Sylhet Today 24 PRINT

ময়নাতদন্ত শেষ, বাড়ির পথে নুসরাতের মরদেহ

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১১ এপ্রিল, ২০১৯

ময়নাতদন্তের পর ফেনীর অগ্নিদগ্ধ শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীর পথে রওনা হয়েছেন স্বজনরা।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুকফাটা আর্তনাদের মধ্যে বাবা, দুই ভাই, মামাসহ স্বজনরা নুসরাতের মরদেহ বুঝে নেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, সকালে নুসরাতের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়।

বেলা সোয়া ১২টার দিকে লাশবাহী ফ্রিজিং ভ্যানে করে নুসরাতের মরদেহ নিয়ে ফেনীর পথে রওনা হন স্বজনরা। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ এলাকার অনেকে।

ঢাকা মেডিকেলে পাঁচদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার রাতে মারা যান ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত।

মর্গে নুসরাতের লাশ হস্তান্তরের সময় বাবা মাওলানা একেএম মুসা মানিক আর ভাইদের আহাজারিতে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সকাল থেকেই তিনি মেয়ের লাশের অপেক্ষায় মর্গের সামনে বসে ছিলেন।

সোনাগাজী রওনা হওয়ার আগে মেয়ের খুনিদের আইন অনুযায়ী সুষ্ঠু ন্যায়বিচার দাবি করেছেন তিনি।

মুসা মানিক বলেন, ডাক্তার, নার্স, এলাকার মানুষ, মন্ত্রী, সাংবাদিকসহ আপনারা সকলেই আমার মেয়ের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। এজন্য আপনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমার একটি মাত্র মেয়ে। আমার কলিজা। দোয়া করবেন আল্লাহ যেন ওকে কবুল করেন। আর যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের আইন অনুযায়ী সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার কামনা করছি।

ফেনীর সোনাগাজীর মেয়ে নুসরাত এ বছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী ছিলেন তিনি। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানির’ অভিযোগ এনে গত মার্চে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা করে নুসরাতের পরিবার।

সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষের অনুসারীরা শনিবার (৬ এপ্রিল) পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ।

অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফেনী সদর হাসাপাতালে এবং পরে শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নুসরাতকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু তার শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তা সম্ভব ছিল না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন বলেন, ৮০ পারসেন্ট বার্নের যে কনসিকোয়েন্স …ভেতরে ফুসফুসের যে ইনহেলিশন ইনহেলিটি হয়, সেটিই তার মৃত্যুর প্রধান কারণ। বিশেষজ্ঞরাও তাকে সেভাবে রক্ষা করতে পারে নাই।

নুসরাতের ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার পর তারা ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনের বিষয়ে জানাতে পারবেন।

সোমবার (৮ এপ্রিল) নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করলে অধ্যক্ষসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সরিয়ে দেওয়া সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পিবিআইকে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.