Sylhet Today 24 PRINT

৫ মের পর চালু হতে পারে যাত্রীবাহী ট্রেন

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ৩০ এপ্রিল, ২০২০

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে লকডাউনের শুরুতেই রেল চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এখন ধীরে ধীরে পোশাক কারখানা চালুসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিথিলতার পথে হাঁটাছে সরকার। এ অবস্থায় রেল যোগাযোগ চালু করার বিষয়েও তৎপরতা শুরু হয়েছে।

প্রথমে কাঁচামাল ও শাকসবজি পরিবহনের জন্য লাগেজ ভ্যান চালু করা হবে। এরপর সীমিতভাবে আন্তনগর ট্রেন চালু করা হতে পারে। দু–এক দিনের মধ্যেই লাগেজ ভ্যান চালু হতে পারে।

সরকারি সূত্র বলছে, কবে থেকে রেল চালু হবে—সেই বিষয়ে এখনো সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে চুড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে আগামী ৫ মের পর থেকে রেল চলাচল শুরু করার বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

গত সোমবার রেলের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামানের সভাপতিত্বে রেল ভবনে একটি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন লকডাউনের পর প্রথম অফিস করবেন। ওই দিন বেলা ১১টায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক ডেকেছেন মন্ত্রী। সেখানেই রেল চালুর বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও কিছু কিছু মালবাহী ট্রেন চালু রাখা হয়। এসব ট্রেন দিয়ে মূলত সরকারের খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেল পরিবহন করা হয়। এবার লাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে পার্সেল ট্রেন চালু হলে সেগুলো দিয়ে শাকসবজি ও ফলমূল পরিবহন করা যাবে।

এমনকি মাছ–মুরগি পর্যন্ত পরিবহন করা যাবে। আগে বিভিন্ন মেইল ও লোকাল ট্রেনে যাত্রীবাহী বগির সঙ্গে এক বা একাধিক লাগেজ ভ্যান যুক্ত করে দিয়ে মালামাল পরিবহন করা হতো। এখন এসব ভ্যান জোড়া দিয়ে আস্ত একটা পার্সেল ট্রেন বানিয়ে চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল ও চট্টগ্রামের পথে এমন চারটি পার্সেল ট্রেন চালানো হতে পারে।

বিজ্ঞাপন



জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করে সরকার লকডাউন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তাঁরা ট্রেন চালু করে দিতে পারবেন। সেই প্রস্তুতি তাঁদের আছে। প্রথমেই কাঁচামাল পরিবহনেরর জন্য পার্সেল ট্রেন চালু করা হবে। এরপর যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হবে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি ট্রেন চালু হলে কীভাবে যাত্রীদের সুরক্ষা দেওয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হব।

রেলের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সোমবার রেলের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে যে বৈঠকে আলোচনা হয়, সেখানে সরকারের সিদ্ধান্ত পেলে দুই দিনের মধ্যেই যাতে টেন চালু করা যায়, সেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি রেল চালু হলে সতর্কতামূলক কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, সেই বিষয়ও উঠে আসে। কর্মকর্তাদের কারও কারও মত হচ্ছে দুই পর্বে ট্রেন চালু করা। ৫ মের পর সরকার লকডাউন তুলে দিলে প্রথমে সব ট্রেন চালু না করার পক্ষে তাঁরা। ১৫ মের মধ্যে পুরো রেল ব্যবস্থা সচল করার ভাবনার কথা জানিয়েছেন কেউ কেউ।

সূত্র জানায়, শুরুতে আন্তনগর ট্রেনের সব আসনের টিকিট বিক্রি না করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রী পরিবহন করার জন্যে কিছু আসন ফাঁকা রেখে রেখে টিকিট বিক্রির চিন্তা করা হচ্ছে। একটি বগিতে এবং পুরো ট্রেনে কী পরিমাণ টিকিট বিক্রি করলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাবে, এই বিষয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মেকানিক্যাল বিভাগের পরিচালক মিজানুর রহমানকে। এ ছাড়া যেসব ট্রেনের টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে তা শতভাগ অনলাইনে বিক্রির বিষয়টিও পরিকল্পনায় আছে, যাতে স্টেশনে টিকিট কাউন্টারে ভিড় না হয়। এমনকি ট্রেনে টিকিট চেকিং বন্ধ রাখারও পরামর্শ এসেছে। তবে এই বিষয়গুলো শুধু আন্তনগর ট্রেনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কারণ মেইল বা লোকাল ট্রেনে এই ব্যবস্থা কার্যকর করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া সব ট্রেনে হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ সুরক্ষাসামগ্রী রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুতে গত ২৪ মার্চ সরকার অফিস–আদালত বন্ধের ঘোষণা দেয়। ২৬ মার্চ থেকে সড়ক ও রেল যোগাযোগও বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ২৪ মার্চ থেকেই রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনসহ বিভিন্ন রেলস্টেশনে মানুষের ঢল নামে। ওই দিন রাতেই কিছু কিছু মেইল ও লোকাল ট্রেনের চলাচল বাতিল করা হয়। পরদিন সন্ধ্যায় সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় কিছু মালবাহী ট্রেন চলাচল করেছে। এখন দীর্ঘ এক মাস পর যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করার বিষয়ে আলোচনা শুরু হলো।

জানতে চাইলে রেলের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান বলেন, কবে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হবে, সেটা সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তবে সিদ্ধান্ত এলেই যাতে চালু করা যায়, সেই বিষয়ে তাঁরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। এ ছাড়া ট্রেন চালু হলে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা যায়, তা–ও ভাবছেন তাঁরা।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.