Sylhet Today 24 PRINT

সাকা নিয়ে বিএনপি ‘চুপ’

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২১ নভেম্বর, ২০১৫

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীকে নিয়ে ‘চুপ’ হয়ে আছে বিএনপি। ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের পর দলের পক্ষ থেকে আরও কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া না আসার সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই।

তবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফেরার পর এ নিয়ে তিনি কী প্রতিক্রিয়া দেখান এ নিয়ে কেউই ধারণা করতে পারছেন না। সাকা চৌধুরী বিএনপির স্থায়ি কমিটির সদস্য এবং বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের আমলের মন্ত্রীর পদমর্যাদার উপদেষ্টা ছিলেন।

দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, তাঁর রায় কার্যকর হলেও এর প্রতিবাদে কোনো কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত নেই দলের। সে ধরনের সম্ভাবনাও ক্ষীণ।

জানা যায়, সাকা চৌধুরীর ফাঁসির রায় নিয়ে বিএনপিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। দলের বড় একটি অংশ সাকা চৌধুরীর রায়কে অনেকটা ‘স্বাভাবিক’ হিসেবেই নিয়েছে। এ অংশের নেতাদের কেউ কেউ মনে করেন, একাত্তরে বিএনপি ছিল না। তাই সাকা চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধের দায় কেন বিএনপি নেবে? বিএনপি তাঁর ব্যাপারে যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তা যথেষ্ট।

আবার বিএনপির নেতাদের আরেকটি অংশ সাকার রায় নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জোরালো প্রতিক্রিয়া না জানানোয় মনঃক্ষুণ্ন হয়েছে। এ অংশটি সাকা চৌধুরীর সমর্থক। তাছাড়া সাকা'র এক ভাই গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী বিএনপি নেতা এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলার কার্যক্রম তদন্তাধীন।

বিএনপির সূত্র জানায়, দলের কেউ কেউ আশা করেছিলেন, হয়তো শেষ পর্যন্ত সাকা চৌধুরীর ফাঁসি হবে না। বড়জোর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফাঁসির আদেশ বহাল থাকে। সাকা চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য। তাই তার ফাঁসির রায়ের ব্যাপারে একেবারে চুপ থাকা ঠিক হবে না বিবেচনা করে দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরামর্শেই গত বৃহস্পতিবার অন্য বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে সাকা চৌধুরীর রায় সম্পর্কে অনেকটা কৌশলী সাফাই বক্তব্য দেওয়া হয়। এবং এরপর তারা 'চুপ' হয়ে যায়। অপর যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের আলী আহসান মুজাহিদের রিভিউ খারিজের পর জামায়াত হরতাল ডাকলেও বিএনপি কোন প্রতিক্রিয়া জানায় নি, এমনকি কোন ধরনের কর্মসূচি দেওয়ারও লক্ষণ নেই।

বিএনপি ধরেই নিয়েছিল, সংবাদ সম্মেলনে এলে রায় নিয়ে প্রশ্ন আসবে। সে ক্ষেত্রে রায় নিয়ে সরাসরি কোনো বক্তব্য না দিয়ে রায়ের ‘টেকনিক্যাল’ বিষয় নিয়ে কথা বলার পরামর্শ দেওয়া হয়।

তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘মানবতাবিরোধী বিচার নিয়ে আমাদের দ্বিমত নেই। কথা হলো, বিচার যেন বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এবং সরকারের মন্ত্রীরা কাউকে গ্রেপ্তারের আগেই অনর্গল বলছেন, অমুককে গ্রেপ্তার করা হবে, জেলে পাঠানো হবে, ফাঁসি দেওয়া হবে। আপনাদের কাছে প্রশ্ন, তাহলে বিচার কি আদালত করে, না সরকার করে।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আপিল বিভাগে সাকা চৌধুরীর মামলার রায়ের পর বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। তখন বক্তব্য ছিল লিখিত। কিন্তু রিভিউর রায়ের পর বিএনপি প্রতিক্রিয়া জানায় অনেকটা কৌশলে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের ফাঁসির দণ্ড আপিল বিভাগেও বহাল থাকে। রায় পুনঃবিবেচনার আবেদন (রিভিউ) করা হলে বুধবার এ রিভিউ আবেদন সুপ্রীম কোর্টে খারিজ হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে আইনি আর কোন পথ খোলা নেই সাকার সামনে। এখন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা করলে সেখান থেকে প্রত্যাখ্যাত হলে যে কোন সময়ে কার্যকর হবে ফাঁসির দণ্ড।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.