Sylhet Today 24 PRINT

নুসরাতের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১১ এপ্রিল, ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোনাগাজীর মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বাসসকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নুসরাতের হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, নুসরাতের মর্মান্তিক মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। গত ৬ এপ্রিল তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই দিন রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

শেখ হাসিনা নুসরাতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারির সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন সাংবাদিকদের জানান, ‘নুসরাত রাত সাড়ে নয়টার দিকে মারা গেছেন।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ১৮ বছর বয়সী নুসরাতের সম্ভাব্য সর্বাত্মক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

সোমবার বিকেলে সামন্তলাল সেন সাংবাদিকদের জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকেছেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য নুসরাতকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।’

কিন্তু চিকিৎসকরা বলেছেন, নুসরাতকে বিদেশে নেয়ার মতো অবস্থা নেই। কারণ তার দেহের ৮০ শতাংশ ঝলসে গেছে।

নুসরাতের অভিযোগ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামীয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা ২৭ মার্চ তাকে যৌন হয়রানি করেছে। ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষা দেয়ার জন্য সে মাদরাসায় গেলে একদল মুখোশধারী লোক মাদরাসার ছাদে তাকে ডেকে নিয়ে হত্যার জন্য তার দেহে আগুন ধরিয়ে দেয়।

২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন মেয়েটির মা। ছাত্রীর স্বজনদের অভিযোগ, মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় অধ্যক্ষের পক্ষের লোকজন ছাত্রীটির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। শনিবার গুরুতর আহত অবস্থায় ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

লাইফ সাপোর্টের যাওয়ার আগে গত রোববার অগ্নিদগ্ধ ওই ছাত্রী চিকিৎসকদের কাছে জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন, নেকাব, বোরকা ও হাতমোজা পরা চারজন তাঁর গা‌য়ে আগুন ধ‌রি‌য়ে দেন। ওই চারজ‌নের একজনের নাম ছিল শম্পা।

মঙ্গলবার মাদ্রাসাছাত্রীটির পরিবার বলেছে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি তারা আস্থা রাখতে পারছে না। হাত-পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে মেয়েটিকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনাকে পুলিশ ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি মামলার এজাহার নিয়েও পুলিশ কূটচাল চেলেছে। পরিবারের এমন অভিযোগের পর গতকাল সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি মাদ্রাসাছাত্রীকে হত্যাচেষ্টার মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়েছে।

বুধবার অভিযোগে থাকা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সরাফউদ্দিন। ওই মাদ্রাসার প্রভাষক আফসার উদ্দিন ও ছাত্র আরিফের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন একই আদালত।
সূত্র: বাসস

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.