Sylhet Today 24 PRINT

নূর চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর চেষ্টায় এক ধাপ অগ্রগতি

অবস্থানসংক্রান্ত তথ্যের বিধিনিষেধ তুলে কানাডার আদালতের রায় বাংলাদেশের পক্ষে

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর চেষ্টায় এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে কানাডার আদালতের এক রায়ে। নূর চৌধুরীর অবস্থানসংক্রান্ত তথ্যের বিধিনিষেধ তুলে নিতে বাংলাদেশের আবেদন মঞ্জুর করেছেন দেশটির আদালত।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় ফেডারেল কোর্টের বিচারক ও’রেইলি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য প্রশাসনকে এই নির্দেশ দেন।

আদালত রায়ে জানান, নূর চৌধুরীর অবস্থান জানতে চেয়ে বাংলাদেশ যে আবেদন করেছে তা বৈধ। এ ধরনের তথ্য প্রকাশ জনস্বার্থের জন্য ক্ষতির কারণ হবে না।

ঘাতক নূর চৌধুরী কানাডায় কিভাবে আছেন এবং ‘প্রি-রিমুভাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের’ (পিআরআরএ) আবেদন কী পর্যায়ে আছে সে বিষয়ে বাংলাদেশকে কানাডা কোনো তথ্য দিচ্ছে না অভিযোগ করে গত বছর জুন মাসে ‘জুডিশিয়াল রিভিউয়ের’ (বিচারবিভাগীয় পর্যালোচনা) আবেদনটি করা হয়।

দেশটির উচ্চ আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করে বলছেন, কানাডা কর্তৃপক্ষ ও নূর চৌধুরীর বিষয়ে বাংলাদেশকে তথ্য না দেওয়ায় যেসব যুক্তি তুলে ধরেছেন তা গ্রহণযোগ্য নয়। আর তাই বাংলাদেশের আবেদন আবার বিবেচনা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতের রায়ে আরও বলা হয়, নূর চৌধুরী ও তার স্ত্রী ১৯৯৬ সালে কানাডায় ‘ভিজিটর’ স্ট্যাটাস পান। এর কিছুদিন পরই তারা ‘রিফিউজি প্রটেকশনের’ (শরণার্থী হিসেবে সুরক্ষা) আবেদন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার দায়ে বাংলাদেশে ফেরারি হিসেবে নূর চৌধুরীর বিচার হয় এবং সেখানে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

এছাড়া, গুরুতর ‘অরাজনৈতিক’ অপরাধের কারণে নূর চৌধুরী ও তার স্ত্রী ২০০২ সালে ‘রিফিউজি প্রটেকশন’ সুরক্ষা থেকে বাদ পড়েন। তবে নূর চৌধুরীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়নি। বাংলাদেশে ফিরলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতে পারে—এমন যুক্তি দেখিয়ে নূর চৌধুরী ‘প্রি-রিমুভাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের’ জন্য অনুরোধ করেছেন বলেও রায়ে উল্লেখ করেন আদালত।

মুক্তিযুদ্ধের চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য; আইন করে বিচারের পথও রুদ্ধ করে দেওয়া হয়।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বিচারের পথ খোলে; মামলার পর বিচার শুরু হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর ফের শ্লথ হয়ে যায় মামলার গতি।

আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে দণ্ডিত পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), এ কে বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিনকে (আর্টিলারি) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়।

কিন্তু মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খন্দকার আবদুর রশিদ, এ এম রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খান পলাতক থেকে যান।

তাদের মধ্যে নূর কানাডায় এবং রাশেদ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। বাকিদের অবস্থান শনাক্ত হয়নি। সবাইকে দেশে ফেরানোর চেষ্টায় ইন্টারপোল থেকে রেড নোটিস জারি করা হলেও তাতে কোনো সুফল আসেনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.