Sylhet Today 24 PRINT

বুড়িগঙ্গার সীমানা নির্ধারণ ও দখল উচ্ছেদের দাবি

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

বুড়িগঙ্গা নদীর যথাযথ সীমানা নির্ধারন ও দখল উচ্ছেদের দাবিতে শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার-এর যৌথউদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

বুড়িগঙ্গা নদীকে উদ্ধার ও উন্নয়নের নামে হাতিরঝিলে পরিনত করার সরকারী পরিকল্পনার সমালোচনা করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নাগরিকদের সাথে পরামর্শ না করেই গত ২২শে ডিসেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ মিউনিসিফিইয়েল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (বিএমডিএফ) আর্থিক সহায়তায় সিঙ্গাপুরের কালং ও সিঙ্গাপুর নদী এবং বাংলাদেশের হাতিরঝিলের আদলে বুড়িগঙ্গার দুই তীর সাজানোর ঘোষণা দেয়া হয়। ইতিমধ্যে ‘ঢাকা ইনটিগ্রেটেড আরবান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড স্মার্ট সিটি ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’ নামে এ প্রকল্পটির মাধ্যমে বুড়িগঙ্গার তীর ঘেঁষে হাজারীবাগ থেকে পাগলা পর্যন্ত আধুনিকায়ন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নদী উদ্ধারের নামে নদীকে ঝিলে রূপান্তরের এই পরিকল্পনা নদীকে হত্যার নামান্তর ।

বাপার সহ-সভাপতি অধ্যাপক মোয়াজ্জম হোসেন-এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য রাখেন বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার ও বাপা'র যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এই প্রকল্পের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গার চলমান দখল অব্যাহত রাখার সুযোগ দিয়ে, আদালতের রায় যথাযথভাবে মেনে নদীর সীমানা চিহ্নিত না করে এবং দখলবাজদের অবৈধ দখলকে উচ্ছেদ না করে প্রকল্প নকশা প্রস্তুত করায় মুমূর্ষু আদি-বুড়িগঙ্গার শেষকৃত্য সম্পন্নের আশংকা করছি।

বাপার সহ-সভাপতি স্থপতি মোবাশশের হোসেন বলেন, পাকিস্তানীরা বুদ্ধিজীবি হত্যার মাধ্যমে যেভাবে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি করেছিল দেশের নদ-নদীগুলোকে হত্যার মাধ্যমে এর চেয়েও ভয়াবহ ক্ষতি করা হচ্ছে। যা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তিলে তিলে উপলব্ধি করবে।

সভাপতির বক্তব্যে বাপার সহ-সভাপতি শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোয়াজ্জম হোসেন বলেন, যে উন্নয়ন পরিবেশ ধ্বংস করে তা উন্নয়ন নয়। সুতরাং রাস্ট্রের অর্থ অপচয়কারী নদীবিনাশী যে কোন প্রকল্পের বিরুদ্ধ্যে রুখে দাঁড়াতে হবে।

বাপার সাধারন সম্পাদক ডঃ আব্দুল মতিন বলেন, বারবার দখলের চিত্র সরকারের সামনে তুলে ধরার পরও দখল বন্ধ ও উচ্ছেদে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে নদীকে সৌন্দর্য্যবর্ধনের নামে হাতিরঝিল বা অন্য যে কোন কিছু করা অগ্রহণযোগ্য। নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে, তা না হলে সারা দেশে দখলদাররা নদী দখলে উৎসাহ পাবে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে নিম্নোক্ত দাবিগুলো তুলে ধরা হয়-১। নদী সংশ্লিষ্ট সকল নকশা ও পরিকল্পনা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে ২। অবিলম্বে তলদেশ, ঢাল ও পাড়ের সকল প্রকার দখল, ভরাট ও নির্মান কাজ বন্ধ করতে হবে ৩। আদালতের রায় অনুযায়ী যথাযথভাবে নদীর সীমানা চিহ্নিত করার কাজ শেষ করতে হবে ৪। নদীকে উদ্ধার ও উন্নয়নের নামে লেকে বা ঝিলে পরিনত করার পরিকল্পণা বন্ধ করতে হবে ৫। নদীবিষয়ক যে কোন উন্নয়ন পরিকল্পণায় নাগরিকদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান মৃধা বেণু, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক মিহির বিশ্বাস ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ-এর আব্দুল করিম কিম ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.