Sylhet Today 24 PRINT

জামায়াতের কাছেও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের ‘গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম’

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬

যথাযোগ্য মর্যাদায় ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করতে নিজ দলের সব শাখাকে আহ্বান জানিয়ে জামায়াতে ইসলামী। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে অস্ত্র ধরা ও বুদ্ধিজীবী হত্যায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী দলটি বলেছে, ‘এই দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।’

রােববার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার স্মরণে এই দিন রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাবে। বিবৃতিতে অবশ্য এসব আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিতে বলা হয়নি জামায়াতের নেতাকর্মীদেরকে।

মুক্তিযুদ্ধের পরাজয়ের আগে আগে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের পরিকল্পনা ও নেতাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক রায়েই এই বিষয়টি প্রমাণ হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হত্যায় নেতৃত্ব দেয়ায় জামায়াতের সে সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের দুই শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে এরই মধ্যে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ছাত্রসংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক থাকাকালেই নিজামী ও মুজাহিদ আলবদর বাহিনী গড়ে তুলেন। সারা দেশ সফর করে তারা এই বাহিনীতে যোগ দিতে ছাত্রসংঘের নেতা-কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেন বলে সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তান সরকারের গোপন দলিলে দেখা যায়। এই দলিল সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে।

বুদ্ধিজীবী হত্যায় নিজ দলের নেতাদের ভূমিকার কোনো বর্ণনা দেয়া হয়নি জামায়াতের বিবৃতিতে। দলের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান বলেন, ‘আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এই দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। ১৪ ডিসেম্বর যে সকল বুদ্ধিজীবীগণ দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন গোটা জাতি তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে। দেশের জন্য তারা যে ত্যাগ স্বীকার করে গিয়েছেন সে জন্য তারা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’

কীভাবে এই দিবসটি পালন করতে হবে সে পরামর্শও দেন জামায়াতের দ্বিতীয় প্রধান নেতা। তিনি বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিলের আয়োজন করার মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করার জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী বলেন, ‘তারা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে তামাশা করে বেড়ায়।’ তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় নয় মাস ধরে যে গণহত্যা করেছে, তাতে তারা (জামায়াত ও তার ছাত্র সংগঠন) পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী ছিল। ডিসেম্বরে পরাজয় নিশ্চিত জেনে জামায়াতের সদস্যদের দিয়ে গঠিত আলবদর বাহিনী পরিকল্পিতভাবে স্বাধীনতার সপক্ষের বুদ্ধিজীবীদেরকে শনাক্ত করে হত্যা করে।’

সারওয়ার আলী বলেন, ‘হত্যাকারীরা যখন মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালন করার কথা বলে তখন একে শহীদদের প্রতি এক ধরনের তামাশা হিসেবেই ধরে নিতে হয়। এর বেশি উত্তর দেয়ার অর্থ হয় না। আমি বলবো, তারা উপহাস করছে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.