Sylhet Today 24 PRINT

ফটকে তালা নেই তবু গুলশান ছাড়ছেন না খালেদা, আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ

গাজীপুর বিএনপি অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে কিন্তু দলীয় হাইকমাণ্ড তাদের অনুরোধে কর্ণপাত করেনি। ফলে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে স্থানীয় নেতাকর্মিদের মাঝে

রাইআন কাব্য  |  ০৮ জানুয়ারী, ২০১৫

আগেই বালি ও ইটভর্তি ট্রাকগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল পুলিশের সংখ্যা আর এবার ফটকে ঝুলানো তালাগুলোও খুলে দেওয়া হয়েছে তবু গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে আছেন বেগম খালেদা জিয়া। কবে গুলশান ছাড়ছেন এ নিয়ে কেউ পরিস্কারভাবে কিছু বলছে না।



৪ জানুয়ারি মধ্যরাত হঠাৎ করে বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়, গুলশান ৮৬ নম্বর সড়কের বিভিন্নভাবে এলোপাথাড়িভাবে বালু ও ইটভর্তি ট্রাক দিয়ে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয় এবং পরে মুল ফটকের বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী। ফলে ৫ জানুয়ারির পূর্বনির্ধারিত সমাবেশে যোগ দিতে পারেননি তিনি। কার্যালয়ের ভেতরে থেকে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।



এদিকে বাইরের ফটক থেকে তালা সরিয়ে নেওয়ায় হলেও পুলিশ অবস্থান করছে ফটকের বাইরে। আছে সাঁজোয়াযান সহ পুলিশের গাড়ি ও জলকামান আগের মতোই। কার্যালয়ের ভেতরে আগের মতো নেই নেত্রিদের আনাগোনা। সেলিমা রহমানসহ কয়েকজন নেত্রি ছাড়া বাকি সবাই চলে গেছেন ইতোমধ্যেই।



খালেদা জিয়ার সঙ্গে এই কার্যালয়ে কয়েক দিন ধরে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, প্রেস সেক্রেটারি মারুফ কামাল খানশামসুল আল আমীন ডিউ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা। আছেন অফিস সহকারী ও চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা স্কোয়াডের সদস্যরা। বাইরে থেকে খাবার আসছে কিন্তু দলের নেতাকর্মিদের কেউ সাহস করে দেখা করতে আসছেন না নেত্রির সাথে।



খালেদা জিয়া অবরুদ্ধ আছেন দাবি করেছে বিএনপি এবং দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী গোপন স্থান থেকে ভিডিওবার্তায় জানিয়েছেন অবরোধ চলবে।



অবরোধের তৃতীয় দিনে স্বাভাবিক হয়ে আসছে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি। দূরপাল্লার বাসগুলো না চললেও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে রাজধানির গণপরিবহন ব্যবস্থা। কিন্তু চোরাগোপ্তা আক্রমণ চালিয়ে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটছে।



বিশ্ব ইজতেমামূখি মানুষদের বেশিরভাগই পড়েছে চরম বিপাকে। আন্তঃজেলা বাস চলাচল স্বাভাবিক না হলেও নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই বাস চালাচ্ছে। চরম নিরাপত্তাহীনতায় অনেকে ইতোমধ্যেই বিশ্ব ইজতেমাস্থলে গিয়ে পৌঁছেছেন। বিশ্ব ইজতেমা মাঠে সরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।



বিএনপিসহ বিশ দল ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি কবে নাগাদ সমাপ্ত হতে পারে এ নিয়ে কেউ জানে না কিছু। বেগম খালেদা জিয়ার ৩৫ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি, স্থায়ি কমিটি কিংবা ঢাকা মহানগর বিএনপির কেউ অদ্যাবধি দেখা করতে যায় নি বেগম জিয়ার সঙ্গে। আন্দোলনের ভবিষ্যৎ, নেতাকর্মিদের অনুপস্থিতি, স্বাভাবিক হতে যাওয়া দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলেছে বিএনপি চেয়ারপারসনকে।



গাজীপুর বিএনপি অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে কিন্তু দলীয় হাইকমাণ্ড তাদের অনুরোধে   কর্ণপাত করেনি। ফলে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে স্থানীয় নেতাকর্মিদের মাঝে কারণ বিশ্ব ইজতেমাস্থল গাজীপুরে হওয়ার কারণ সাধারণ মানুষের রোষের শিকার হচ্ছেন তারা।



এদিকে গুলশান কার্যালয় থেকে তালা সরিয়ে নেওয়ার পরও বেগম খালেদা জিয়া সেখান থেকে না সরার কারণে তাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নেতাদের গোপন স্থান থেকে আন্দোলনের ঘোষণা আর মাঠে কেউ না থাকার কারণে এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।  

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.