Sylhet Today 24 PRINT

রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে রাস্তায় ঈদ করছে সোয়ান গার্মেন্টসের শতশত শ্রমিক

নিউজ ডেস্ক |  ১৮ জুলাই, ২০১৫

ঈদের দিনেও রাস্তায় অবরোধ কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছেন সোয়ান গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের ব্যানারে গত রোববার থেকে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচী পালন করছেন শতশত শ্রমিক।

এর আগে বৃহস্পতিবারের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধ না করলে রাস্তায় ঈদ কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন শ্রমিকরা। এই দাবীতে বিভিন্ন কর্মসূচীও পালন করেছেন তারা।

ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কার্যকরী সভাপতি সাদেকুর রহমান শামীম বলেন, ‘তিন মাস ধরে শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। তবে কেউ উদ্যোগী হয়ে সমস্যাটির সমাধান করেনি। গত বৃহস্পতিবার আমরা প্রধানমন্ত্রীর বরাবরও স্মারকলিপি দিয়েছি।’

এ বিষয়ে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ বলেন, কারখানাটির চীনা মালিক এপ্রিলে মারা গেছেন। মালিকানা নিয়ে এখন জটিলতা চলছে। তবে বিষয়টি সহজেই মীমাংসা করা সম্ভব। কারণ, কারখানার জায়গাটি ইসলামী ব্যাংকের কাছে বন্ধক রেখে নয় কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন মালিক। একই সঙ্গে জমিটি বিক্রির জন্য একটি গ্রুপের সঙ্গে ১৩ কোটি টাকা দাম চূড়ান্ত হয়ে আছে। ফলে ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আদায় করলে শ্রমিকদের অন্তত দুই মাসের বেতন দেওয়া সম্ভব। সরকার ও বিজিএমইএ চাইলেই ঈদের আগে সমস্যা সমাধান করতে পারতো।

এর আগে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম গণমাধ্যমে জানান, ‘সোয়ান গার্মেন্টসের বিষয়টি কিন্তু ঈদকেন্দ্রিক সমস্যা নয়। মালিক মারা গেছেন। সম্পত্তি বিক্রির জন্য মালিকানার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে হবে। তাই সময় লাগবে। সরকার এই কারখানার সমস্যা সমাধানে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটিও গঠন করেছে।’ ঈদের আগে কারখানার শ্রমিকেরা বেতন-ভাতা পাবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে, না।’

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, প্রায় তেরোশ শ্রমিক এবার ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । এমনকি খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে তাদের ।

শ্রমিক নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, "মাত্র সাড়ে ৪ কোটি টাকার জন্য শ্রমিকদের রাস্তায় ঈদ করানোর কি ব্যাখ্যা থাকতে পারে? সোয়ানের মৃত মালিকের ২০০ কোটি টাকার উপরে সম্পদ আছে, আর ঋণ ৪১ কোটি টাকার মতো। চাইলেই বন্ধকী সম্পত্তি বাবদ ইসলামি ব্যাংকের কাছ থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকা আদায় করা যেতে পারতো, যা পরে সম্পত্তি বিক্রি করে পরিশোধ করে দেয়া যেত। খুব সম্ভবত মালিকের সম্পত্তির পুরোটা লুটপাট করার ধান্দা থেকেই শ্রমিকদের বকেয়া শোধ করার জন্য সম্পত্তির ব্যাপারটা সামনে আনা হচ্ছে না। কারণ একবার পুরো হিসাব সামনে চলে আসলে, আইনগত ভাবে স্বীকার করা হয়ে গেলে পরে লুটপাট করা কঠিন হয়ে যাবে!"

প্রেসক্লাবের সামনে ঈদের দিন শনিবার সকালে শ্রমিকদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলে (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, যুব ইউনিয়নের সভাপতি কাফী রতন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হাকিম লালা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি অ্যডভোকেট মন্টু ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন এবং যুগ্ম সম্পাদক জলি তালুকদার।

 

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.