Sylhet Today 24 PRINT

মিন্নির রিমান্ড চাইবে পুলিশ

রিফাত হত্যা মামলা

সিলেটটুডে ডেস্ক  |  ১৭ জুলাই, ২০১৯

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও নিহত ব্যক্তির স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখানোর পর আজ বুধবার বিকেলে আদালতে হাজির করবে পুলিশ।

মঙ্গলবার মিন্নিকে প্রায় ১৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ এই মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনে তাঁকে রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেয়। বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন।

পুলিশ জানায়, মিন্নিকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর আজ বুধবার যেকোনো সময় আদালতে হাজির করা হবে। আদালতে হাজির করে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবে।

মিন্নিকে আদালতে তোলার বিষয় নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির।  তবে কত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।

গতকাল রাতে মিন্নিকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেওয়ার সময় এসপি মারুফ হোসেন বলেন, মামলার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্তের জন্য এ মামলার ১ নম্বর সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে (২০) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ লাইনসে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ এবং তথ্যাদি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিন্নির সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ মেলে। তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মিন্নিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ গতকাল পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজীসহ বাকি তিন আসামি এখনো রিমান্ডে আছেন। তবে এই মামলার অন্যতম আসামি রিশান ফরাজীসহ বাকি পাঁচ আসামি এখনো গ্রেপ্তার হননি।

এদিকে ১৩ জুলাই রাতে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১৮ দিন পর রিফাতের বাবা বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মিন্নির গ্রেপ্তার দাবি করেন। রিফাতের বাবার অভিযোগের ফলে আলোচিত এই হত্যা মামলা নাটকীয় মোড় নেয়। পরের দিন ১৪ জুলাই মিন্নির গ্রেপ্তারের দাবিতে বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়। ওই মানববন্ধনে রিফাতের বাবা ছাড়াও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও স্থানীয় সাংসদের ছেলে সুনাম দেবনাথ বক্তব্য দেন।

১৪ জুলাইয়ের এই মানববন্ধনের পর দুপুরে মিন্নি তাঁর বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, যারা বরগুনায় ‘বন্ড ০০৭’ নামে সন্ত্রাসী গ্রুপ সৃষ্টি করিয়েছিলেন, তারা খুবই ক্ষমতাবান ও বিত্তশালী। এই ক্ষমতাবানেরা বিচারের আওতা থেকে দূরে থাকা এবং এই হত্যা মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তাঁর শ্বশুরকে চাপ দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করিয়েছেন। এরপর ১৬ জুলাই মিন্নিকে পুলিশ লাইনসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে মিন্নিকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় বরগুনার বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এ ঘটনায় পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান। আবার অনেকে বলছেন, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.