নিজস্ব প্রতিবেদক | ১০ এপ্রিল, ২০১৬
বিএনপিতে ইলিয়াস যুগের অবসান হলো। শনিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ৮ বিভাগীয় সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হলেও তাতে ছিলো না ইলিয়াস আলীর নাম। সিলেট বিভাগের কারো নামই ঘোষণা করা হয় নি। যদিও নিখোঁজ হওয়ার পরও দীর্ঘদিন সাংগঠনিক সম্পাদক পদেই ছিলেন ইলিয়াস। শনিবারের পর সে পদটিও আর থাকলো না। ফলে ইলিয়াস আলী এখন আর বিএনপির কোনো পদেই থাকলেন না।
এখন পর্যন্ত এম. ইলিয়াস আলীর বিকল্প খোঁজে না পাওয়ায় এই পদ খালি রাখা হয়েছিলো বলে জানা গেছে।
সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ খালি রেখেই শনিবার ঘোষণা করা হয় ৭ যুগ্ন মহাসচিব ও ৮ সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম।
সর্বশেষ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন এম. ইলিয়াস আলী। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাজধানীর বনানী থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন ইলিয়াস। বিএনপির নেতাদের দাবি, সরকার ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে।
নিঁখোজ হওয়ার পরও এতোদিন সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে রাখা হয়েছিলো এম. ইলিয়াস আলীকে। এই কমিটিতে যুগ্ন সাংঠনিক সম্পাদক হিসেবে ছিলেন ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন।
গত ১৯ মার্চ বিএনপির কাউন্সিলের মাধ্যমে বিলুপ্ত হয় আগের কার্যনির্বাহী কমিটি। সেদিনই দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার একক দায়িত্ব দেওয়া হয় দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে। সেই ক্ষমতাবলে শনিবার যুগ্ন মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া।
ঘোষিত তালিকায় নেই সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইলিয়াস আলীর মতো সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন কাউকে খোঁজে না পাওয়ায় এই পদটি এখন পর্যন্ত খালি রাখা হয়েছে।
আর বিএনপির ইলিয়াস অনুসারীদের দাবি, ইলিয়াস আলীর নাম বাদ দেওয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপিতে ইলিয়াস যুগের অবসান হলো। ইলিয়াস আলীর ব্যাপারে বিএনপি তার অবস্থান পরিষ্কার করে ফেলেছে। অর্থাৎ বিএনপি ধরেই নিয়েছে, ইলিয়াস আলী আর কখনোই ফিরে আসবেন না। তিনি আর বেঁচে নেই।
জানা যায়, গত কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর পুরো বিভাগে বিএনপিকে চাঙ্গা করে তুলেন ইলিয়াস আলী। সাংগঠনিক দক্ষতার বলে বিরোধী বলয়ের নেতাদেরও নিজের অনুসারী করে তুলেন ইলিয়াস আলী। সিলেট বিএনপির দীর্ঘকালীন বিরোধও অনেকটা কমিয়ে আনতে সক্ষম হন।
তবে ইলিয়াস আলী আকস্মিক 'নিখোঁজ' হওয়ায় বিপাকে পড়ে সিলেট বিএনপি। সাংগঠনিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়া দলটিতে ফের মাথাছাড়া দিয়ে ওঠে অর্ন্তকোন্দল। ইলিয়াস আলীর বিকল্প কোনো নেতা তৈরি না হওয়ায়ই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।
সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদ নিয়ে দলের হাইকমান্ড গভীরভাবে চিন্তা করছে। আস্তে আস্তে এই পদে একজন যোগ্য লোককে বসানো হবে।
শনিবার (৯ এপিল) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে যুগ্ন মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
যুগ্ম মহাসচিব পদে মনোনীতরা হলেন- ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, মুজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, হারুনুর রশীদ ও শাহ লায়ন আসলাম চৌধুরী।
সাংগঠনিক সম্পাদক হলেন- ঢাকা বিভাগে ফজলুল হক মিলন, চট্টগ্রামে ডা. শাহাদাত হোসেন, খুলনায় নজরুল ইসলাম মঞ্জু, রাজশাহীতে অ্যাড. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বরিশালে বিলকিস শিরিন, রংপুরে আসাদুল হাবিব দুদু, ময়মনসিংহে ইমরান সালেহ প্রিন্স ও ফরিদপুরে শামা ওবায়েদ। সিলেটে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে কারো নাম ঘোষণা করা হয়নি।