Sylhet Today 24 PRINT

ড. কামালের দল থেকে পদত্যাগ করলেন রেজা কিবরিয়া

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম থেকে পদত্যাগ করেছেন সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া। এই পদের পাশাপাশি দলীয় সদস্যপদও ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।

পদত্যাগপত্রে ব্যক্তিগত কারণ দেখালেও এই সিদ্ধান্তের পেছনে যে অন্য কারণ আছে, সেটি তার বক্তব্যতেই স্পষ্ট।

কী করণে পদত্যাগ করলেন-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এত কথা ফোনে বলা সম্ভব নয়।’

রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতেতে তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমি গণফোরামের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি এবং আমার পদত্যাগপত্র দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নিকট ইতোমধ্যেই জমা দিয়েছি। এ ছাড়া আমি গণফোরামের দলীয় সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছি।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থনীতিবিদ শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়ার গণফোরামে যোগ দিয়ে বিএনপির প্রতীক নিয়ে ভোটে অংশ নেয়া ছিল চমক।

২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে গ্রেনেড হামলায় কিবরিয়ার মৃত্যুর পর ওই সরকারের বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচি পালন করেছে কিবরিয়া পরিবার।

এই হত্যায় সম্পৃক্তদের জোট সরকার মদদ দিয়েছে- এমন অভিযোগ প্রকাশ্যেই করেছেন তারা।

এর মধ্যে রেজা কিবরিয়ার গণফোরামে যোগ দেয়াকে কেন্দ্র করে দলেও দেখা দেয় বিভেদ। তাকে সাধারণ সম্পাদক করে দীর্ঘদিনের সঙ্গী মোস্তফা মহসিন মণ্টুদেরকে দূরে ঠেলে দেন ড. কামাল।

গত বছরের অক্টোবরে এই বিভেদকে কেন্দ্র করে মধ্যে মণ্টুরা আলাদা সম্মেলন ডেকে যখন গণফোরামকে বিভক্ত করার উদ্যোগ নেন, তখন কামাল হোসেন আবার কাছে টেনে নেন মণ্টুদের। বিভেদ মিটিয়ে দুই পক্ষ আবার এক হওয়ার কথা বলে।

করোনাকালে এই প্রক্রিয়ায় আবার দলে গুরুত্ব হারান কিবরিয়া। আর এর মধ্যে দল ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত তিনি জানালেন।

দল থেকে পদত্যাগের কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমাকে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি ড. কামাল হোসেন ও গণফোরামের নেতৃবৃন্দের প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। গত ১৮ মাস ড. কামাল হোসেনের সাথে কাজ করতে পেরে আমি অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি।’

আর কখনও রাজনীতি না করারও ইঙ্গিত দেন রেজা কিবরিয়া। বলেন, ‘আপনারা জানেন যে আমি ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গণফোরামে যোগ দিই। গণফোরামে যোগ দেওয়ার পূর্বে আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি নীতি নিয়ে কাজ করি। এক পর্যায়ে আমার মনে হয়েছে যে নিজ দেশের জনগণের জন্য কাজ করার সময় এসেছে। এ ধরনের সুযোগ হয়তো ভবিষ্যতে নাও আসতে পারে।’

তবে বাবা আমার বাবা শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মতো, জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাওয়ার ইচ্ছার কথাও বলেন রেজা কিবরিয়া।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কিবরিয়াকে অর্থনীতিবিদ করে আওয়ামী লীগ। পাঁচ বছরে তিনি বেশ মুন্সিয়ানা দেখান। রাজনীতিতে তিনি সজ্জন মানুষ হিসেবেও পরিচিতি পান।

রেজা কিবরিয়া তার ভবিষ্যত কার্যকলাপ নিয়ে বলে, ‘বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে, আমি তাদের সঙ্গে কাজ করে যাব।’

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে অনেক আশাবাদী জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি তরুণরা বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা সম্পর্কে ধীরে ধীরে সচেষ্ট হয়ে উঠছে।’

গত বছরের ১৮ অক্টোবর মোস্তফা মহসিন মন্টু, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ থেকে আসা আবু সাইয়িদ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, হেলালউদ্দিন, সুব্রত চৌধুরী, লতিফুল বারী হামিম, খান সিদ্দিকুর রহমান ও আব্দুল হাসিব চৌধুরীকে বহিষ্কার করা হয়।

মন্টুদের বাদ দিয়ে ১২ ডিসেম্বর কাউন্সিলের ঘোষণা দেয়া হয়, যাতে সায় ছিল ড. কামাল হোসেনের। মন্টুর নেতৃত্বে দলের কয়েকজন নেতা এ আদেশ না মেনে ২৬ ডিসেম্বর আলাদা কাউন্সিলের ঘোষণা দেন।

তবে সম্প্রতি মণ্টুরা দেখা করেন ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে। আর তিনি সব বিভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.