Sylhet Today 24 PRINT

অর্থমন্ত্রী নিজেকে ‘হাস্যকর করে তুলেছেন’, মন্তব্য শিক্ষক নেতাদের

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘অনভিপ্রেত ও অসংলগ্ন’ বলেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ঘোষণা করেছেন কর্মসূচি।

মঙ্গলবার রাতে ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও মহাসচিব অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, “মাননীয় অর্থমন্ত্রী আজ সংবাদমাধ্যমে শিক্ষকদের বিষয়ে কিছু বিরূপ মন্তব্য করেছেন। যা শুধু অনভিপ্রেতই নয়, অসংলগ্নও বটে।”

অর্থমন্ত্রীকে ‘আমলাদের প্রতিনিধি’ আখ্যায়িত করে শিক্ষক নেতারা বলেছেন, তার কাছে ‘সুবিচার’ পাওয়া যাবে বলে তারা মনে করেন না।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই জোট স্বতন্ত্র পে-স্কেলের দাবি এবং নতুন বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড বাতিলের প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন, যার সমালোচনা করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

শিক্ষকদের কর্মবিরতির কর্মসূচি চলাকালে দুপুরে সচিবালয়ে মুহিত সাংবাদিকদের বলেন, “দেশের সবচেয়ে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী জ্ঞানের অভাবে আন্দোলন করছে। এই কর্মবিরতির কোনো জাস্টিফিকেশন নেই। তারা জানেই না পে-স্কেলে তাদের জন্য কী আছে, কী নেই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ‘ইচ্ছেমত’ পদোন্নতি দেওয়া হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন অর্থমন্ত্রী, যাকে তিনি আখ্যায়িত করেন ‘করাপট প্র্যাকটিস’ হিসেবে।

এর প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতি হয় সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে; যাতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোরও অনুমোদন রয়েছে।

“উচ্চশিক্ষার উৎকর্ষ সাধন ও প্রকৃত মানবসম্পদ সৃষ্টি এবং শিক্ষকদের মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষকরা যে কোনো গঠনমূলক প্রস্তাব মেনে নেবেন। কিন্তু গণমাধ্যমে মাননীয় মন্ত্রীর কথায় মনে হয়েছে, তিনি জনগণের প্রতিনিধি নন, আমলাদের প্রতিনিধি। সুতরাং তার কাছ থেকে শিক্ষকরা সুবিচার পাবেন বলে আমরা মনে করি না।”

শিক্ষকদের জ্ঞান নিয়ে মন্তব্যের কারণে সরকারের এই জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীর সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, “বস্তুতপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষক ও শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে তার জ্ঞানের অভাবের কারণেই তিনি এরূপ দায়িত্বহীন মন্তব্য করেছেন।”

অর্থমন্ত্রী এর আগেও বিভিন্ন ‘বিরূপ মন্তব্য’ করে জাতির কাছে নিজেকে ‘হাস্যকর করে তুলেছেন’ বলে শিক্ষকদের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে।

এদিকে শিক্ষকদের আগের চার দফা দাবি এবং অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবুল হোসেন জানান।

তিনি বলেন, “৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করব আমরা। এ দুইদিন সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচিও চলবে।”

এর আগে চার দফা দাবিতে মঙ্গলবার দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা।

সপ্তম বেতন কাঠামোতে সচিব, মেজর জেনারেল এবং সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপক সর্বোচ্চ গ্রেডে (গ্রেড-১) ছিলেন। আর জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা গ্রেড-২ এবং অধ্যাপকরা গ্রেড-৩ এ বেতন পেয়ে আসছিলেন।

অষ্টম বেতন কাঠামোতে অধ্যাপক ও জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের অবস্থান ঠিক থাকলেও সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপকদের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়নি, যা নিয়ে শিক্ষকদের এই আন্দোলন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.