Sylhet Today 24 PRINT

কমলগঞ্জে দুই চা শ্রমিক নেতার স্মরণে শোকসভা

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি |  ০১ নভেম্বর, ২০২০

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সুনছড়া চা বাগানের প্রবীণ দুই শ্রমিক নেতা সুখরাম নায়েক ও সন্ন্যাসী নাইড়ের মৃত্যুতে শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির উদ্যোগে রোববার (১ নভেম্বর) বেলা ১২ টায় সুনছড়া চা বাগানে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এই দুই শ্রমিক নেতা পূর্ব পাকিস্তান চা শ্রমিক সংঘ ও ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির নেতা ছিলেন।

চা শ্রমিকনেতা জিবাধন নায়েক এর সভাপতিত্বে ও চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক হরিনারায়ণ হাজরার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শোকসভার শুরুতে দুই চা শ্রমিকনেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়

শোকসভায় প্রয়াত সুখরাম নায়েক ও সন্ন্যাসী নাইড়ের সংগ্রামী জীবনের উপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি কবি শহীদ সাগ্নিক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি মো. নুরুল মোহাইমীন, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা,  ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নেতা রজত বিশ্বাস, সুনছড়া বাগানের চা-শ্রমিকনেতা দিবা শুক্ল বৈদ্য, স্যামুয়েল বেগম্যান, প্রশান্ত কৈরী, প্রয়াত সুখরাম নায়েকের ভাই বুধুরাম নায়েক, চাতলাপুর চা বাগানের নারায়ণ নায়ক, লংলা বাগানের চা-শ্রমিকনেতা শিশুলাল লোহার  প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

সভায় বক্তারা বলেন, প্রবীণ এই নেতারা সাহসী, দৃঢ়চেতা শ্রমিকনেতা হিসেবে চা-শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। দীর্ঘদিন যাবত তারা নানা রকম শারীরিক অসুস্থতায় শয্যাশায়ী অবস্থায় গত ২ মে সন্ন্যাসী নাইডু ও ১০ অক্টোবর সুখরাম নায়েক সুনছড়া চা-বাগানের নিজ নিজ বাড়িতেই মৃত্যুবরণ করেন। সাম্প্রতিক চা শ্রমিকদের মজুরি চুক্তির প্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, যখন বাজারে চাল, আলু, ডাল, পেঁয়াজের ঊর্ধ্ব মূল্য সেই সময়ে দৈনিক মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে কি করে একজন চা-শ্রমিক ৬ থেকে ৭ জনের পরিবার চালাবে? উপরন্তু শ্রমিকদের কাজের নিরিখ বাড়ানো ব্যাপারে ইউনিয়নের নেতারা চুক্তি করায় শ্রমিকদের মজুরি না বেড়ে আরও কমে যাবে।

সভায় বক্তারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের চা-শ্রমিকরা সবচেয়ে কম মজুরি পান উল্লেখ করে বলেন, প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চা-শ্রমিকদের মজুরি দৈনিক ১৭৬ রূপি, আসামের চা-শ্রমিকদের মজুরি দৈনিক ১৪৫ থেকে ১৬৭ রুপি, শ্রীলঙ্কায় দৈনিক ১ হাজার রুপি, নেপালে ২৭৮ রুপি, শীর্ষ চা উৎপাদনকারী দেশ চীনের শ্রমিকদের প্রদেশ ভিত্তিক নিম্নতম মজুরি ঘণ্টা প্রতি ১৮ দশমিক ৪ থেকে ২৪ ইউয়ান (২৩৩ থেকে ৩০৫ টাকা)। করোনাকালে পশ্চিমবঙ্গের চা-বাগান বন্ধ থাকার পরও শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে দুর্গা পূজায় তাদের বোনাস ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ২০ শতাংশে এবং বোনাসের সিলিং বাড়িয়ে ১৪,৫০০ রুপি করা হয়। বলাবাহুল্য অন্যান্য দেশসমূহের চা-শ্রমিকরা আমাদের থেকে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও অনেক বেশি পেয়ে থাকেন। অথচ বাংলাদেশে এর ভিন্ন চিত্র। সরকার গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে ৬ থেকে ৭ জনের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য দৈনিক ৬৭০ টাকা মজুরিসহ চা-শ্রমিক সংঘের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.