Sylhet Today 24 PRINT

দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স

স্পোর্টস ডেস্ক |  ১৫ জুলাই, ২০১৮

চমক দিয়েই শুরু হওয়া বিশ্বকাপের ফাইনালেও সেই চমকই বজায় থাকলো। দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তোলার যে স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিলো ফ্রান্স সেটি পূরণও করলো এ বিশ্বমঞ্চে। ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফ্রান্স।

টানটান উত্তেজনার এই ম্যাচে ডি-বক্সের বাইরে গ্রিজম্যানের ফ্রি-কিক থেকে ক্রোয়েশিয়ার তারকা মানজুকিচের মাথায় লেগে বল নিজেদের জালেই জড়িয়ে যায়।

১৮ মিনিটের মাথায় আত্মঘাতি গোলে পিছিয়ে পড়ে ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপ ফাইনাল এর আগে আত্মঘাতি গোলের নজির নেই। কিন্তু মানজুকিচ সেই বৃত্তটা পূরণ করলেন। চিন্তায় ফেলে দিলেন পুরো ক্রোয়েশিয়াকে। কারণ এর আগে আট বিশ্বকাপে যারা প্রথমে গোল করেছে তারাই শিরোপা উৎসব করেছে।

এরপর ২৮ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে ইনজুরির কারণে অনিশ্চিত থাকা পেরিসিচ ক্রোয়েশিয়া স্ট্রাইকারের সেই আত্মঘাতি গোলের দায় ঘোচান। দলকে এনে দেন ভরসা। তার গোলে ১-১ গোলের সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু সে স্বস্তি ১০ মিনিটের বেশি রাখতে পারলো না ক্রোয়াটরা। আবার গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে তারা।

ম্যাচের ৩৮ মিনিটে মানজুকিচের দায় মেটানো পেরিসিচ এবার নিজেই দায়বদ্ধ হয়ে পড়েন।  ক্রোয়াট ফরোয়ার্ড ফ্রান্সের নেওয়া কর্ণার কিক বিদপমুক্ত করতে গিয়ে বক্সের মধ্যে হাতে বল লাগিয়ে বসেন। ভিডিও রেফারির সাহায্য নিয়ে রেফারি পেনাল্টি উপহার দেন ফ্রান্সকে। সেট পিস থেকে গোল করতে ভুল করেননি ফ্রান্স তারকা গ্রিজম্যান।

বিশ্বকাপে তিনি চার গোল করে ফেলেছেন। তার মধ্যে তিনটিই পেনাল্টি থেকে। তাতে ২-১ গোলে আবার এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ওই লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে ফ্রান্স। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৫৮ মিনিটে পগবার দারুণ গোলে ৩-১ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে চোখ ধাঁধাঁনো গোল করেন ফ্রান্সের তরুণ তারকা এমবাপ্পে। তার গোলে ৪-১ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। কিন্তু ম্যাচের ৭১ মিনিটের মাথায় ফ্রান্স গোলরক্ষক হুগো লরিসের ভুলে ব্যবধান কমিয়ে ৪-২ করে ক্রোয়েশিয়া।

৩২ দিনের ফুটবল মিলন মেলায় মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে শেষ হচ্ছে রোববার। শিরেপা নির্ধারণী যুদ্ধে মাঠে নেমেছে ইউরোপের দুই পরাশক্তি ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে হেরেই সেমিফাইনালে থেমেছিল ক্রোয়েশিয়ার স্বপ্ন যাত্রা। ক্রোয়েটদের সামনে সেই হারের প্রতিশোধ নেওয়ার দারুণ সুযোগ চলে আসে। অন্যদিকে ফান্সের অধিনায়ক ও কোচ হয়ে দুবার বিশ্বজয়ের ইতিহাস গড়ার সুযোগ দিদিয়ের দেশমের সামনে।

দশ মিনিট পর আবার এগিয়ে যায় ফ্রান্স পেনাল্টি থেকে। কর্নার থেকে ডি-বক্সে আসা বলে লেগেছিল পেরিসিচের হাতের ছোঁয়া। রেফারি মাঠের বাইরে  গিয়ে ভিডিও রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত দেন স্পট-কিকের। ঠাণ্ডা মাথায় টুর্নামেন্টে নিজের চতুর্থ গোলটি করেন গ্রিজমান।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবার সমতা ফিরতে পারতো। ইভান রাকিতিচের বাড়ানো বল ধরে আন্তে রেবিচের নেওয়া শট দুর্দান্তভাবে ঠেকান লরিস।

৫২তম মিনিটে ম্যাচে প্রথমবারের মতো জ্বলে উঠেন এমবাপে। পাল্টা আক্রমণে পগবার বাড়ানো বল ধরে দুর্দান্ত গতিতে ভিদাকে পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে শট নিয়েছিলেন পিএসজির এই ফরোয়ার্ড। পা দিয়ে ঠেকান সুবাসিচ।

দ্বিতীয়ার্ধেও অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতে গোল পেয়ে যায় ফরাসিরা। ৫৯তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে ডি-বক্সে এমবাপের বাড়ানো ক্রস ধরে গ্রিজমান বল পাঠান পেছনে থাকা পগবাকে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই মিডফিল্ডারের ডান পায়ের প্রথম শট ফেরে রক্ষণে। ফিরতি বলে বাঁ পায়ের শট যায় জালে।

ছয় মিনিট পর দুর্দান্ত গোলে ব্যবধান আরও বাড়ান এমবাপে। বাঁ দিক থেকে লুকা এরনঁদেজের পাসে প্রায় ২২ গজ দূর থেকে নিচু শটে করেন টুর্নামেন্টে তার চতুর্থ গোল।

পেলের পর প্রথম টিনএজার হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল পেলেন ১৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

এরপরই লরিসের মারাত্মক ভুল। ব্যাকপাসে বল পেয়ে অযথা এগিয়ে আসা মানজুকিচকে কাটাতে চেয়েছিলেন। পারেননি, মানজুকিচের বুটের টোকায় বল চলে যায় জালে। আশা জাগে ক্রোয়াট শিবিরে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ইতিহাস গড়া হয়নি মদ্রিচ-রাকিতিচদের।

ব্রাজিলের মারিও জাগালো ও জার্মানির ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের পর খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তি গড়লেন দেশম। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.