সিলেটটুডে ডেস্ক | ০১ নভেম্বর, ২০১৮
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গুলশান থানা-পুলিশের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আছাদুজ্জামান নূর এই আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার সকালে কড়া নিরাপত্তা প্রহরায় মইনুল হোসেনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর মইনুল হোসেনকে আবার আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে বুধবার গুলশান থানা-পুলিশ মইনুলকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন।
গত ২৪ অক্টোবর মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য সুমনা আক্তার লিলি। সাইবার ট্রাইব্যুনাল সেদিন মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করতে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ ও ২৯ ধারায় মামলা করা হয়।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, বাদী সুমনা আক্তার লিলি বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছেন। নারী ও শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। গত ১৬ অক্টোবর নিজ বাসায় ৭১ টেলিভিশনের টকশো দেখছিলেন। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে আইনজীবী মইনুলের কাছে মাসুদা ভাট্টি প্রশ্ন করেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আপনি যে হিসেবে উপস্থিত থাকেন, আপনি বলছেন, আপনি নাগরিক হিসেবে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বলছেন, আপনি জামায়াতের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকেন।’ মাসুদা ভাট্টির এমন প্রশ্নের পর কোনো উসকানি ছাড়াই মইনুল হোসেন মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন।
মামলায় বলা হয়, মইনুল হোসেন এই বক্তব্য দিয়ে নারী জাতির সম্মানহানি ঘটিয়েছেন অথচ তিনি ক্ষমা চাননি। বরং গত ২১ অক্টোবর বেলা ৩টা থেকে ২২ অক্টোবর রাত ৯টার মধ্যে পুনরায় একটি টেলিফোন অডিও রেকর্ড ডিজিটাল ডিভাইসে প্রকাশ করেন। মইনুল হোসেন নিজে অডিও রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। বাদী সুমনা আক্তার ওই অডিও রেকর্ডটি ইউটিউবে শুনতে পান।
মামলায় আরও বলা হয়, আসামি মইনুল হোসেন ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশনে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মাসুদা ভাট্টি সম্পর্কিত বিতর্কিত ব্যাখ্যার আড়ালে পুনরায় ফেসবুকে মাসুদা ভাট্টির ব্যক্তিগত চরিত্র জঘন্য বলে মন্তব্য করেছেন। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপরাধ।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৫৩ এর খ ধারা অনুযায়ী মইনুল হোসেন প্রথম ঘটনার পর পর আবার একই রকমের অপরাধ করেছেন। তার এই অপরাধ অজামিনযোগ্য।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর রংপুর আদালতে করা মানহানির মামলায় মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিএমপি)। পরদিন মইনুলকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।