Sylhet Today 24 PRINT

প্রশ্ন ফাঁসে চিহ্নিত ৩০০ মোবাইল ফোন নম্বর ‘বন্ধ’

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

প্রতীকী ছবি

এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসে ব্যবহার করা ৩০০টি মোবাইল ও টেলিফোন নম্বর শনাক্ত করে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এসব মোবাইল নম্বরের মালিকদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযানেও নেমেছে।

এই নম্বরধারীদের অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী, যারা মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে, কম্পিউটার সায়েন্সে পড়েন এবং এদের অভিভাবকরাও আছেন। এদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। প্রশ্নফাঁস মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর এসব তথ্য জানিয়েছেন।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রশ্নফাঁস মূল্যায়ন কমিটির জরুরি সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সভায় পুলিশ, র‌্যাবের সদস্যসহ কমিটির ১১ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জানানো হয়, এরই মধ্যে শনাক্ত হওয়া নম্বরগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আর এদেরকে ধরতে অভিযানও শুরু হয়েছে। কমিটির প্রধান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আলমগীর সভায় সভাপতিত্ব করেন।

প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তদন্ত করতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি এই গঠন করা হয়। পরদিন থেকে কাজ শুরু করে তারা।

গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এসএসপি পরীক্ষার প্রতিটি বিষয়েই পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্ন এসেছে সামাজিক মাধ্যমে। পরীক্ষা শুরুর ২৪ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টা আগে প্রশ্নগুলো আপ করা হয় ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। যারা সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন আপ করেছে, তারা রীতিমতো মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগের আহ্বান জানিয়ে আসছে। এমনকি তাদেরকে কিছু করা যাবে না বলেও সামাজিক মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ দিয়ে আসছিল তারা।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ধরতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থী, ব্যাংকার, অভিভাবকসহ গ্রেপ্তার হয়েছে ৩০ জনের বেশি।

পুলিশ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার ১৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে, প্রশ্ন পরীক্ষার হলে নেয়ার সময় ছবি তুলে সেগুলো তাদের কাছে পাঠানো হতো।

তবে যারা এই কাজটি করে আসছেন, তাদেরকে এখনও শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে এ কাজেও দ্রুত সাফল্যের আশা করছে তারা।

সচিবালয়ে সভা শেষে আলমগীর বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে যে অভিযোগ এসেছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করা। এ পর্যন্ত তিনশ মোবাইল ও টেলিফোন নম্বর চিহ্নিত করে তা ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। এই নম্বরধারীদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী যারা মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং বা কম্পিউটার সায়েন্সের মতো বিষয়ে পড়ালেখা করছেন। অনেক অভিভাবকের নম্বরও রয়েছে এই তালিকায়।’

মো. আলমগীর জানান, এরই মধ্যে শনাক্ত হওয়া নম্বরের ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। ‘টেলিফোন নম্বর যাদের পাওয়া যাবে, তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাবলিক পরীক্ষা আইন ও সাইবার অপরাধ আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পরীক্ষা বাতিলের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হচ্ছে-এমন প্রশ্নে আলমগীর বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষার মাত্র ৫-১০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র পাচ্ছে। ওই প্রশ্ন পেয়ে তো বেশি প্রভাব পড়ার সুযোগ নেই। আবার দেখা গেছে, বেশ আগে ফাঁস হলেও পাঁচ বা ১০ হাজার ছেলেমেয়ে এসব প্রশ্ন পেয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা দিয়েছে ২০ লাখের বেশি। এমন বিষয়গুলো হিসাব-নিকাশ করব। তারপর সুপারিশ করা হবে। কর্তৃপক্ষ (মন্ত্রণালয়) সিদ্ধান্ত নেবে।’

আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান আলমগীর।

এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের মধ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় মনিটরিং এবং আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির জরুরি সভায় ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ ও বিটিআরসি প্রতিনিধি, আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধিদের ওই কমিটিতে রাখা রয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.