Sylhet Today 24 PRINT

প্রশ্ন ফাঁসের ‘৬ কারণ’ জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

প্রশ্নপত্র ফাঁসে ৬ কারণ দেখিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে করণীয় নির্ধারণে মঙ্গলবার বিকালে দুজন মন্ত্রী এবং ছয়জন সচিবকে নিয়ে সচিবালয়ে বৈঠকে বসেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সভায় অংশ নেন।

বৈঠকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে লিখিত পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, পাবলিক পরীক্ষাসমূহে লাখ লাখ পরীক্ষার্থী কয়েক হাজার কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। পরীক্ষা গ্রহণের সঙ্গে প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষক/কর্মচারী/কর্মকর্তা জড়িত থাকেন।

নাহিদ বলেন, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রায় সব বিভাগের কর্মকর্তা এবং পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে বিভিন্ন বিভাগের সম্পৃক্ততা রয়েছে। শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একক প্রচেষ্টায় সুষ্ঠুভাবে পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ কষ্টসাধ্য।

তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করতে হলে এর উৎস এবং পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতির ত্রুটিসমূহ চিহ্নিত করা প্রয়োজন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কয়েকটি বড় ক্ষেত্র রয়েছে। সেগুলো হলো-

১. বিজি প্রেসে প্রশ্ন কম্পোজ, এডিট, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং পর্যায়ে প্রায় ২৫০ জনের মতো কর্মী প্রশ্ন দেখতে পারে। তারা প্রশ্ন কপি করতে না পারলেও স্মৃতিতে ধারণ করা অসম্ভব ব্যাপার নয়। ৩-৪ জনের একটি গ্রুপের পক্ষে এভাবে প্রশ্ন ফাঁস করা সম্ভব হতে পারে।

২. নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে ট্রেজারি/ নিরাপত্তা হেফাজত হতে প্রশ্ন গ্রহণ করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যথাযথভাবে দায়িত্বপালন করছেন না মর্মে অভিযোগ রয়েছে।

৩. অতিরিক্ত কেন্দ্র অনুমোদন দেয়া হয়েছে, যার ব্যবস্থাপনা করার মতো পর্যাপ্ত জনবল নেই; তাছাড়া ভেন্যুগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মূল কেন্দ্র হতে দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত। ফলে ৩০ মিনিট সময়ের অধিক পূর্বে কেন্দ্র সচিবরা প্রশ্ন খুলতে বাধ্য হচ্ছেন।

৪. পরীক্ষার্থী কিংবা পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। গুটিকয়েক শিক্ষক/ কর্মচারীর কারণে গোটা প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে পড়ছে।

৫. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। এটা পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ১৫ দিন পূর্ব হতে করা সম্ভব হলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।

গোয়েন্দা সংস্থার লোকবল ও অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত স্বল্পতার কারণেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে না মর্মে প্রতীয়মান হয়। দুষ্কৃতকারীদের তাৎক্ষণিক গ্রেফতার ও শাস্তি প্রদান করতে না পারায় অন্যরাও অপরাধ করতে ভয় পাচ্ছে না।

৬. বিটিআরসি কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন আপলোডকারীদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না এবং সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.