Sylhet Today 24 PRINT

ঢাকা টেস্টে ব্যাটসম্যানদের অসহায় আত্মসমর্পণ, অবশেষে ম্যাচ জিতল পাকিস্তান

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০৯ মে, ২০১৫

প্রায় দেড়দিন বাকি থাকতে পাকিস্তানের কাছে  ৩২৮ রানে হেরে ১-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হারল গত কিছু দিন দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশ। খেলায় জয় পরাজয় থাকে। টেস্ট ক্রিকেটে অনভ্যস্ত বাংলাদেশে টেস্ট সিরিজও জিতে যাবে এমন আশা হয়ত বাড়াবাড়ি ছিল কিন্তু খুলনা টেস্ট ড্র করে আত্মিবিশ্বসী বাংলাদেশের ঢাকা টেস্টে অসহায় আত্মসমর্পণ সাম্প্রতিক সময়ের সাথে একদমই বেমানান।

টেস্ট ক্রিকেট যতটা মাঠের খেলা তারচেয়ে অনেক বেশি মনস্তাত্ত্বিক খেলা। এটা আরেকবার প্রমাণ হল মিরপুর টেস্টে।

একাদশ নির্বাচন থেকে শুরু করে মাঠের এপ্রোচ কোন কিছুতেই পরিকল্পনার ছাপ দেখাতে না পারা বাংলাদেশ ম্যাচের দ্বিতীয় বল থেকেই যেন ছিটকে পড়ে খেলা থেকে।

শাহাদাত হোসেন যখন দুই বল করেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েন বাংলাদেশের শরীরী ভাষাও যেন আমূল পাল্টে যায়।

নেতিবাচক এপ্রোচের সাথে এক বোলার কম নিয়ে খেলে তার উপর স্ট্রাইক বোলারের ইনজুরি। বাংলাদেশকে দেখে মনে হয়েছে যত তাড়াতাড়ি ম্যাচ শেষ করা যায় ততই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে। অথচ টেস্ট ক্রিকেট হচ্ছে টেম্পারমেন্টের লড়াই।

পাকিস্তানিদের ছুঁড়ে দেয়া ৫৫৭ রানের পাহাড় সামনে রেখে প্রথম ইনিংসে করতে পারল মাত্র ২০৩। তাও শেষ দিকে সাকিব ৮৯ রান করতে পেরেছিলেন বলে না হলে ১৫০ এর নিচে আটকে থাকত দলীয় সংগ্রহ।

পাকিস্তানিরা বাংলাদেশকে ফলোঅন না করানোয় দ্বিতীয় ইনিংসে শহিদ আর সৌম্য যেভাবে বল করলেন তাতে তৃতীয় পেসার কোন যুক্তিতে রাখা হল না এমন প্রশ্ন বারবার উঠছিল।

দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান ৬ উইকেটে ১৯৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করার পর বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ায় ৫৫০ রান। হাতে দুইদিনের বেশি প্রায় ৭ সেশন। এত রান তাড়া করে জিততে হলে গড়তে হবে বিশ্ব রেকর্ড। কিন্তু লড়াই তো করা যায়। তৃতীয় দিনে ১ উইকেট হারিয়ে ৬৩ রান করে দিন পার করলে লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলেছিল।

৪র্থ দিনের সকালে প্রথম আধা ঘণ্টায় উইকেট না হারিয়ে যেভাবে তামিম ও মুমিনুল শুরু করেছিলেন সমর্থকদের প্রত্যাশাও বাড়ছিল। কিন্তু এরপরই ঘটে ছন্দপতন। ইমরান খানের একটি নির্বিষ ডেলিভারি যখন অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে চলে যাচ্ছিল তামিম সে বলেই কিনা ব্যাট লাগিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত এলেন। একই বোলারের বলে প্রায় একই ভাবে খোঁচা মেরে উইকেট দিয়ে আসেন বিশ্বকাপে ভালো খেলা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

মুমিনুল-সাকিব মিলে যখন প্রাথমিক বিপর্যয় কাটানোর আশা করছিলেন সকলে তখন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব হাফিজের বলে কোন কারণ ছাড়াই ডাউন দ্যা উইকেটে এসে ক্যাচ তোলে দিলেন লং অনে দাঁড়ানো ফিল্ডারের হাতে।

এরপর অধিনায়ক দ্বিধাগ্রস্ত শট খেলে ইয়াসির শাহর বলে ইন-সাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়ে গেলে ম্যাচের তখনই কার্যত সমাপ্তি ঘটে। মুমিনুল আর কত রান করতে পারেন, পাকিস্তান কত রানের জিতে  তাই শুধু দেখার বাকি ছিল। টানা ১১ ম্যাচের যেকোনো এক ইনিংসে ফিফটি বা তারচেয়ে বেশি রান তোলে নিয়ে বিশ্বরেকর্ডের সামনে পৌঁছালেন বাংলাদেশের লিটল মাস্টার মমিনুল হক সৌরভ। তার সামনে এখন কেবল ১২ টেস্টে টানা ফিফটি করা এবিডি ভিলিয়ার্স। ম্যাচ বাঁচানোর আশা বাদ দিয়ে অনেকেই মুমিনুলের আরেকটি সেঞ্চুরি যখন প্রত্যাশা করলেন তখন ৬৮ রানে কাটা পড়েন তিনি।

এরপরই আসলে এই ম্যাচের প্রতি সকল আগ্রহ নাই হয়ে যায়। এরমাঝে সৌম্য সরকার আউট হয়েছেন লেগ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলে ব্যাট লাগিয়ে। শেষ উইকেটে শুভাগত ও শহীদ ৪৫ রানের জুটি গড়ে দেখালেন এই পিচে চাইলেই টিকে থাকা যেত। শুভাগতের ৩৯ রানে আউটের মধ্য দিয়েই শেষ হয়ে গেল ম্যাচ।

সব ম্যাচ হেরে শেষ ম্যাচে এসে জিতে বাড়ি ফিরছে পাকিস্তান, আর বাংলাদেশের সামনে থাকল টেস্টে ভালো করার চ্যালেঞ্জ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.