স্পোর্টস ডেস্ক | ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১
নিউ জিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড পাকিস্তানে সফর বাতিল করেছে এটা জানে সকলেই। এনিয়ে আলোচনা যেন থামছেই না। সাবেক ক্রিকেটারদের একাংশ যেমন দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাচ্ছেন, অন্যদিকে সমালোচনা করার দলের লোকের অভাব নেই।
সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল আথারটন কামান দাগালেন আইসিসির দিকেই। তার চোখে ইংল্যান্ডের বোর্ড খেলোয়াড়দের দাপটের কাছে মাথা নত করছে। আর আইসিসি? আথারটনের কাছে সেটি এখন শুধুই একটা ‘ইভেন্ট অর্গানাইজিং কোম্পানি’।
ইংলিশ দৈনিক দ্য টাইমসে লেখা কলামে এক দিন আগেই লিখেছিলেন, পাকিস্তানের প্রতি ইংল্যান্ড বোর্ডের দেনা আছে। গতকাল নিজের কলামে আবার আথারটন ধুয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিকে।
আফগানিস্তানে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের প্রতিবেশী পাকিস্তানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা শোনা গিয়েছিল আগে থেকেই। এর মধ্যে নিউ জিল্যান্ড দল তাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে, এই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোনো ম্যাচ না খেলেই পাকিস্তান সফর থেকে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেয় গত শুক্রবার। এরপর গত মঙ্গলবার ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) জানিয়ে দেয়, আগামী মাসে তাদের ছেলেদের ও মেয়েদের—দুই দলেরই পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও ‘খেলোয়াড় ও দলের সহকারীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা’ এবং এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সফর ‘আইসিসির টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য আদর্শ নয়’ বলে তারা পাকিস্তান সফরে যাবে না।
সিদ্ধান্তটা মোটেও পছন্দ হয়নি আথারটনের। ইংল্যান্ডকে ৫৪টি টেস্ট ও ৪৩টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়া আথারটন দ্য টাইমসে লিখেছেন, ‘এই সপ্তাহে নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার প্রদর্শনে ইসিবি নিজেদের কতটা দুর্বল প্রমাণিত করেছে, তা পরিমাপ করা যাবে না। যে মুহূর্তে খেলোয়াড়েরা আরও বেশি ক্ষমতাবান হচ্ছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো আরও বেশি দুর্বল হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।’
খেলাটার মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ভারসাম্য আনার ক্ষমতা যাদের সবচেয়ে বেশি, সেই আইসিসিই এখন একটা অনুষ্ঠান আয়োজক সংস্থায় (ইভেন্ট অর্গানাইজিং কোম্পানি) পরিণত হয়েছে।
আথারটন বলছেন, ‘খেলাটার মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ভারসাম্য আনার ক্ষমতা যাদের সবচেয়ে বেশি, সেই আইসিসিই এখন একটা অনুষ্ঠান আয়োজক সংস্থায় (ইভেন্ট অর্গানাইজিং কোম্পানি) পরিণত হয়েছে। নিজেদের টুর্নামেন্টগুলো ওরা ঠিকঠাকভাবেই আয়োজন করে—বিশ্বকাপ, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এবং এমন সব টুর্নামেন্ট। কিন্তু খেলাটার নৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া বা খেলাটা কোন দিকে যাচ্ছে, সেটি ঠিক করায় প্রভাবের ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান নড়বড়ে।’
পাকিস্তান সফর বাতিল করে ইসিবি নিজেদেরই ক্ষতি করেছে বলেও মনে করছেন আথারটন। তার ভাষায়, ‘ওদের (ইসিবি) পারফরম্যান্স ইংলিশ ক্রিকেটকে নিয়ে একটা ভুল ধারণা ছড়িয়ে দিল। নিজেদের এরই মধ্যে ক্ষয়িষ্ণু সুনামের বড় ক্ষতিই করেছে ওরা। আইসিসির পূর্ণ সদস্য একটা দেশ—পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কটা নষ্ট করেছে, সর্বশেষ ছয় গ্রীষ্মের মধ্যে পাঁচটিতেই আমাদের অতিথি হিসেবে যে পাকিস্তানের আচরণ প্রশংসিত ছিল।’
আথারটন বলছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ইংল্যান্ডের সম্পর্ক সব সময়ই ভালো ছিল, এমন দাবি করা না গেলেও সম্প্রতি দুই বোর্ডের সম্পর্ক বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। সে কারণে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মতো কোনো দলের চেয়েও ইংল্যান্ডের পাকিস্তান সফর বাতিল করায় পিসিবি বেশি কষ্ট পাবে।