Sylhet Today 24 PRINT

শিথিল হলো বিধিনিষেধ: চাইলেই বাইরে যেতে পারবেন খালেদা

জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতের পর খালেদা জিয়া নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে চাইলে তাকে সে সুযোগ করে দেওয়া হবে

নিউজ ডেস্ক  |  ১৯ জানুয়ারী, ২০১৫

১৬ দিনের ‘অবরুদ্ধ’ জীবনের সমাপ্তি ঘটল বেগম খালেদা জিয়ার। ফটকের বাইরে তালা নেই, নেই বালু-ইটের ট্রাক, পুলিশও সরে গেছে অনেক। এখন তিনি চাইলেই বাসা যেতে পারেন, যেতে পারেন স্বামী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতে। একই সঙ্গে পারবেন শান্তিপূর্ণ দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে।

ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান- প্রয়াত জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে চন্দ্রিমা উদ্যানে যেতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। এ জন্য আবেদনেরও প্রয়োজন নেই। 

গত ১৬ দিন গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবরুদ্ধ আছেন খালেদা জিয়া। ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ কর্মসূচির সহিংস পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল রাতে এমন নাটকীয় সিদ্ধান্ত এলো।

খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এমন সিদ্ধান্ত গতকাল সন্ধ্যায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে অবহিত করা হলে তারা জরুরি বৈঠক করেন। এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তরে আইজিপির নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক হয়। সেখানে ডিএমপি কমিশনার, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি ছাড়াও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।  

এ ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের জানান- 'শান্তিপূর্ণভাবে খালেদা জিয়া পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার বিঘ্ন না ঘটিয়ে যে কোনো স্থানে যেতে পারেন। তাকে অবরুদ্ধ করে রাখার প্রশ্নই ওঠে না। তবে যদি কেউ জননিরাপত্তা বিঘি্নত করে ও জনশৃঙ্খলার হুমকির কারণ হয়, তাহলে তিনি যে-ই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়ার বাসার সামনে থেকে পুলিশ ফোর্স কমানো হয়েছে। কার্যালয়ের গেটে কোনো তালা নেই। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা ও সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যমকে জানান- জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতের পর খালেদা জিয়া নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে চাইলে তাকে সে সুযোগ করে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এক ধরনের আলোচনা হয়েছে। সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিও ইতিবাচক।

গত ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে 'গণতন্ত্র হত্যা ও কালো দিবস' আখ্যায়িত করে রাজধানীসহ সারাদেশে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। একই দিন 'গণতন্ত্র রক্ষা দিবস' হিসেবে পালন করতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। দু'দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ডিএমপি। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেও সমাবেশ করার চেষ্টা করলে ৪ জানুয়ারি রাত থেকে গুলশান কার্যালয়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কার্যত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। দু'দফায় কয়েক দিন ইট-বালু-কাঠের ট্রাক দিয়েও রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। মাঝে কয়েক দিন প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল পুলিশ।

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সমাবেশ করতে অনড় থাকলে ৫ জানুয়ারি দুপুরে কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় পুলিশ। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কার্যালয়ের দোতলা থেকে নিচে নামেন তিনি। এ সময় বের হওয়ার চেষ্টা করলে খালেদা জিয়ার গাড়ি লক্ষ্য করে পেপার স্প্রে ছোড়ে পুলিশ। প্রায় এক ঘণ্টা গাড়ি থেকে বের হয়ে উপস্থিত গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন; দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.