Sylhet Today 24 PRINT

সেই তাহেরী সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীও ছিলেন

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৮ আগস্ট, ২০১৯

‘কেউ কথা কইয়েন না, একটু চা খাব? খাই একটু? আপনারা খাবেন? ঢেলে দেই? (মুচকি হেসে আবারও) ঢেলে দেই? ... ‘ভাই পরিবেশটা সুন্দর না? কোনো হইচই আছে? আমি কি কাউকে গালি দিয়েছি? কারোর বিরুদ্ধে বলতেছি? কতা কি কিলিয়ার নাকি ভেজাল আছে? এরপরও সকালে একদল লোক বলবে, তাহেরী বালা (ভালো) না।’

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মুখে মুখে এখন একটা বাক্য শোনা যাচ্ছে; আর সেটা হলো 'ঢেলে দেই'। মূলত এই বাক্যটি ভাইরাল হয়েছে আলোচিত বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর বক্তব্য থেকে। সম্প্রতি তার বেশ কয়েকটি ওয়াজে দেখা গেছে, হাতে একটি চায়ের কাপ নিয়ে তাতে চুমুক দেন তিনি। আর আলোচিত ভাইরাল বাক্যগুলো বলেন।

ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া কথাগুলোর জন্যে আলোচিত এই আত-তাহেরী গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীও ছিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে নির্বাচন করেছিলেন তিনি। তাহেরীর প্রতীক ছিল ডাব।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওই আসনে বিজয়ী হন বিএনপির উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তাহেরী ডাব প্রতীকে ভোট পেয়েছিলেন ৩ হাজার ৫টি।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াজ মাহফিল করেন মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরী। জানা যায়, তিনি ‘দাওয়াতে ঈমানী বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।

নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা তাহেরীর হলফনামা থেকে জানা গেছে, তিনি কামেল পাস করেছেন। তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। পেশা ব্যবসা। এই খাত থেকে তিনি বছরে দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা আয় করেন। এ ছাড়া পেশা (শিক্ষকতা, চিকিৎসা, আইন, পরামর্শ ইত্যাদি) থেকে বছরে এক লাখ টাকা আয় করেন বলে জানান। এ ছাড়া তিনি কৃষি খাত থেকে বছরে ৫০ হাজার টাকা আয় করেন।

হলফনামায় কৃষি ও অকৃষি জমিজমার ঘরে ‘প্রযোজ্য নহে’ কথাটি উল্লেখ করেন। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নগদ টাকা দেখিয়েছেন এক লাখ ৫০ হাজার। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মধ্যে টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি আছে এক লাখ টাকা মূল্যমানের। আসবাবপত্র হিসেবে খাট, সোফা ইত্যাদি আছে এক লাখ ২০ হাজার টাকার। তার স্ত্রীর দুই লাখ টাকা মূল্যমানের পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার আছে। তাহেরী, তার স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের নামে স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে কৃষি জমি, অকৃষি জমি, দালান, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্টসহ অন্যান্য সম্পত্তির ঘরে ‘প্রযোজ্য নহে’ কথা লেখা আছে। তার কোনো দায় ও ঋণ নেই।

এদিকে, কেবল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমই নয় তাহেরীর ওয়াজগুলো নিয়ে প্রশাসনও সতর্ক বলে জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব শব্দ বা বাক্যগুলো ‘উসকানিমূলক’ হিসেবে দেখছে। তাই তারা অন্য আরও কয়েকজন বক্তার মত ওই বক্তাকে নজরদারিতে রেখেছে বলে জানা গেছে।

কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইম বিভাগের সিনিয়র সহকারী কমিশনার সাইদ নাসিরুল্লাহ বলেন, ‘ওয়াজ করার সময় অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য কিংবা অশ্লীল বাক্য বলা যাবে না। যদি কেউ এরূপ করে থাকেন এবং সেই বক্তব্য যদি সামাজিকভাবে বাজে প্রভাব ফেলে তাহলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এই মনিটরিংয়ের কাজগুলো আমরা করে থাকি।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.