোর্ট। তারা হলেন, ল্যান্স নায়েক মো. শাহ আলম, এমএলএসএস সাইফ উদ্দিন মিয়া, সিপাহী মো. রমজান আলী, ল্যান্স নায়েক মো. মোজাম্মেল হক, নায়েব সুবেদার (মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট) মনোরঞ্জন সরকার, নায়েব আলী হোসেন, সিপাহী কামরুল হাসান ও সিপাহী মো. সেলিম।

বিচারিক আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জনের রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর মধ্যে খালাস থেকে ৩১ জন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাই কোর্ট। এই ৩১ জন আসামি হলেন, সিপাহী মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, নায়েক মাহবুবুল আলশ, নায়েক তারেকুল ইসলাম, সিপাহী মো. মেহেদী হাসান, হাবিলদার মো. নুরুল আমিন, জেসিও নায়েব সুবেদার মো. ইদ্রিম মিয়া, সিপাহী মো. হাবিবুর রহমান, ল্যান্স নায়েক রাজকুমার পাল, জেসিও নায়েব সুবেদার সনথ মালাকার, সিপাহী নুর আলম সরকার, সিপাহী মো. আলী আকবর, সিপাহী মো. শফিউল আযিম, সিপাহী মো. শাহনুর রহমান, হাবিলদার মো. নুরুল হক, ল্যান্স নায়েক মো. হারুন, নায়েক মো. গুলজার হোসেন, সিপাহী মো. শামসুল হক, সিপাহী আবদুস শহীদ, সিপাহী হাসান আলী, সিপাহী মো. কাওসার আহমেদ, সিপাহী ও মো. ফারুক আহমেদ, ল্যান্স নায়েক মো. জহুরুল ইসলাম, সিপাহী মো. মোস্তফা কামাল, সিপাহী মো. মাহবুবুল আলম, সিপাহী গাজী মাশুদুল হক, সিপাহী মো. আবদুল খালেক, সিপাহী মো. বাকী বিল্লাহ, ল্যান্স নায়েক মো. আবদুল আজিজ, সিপাহী মো. মফিজুর রহমান, হাবিলদার শেখ আবদুর রশীদ, কুক আমিন মোল্লাহ।

এছাড়া খালাস পাওয়া চার জনের সাত বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন হাই কোর্ট। এরা হলেন, হাবিলদার জেসিও নায়েব সুবেদার সনথ মালাকার, নায়েক মুক্তার হোসেন, সিপাহী মো. আলমগীর কবীর ও মো. জিয়া উদ্দিন বাবলু।
সূত্র: প্রথম আলো

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.