Sylhet Today 24 PRINT

দেশটার নামও আমি মুখে নিতে চাই না: জাফর ইকবাল

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

মঞ্চে উঠেই লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল চিরচেনা ভঙ্গিতে প্রশ্ন করলেন, ‘তোমরা কেমন আছো?’ পাখির মতো কিচিরমিচির তুলে শিশু-কিশোরেরা উত্তর দিল, ‘ভালো আছি।’ এরপর তাদের বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করলেন তিনি। একটি প্রশ্নের উত্তরে শিশু-কিশোরেরা ‘পাকিস্তান’ শব্দটি উচ্চারণ করলে জাফর ইকবাল বললেন, ‘আমি এই দেশটার নামও মুখে নিতে চাই না।’

শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ‘মুক্তির উৎসব’ শীর্ষক এক কর্মসূচিতে মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিশু-কিশোরদের সঙ্গে নানা কথায় মেতে ওঠেন। কর্মসূচির আয়োজক মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। জাদুঘরের শিক্ষা কর্মসূচির অংশ হিসেবে এবার ১৯তম এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

মঞ্চে উঠে শিশু-কিশোরদের কুশল জিজ্ঞাসার পর জাফর ইকবাল বললেন, ‘আমি একজন মাস্টার, একজন টিচার। টিচাররা কী করেন? ছেলেমেয়েদের পড়ান। আমি পড়াই আর ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা নিই। আমি তোমাদের একটা পরীক্ষা নিই, দেখি তোমরা কে কে পাস করতে পারো।’

এরপর একে একে প্রশ্ন ছুড়ে দিতে থাকেন জাফর ইকবাল। শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোয়েশ্চেন নাম্বার ওয়ান, আমাদের দেশের নাম কী?’ ছোটদের উত্তর- ‘বাংলাদেশ’। জাফর ইকবালের মন্তব্য, ‘পাস, সবাই পাস করেছো। অলরাইট। এখন যদি আমি তোমাদের বলি যে একটা মানুষের নাম বল, যে মানুষটার জন্ম না হলে আমাদের বাংলাদেশ হতো না।’ উত্তর এল, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’ এবারও জাফর ইকবালের মন্তব্য, ‘পাস, সবাই পাস। বঙ্গবন্ধুর যদি জন্ম না হতো, তাহলে আমাদের বাংলাদেশ হতো না। মনে রেখো, তিনি সবাইকে একত্র করেছিলেন, সবাইকে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।’ এরপর তিনি বলেন, ‘এবার বলো, আমাদের দেশ কোন দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল?’ ছোটরা উত্তর দিল, ‘পাকিস্তান।’ উত্তরটি শোনার পর জাফর ইকবাল বললেন, ‘আমি এই দেশটার নামও মুখে নিতে চাই না। তোমরা সবাই বাসায় গিয়ে টুথপেস্ট দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে নেবে, যেহেতু এই দেশের নামটা মুখে নিয়েছো। ঠিক আছে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশাল প্যান্ডেলের নিচে হাজারো শিক্ষার্থীর এই মিলনমেলায় সবার মাথায় লাল-সবুজের টুপি। প্রত্যেকে ছিল নিজ নিজ স্কুলের পোশাক পরা। কিছুক্ষণ পরপর ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের সঙ্গে উল্লসিত হয়ে ওঠে তারা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা নাচ-গান আর আনন্দে মেতে থাকে।

উৎসবে রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তারা শপথ নেয় উদার-অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ গড়ে তোলার, সন্ত্রাস-মাদক-জঙ্গিবাদ নির্মূলের। শপথ পাঠ করান মুক্তিযুদ্ধের ১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আমিনুল ইসলাম খান, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি সারা যাকের, প্রথম বাংলাদেশি নারী এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.