Sylhet Today 24 PRINT

সিপিবি প্রার্থী ডা. সাজেদুলের ২২ দফা ইশতেহার ঘোষণা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৭ জানুয়ারী, ২০২০

দক্ষ, কর্মসংস্থানবান্ধব, সমতাভিত্তিক, নিরাপদ ও বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তোলার ২২ দফা অঙ্গীকার সংবলিত নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. আহাম্মদ সাজেদুল হক রুবেল।

তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে কাস্তে মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রোববার ডা. সাজেদুল রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষ্মী চক্রবর্তী ও আব্দুল্লাহ ক্বাফী রতন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ও আহসান হাবিব লাবলু, সিপিবি নেতা আব্দুল কাদের, ডা. ফজলুর রহমান, জাহিদ হোসেন খান, কাজী রুহুল আমিন, লুনা নূর, খান আসাদুজ্জামান মাসুম।

সংবাদ সম্মেলনে বিকল্প উন্নয়ন পরিকল্পনা, বিকল্প নেতৃত্ব, গণমানুষের প্রতিনিধি, পরিচ্ছন্ন ও নীতিনিষ্ঠ রাজনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করে ডা. সাজেদুল হক রুবেল বলেন, অতীতে বুর্জোয়া শাসকগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাই নগরের মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন। তারা সাধারণ গরিব-মেহনতি-মধ্যবিত্ত মানুষকে বঞ্চিত করে শাসকগোষ্ঠীর নিরবচ্ছিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়েছেন।

ফলে গুলশান-বনানী-বারিধারাসহ গুটিকয়েক এলাকা ছাড়া কোথাও নাগরিক সুবিধা নেই। আর এই নির্মম বাস্তবতা থেকে জনগণকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য তারা ঢাকাকে সিঙ্গাপুর, লসএঞ্জেলস, ব্যাংকক বানানোর স্বপ্ন দেখিয়েছে। কিন্তু ফলাফল শূন্য। বরং নগরীতে এখন গ্যাস সংকট, যানজট, জলাবদ্ধতা, কালোধোঁয়া, খাদ্যে ভেজাল, উন্নয়নের নামে লুটপাট, নদী-খাল-জলা ভরাট ও দখল, ক্যাসিনো বাণিজ্য, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ হাজারো সংকট। তাই ভোট দেয়ার পূর্বে ভাবতে হবে, কাকে আমরা মেয়র নির্বাচিত করছি? তিনি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।

ডা. সাজেদুল তার নির্বাচনী ইশতেহারে ঢাকা মহানগরীতে কর্মসংস্থানের বিকল্প প্রস্তাবনা, যানজট নিরসন, বায়ু দূষণ, জলাবদ্ধতা নিরসন, মশা নিধন, ঢাকা শহরকে সবুজ শহরে পরিণত, পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান, বিষমুক্ত খাবার ও ভেজালমুক্ত বাজার নিশ্চিত করা, বস্তিবাসী ভাসমান মানুষের সমস্যা সমাধান ও বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, নারী ও সবার নিরাপত্তা বিধান, নগরবাসীর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা, হকার ও রিকশা সমস্যা সমাধান, শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, প্রতিবন্ধীদের সুযোগ-সুবিধা প্রদান, পর্যটন নগরীর সুযোগ-সুবিধা বিধান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গড়ে তোলা, খেলা-ধুলা, সংস্কৃতি চর্চা ও বিনোদনের নিশ্চয়তা বিধান করা, দুর্নীতি দূর ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, অসাম্প্রদায়িক ঢাকা গড়ে তোলা এবং সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য নগর সরকার প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব পালনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

ইশতেহারে বলা হয়, নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশনের দরজা থেকে সব ধরনের পর্দা খুলে ফেলা হবে। নগরীতে কর্মসংস্থান ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরির কর্মসূচি গ্রহণ, নগরের সব নিম্নআয়ের মানুষের জন্য কর্মসংস্থান ও রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। যানজট ও জলজট নিরসনে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ঢাকাকে মশামুক্ত করতে বছরজুড়ে কার্যক্রম ঢেলে সাজানো এবং ভেজালমুক্ত বাজার ও বিষমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে শক্তিশালী ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা হয়েছে ইশতেহারে।

কাস্তে মার্কার প্রার্থী ডা. রুবেল বলেন, নগরীর সাধারণ মানুষের গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত ও বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে। নারীবান্ধব ও তাদের জন্য নিরাপদ শহর গড়ে তোলা হবে। নগরীর পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত, বেদখল মাঠ উদ্ধার ও সাংস্কৃতিক বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ৮টি মন্ত্রণালয়ের ৫৬টি অধিদফতরের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পরিবেশবান্ধব প্রকৃত উন্নয়নের জন্য এ সব প্রতিষ্ঠান ও অধিদফতর সমন্বয় জরুরি। তাই পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য ‘নগর সরকার’ প্রতিষ্ঠা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। তাই একদিকে ভোট চোর, দুর্নীতি, স্বৈরাচারী দুঃশাসন ও অন্যদিকে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী জঙ্গিবাদী চক্রকে রুখতে নিজস্ব শক্তি নিয়ে সাধারণ মানুষের সত্যিকারের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ঢাকাকে কংক্রিটের শহরে পরিণত করা হয়েছে। যারা এই কাজ করেছে তাদের পাল্টাতে হবে। ঢাকা শহরকে সুন্দর করতে হলে অসুন্দর সৃষ্টিকারী কলঙ্কজনক নেতৃত্বকে বিদায় করতে হবে। তিনি বলেন, সিপিবি’র প্রার্থী পরীক্ষিত নেতা। এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন মানুষের আন্দোলনের পরীক্ষিত মানুষ। এই মানুষকে নির্বাচিত করে দিন বদলের সুযোগ গ্রহণ করাই ঢাকাবাসীর কর্তব্য।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.