ক্রীড়া প্রতিবেদক | ১৯ অক্টোবর, ২০১৬
কখনো আইসিসির এফটিপির কারণে কখনো আবার বিসিবির অদ্ভুত সিদ্ধান্তের কারণে টেস্ট ক্রিকেটে প্রায়ই দীর্ঘ বিচ্ছেদ ঘটে বাংলাদেশের। বৃহস্পতিবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে যখন মুশফিকুর রহিম অ্যালিস্টার কুকের সাথে টস করতে নামবেন তখন সময়ের হিসাবে সেটা ১৪ মাস পর সাদা পোশাক গায়ে জড়ানোর রেকর্ড হবে বাংলাদেশের। এর আগে টেস্টে এতটা লম্বা বিরতি পড়েনি। অথচ এই ১৪ মাসে কমপক্ষে ৫টি টেস্ট খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের।
নিরাপত্তার কারণে অস্ট্রেলিয়া গতবছর সিরিজ বাতিল করায় ২ টেস্ট খেলার সুযোগ হারান মুশফিক-তামিমরা। এরপর জিম্বাবুয়ের সাথে নির্ধারিত ৩ টেস্টের সিরিজ বাতিল করে টি-২০ সিরিজ আয়োজন করে স্বয়ং বিসিবি! যুক্তি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নাকি টেস্ট খেলা যাবে না! অথচ বিশ্বের প্রথম সারির প্রায় সবকটি দল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত টেস্ট খেলেছে। অথচ যখন টেস্টেও ভালো করছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ যেখান ১৪ মাসে কোন টেস্টই খেলেনি, ইংল্যান্ড এই সময়ে খেলেছে ১৬টি টেস্ট। কেবল এই পরিসংখ্যানই বলে দেয় কতটা পিছিয়ে আছে এই ফরম্যাটের বাংলাদেশ দল। নিয়মিত টেস্ট খেলার অনভ্যস্ততাই তাই এবারের ইংল্যান্ড সিরিজের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ।
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বুধবার মুশফিক তাই ঠাট্টার ছলে বলেন, "অনেকদিন পর ক্যাপ্টেন ডাকটা শুনতে পেলাম।"
বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও ১৪ মাস পর মুশফিকের 'ভয়েস' পেলেন। এই ১৪ মাস সংবাদ মাধ্যমকে এড়িয়েই গেছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক।
এদিকে সাদা পোশাকের দারুণ ফর্মে থাকা ইংল্যান্ড এই সিরিজকে সহজভাবে নিচ্ছে না। মধ্য অক্টোবরেও বাংলাদেশের প্রচণ্ড গরম ভাবাচ্ছে দলটিকে। পরিবেশের প্রতিকূলতাকেই বড় প্রতিপক্ষ মানছেন কুক। বাংলাদেশকে সম্মান জানিয়েও ম্যাচ শুরুর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে অকপটে বলে দিলেন তা।
অ্যালিস্টার কুক বলেন, 'বাংলাদেশে ওয়ানডেতে দারুণ খেলছে, নিজেদের কন্ডিশনে টেস্টেও ভাল করার সামর্থ্য আছে তাদের। তবে আমরা আমাদের কাজটা ভালোভাবে শেষ করতে চাই"
বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া টেস্টে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণই একেবারেই সাদামাটা। ইনজুরিত নেই মোস্তাফিজ, পেসার শহীদও আছেন ফিটনেস ফিরে পাওয়ার সংগ্রামে। মাশরাফিরা-তাসকিনর টেস্ট খেলার মত ফিট নন।
স্কোয়াডে আছেন কেবল দুই পেসার। কামরুল ইসলাম রাব্বি আর শফিউল হোসেন। এখন পর্যন্ত যা খবর এই দুজনের মধ্যে কেবল একজন থাকবেন একাদশে। অর্থাৎ স্পিন দিয়েই সাজানো হবে বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ।
অভিষেক হতে পারে অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ ও ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমানের। এক পেসার নিয়ে খেললে নতুন বল হাত ঘুরাবেন পেস অলরাউন্ডার কোটায় খেলা সৌম্য সরকার। এছাড়া সাকিবের সাথে স্পিনে হাত ঘুরাবেন তাইজুল। মুশফিক কিপিং গ্লাভস হাতে নেয়ায় অভিষেক হচ্ছে না নুরুল হাসান সোহানের।
বাংলাদেশ যেখানে একাদশ সাজাতে গলদঘর্ম ইংলিশরা আছে নির্ভার। অ্যালিস্টার কুকের সাথে বেন ডাকেট না হাসিব হামিদ ইনিংস উদ্বোধন করবেন এই মধুর সমস্যার ফল ম্যাচ শুরুর আগ পর্যন্ত জানা যাচ্ছে না।
যেমন হতে পারে টেস্ট একাদশ: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও শফিউল ইসলাম।