স্পোর্টস ডেস্ক | ২৩ নভেম্বর, ২০১৮
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ গড়েছে ৩২৪ রান। এর জবাবে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই স্বাগতিকদের বোলিং তোপে পড়ে। দলীয় মাত্র ৩১ রানেই তিন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়ে তারা। সে ধারাবাহিকতায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রানে ইনিংস গুটিয়ে গেছে অতিথি দলটির। তাই প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৭৮ রানের লিড পায়।
শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণে নাকাল হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং। তাই স্বল্প রানেই প্রথম ইনিংস গুটিয়ে নেয় তারা।
মূলত অভিষিক্ত স্পিনার নাঈম হাসানের বোলিং তোপেই বিধ্বস্ত হয় ক্যারিবীয় দলটির ব্যাটিং লাইন। তিনি একাই পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে ইতিহাস গড়েন। এ ছাড়া সাকিব আল হাসান তিনটি এবং তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ একটি করে উইকেট পান।
তবে বোলারদের এই সাফল্য ধরে রাখতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। ৭৮ রানের লিড নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারে ঝড় তুলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরের দুই ওভারে ফিরে গেলেন ওপেনাররা। তারপর মুমিনুল হক ও সাকিব আল হাসানও পারেননি বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন ৩৫ রানে চারটি উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। ক্রিজে আছেন মোহাম্মদ মিঠুন ও সাকিব আল হাসান। ৮ ওভারে ৪ উইকেটে বাংলাদেশ করেছে ৩৫ রান।
সৌম্য প্রথম ওভারে দুটি বাউন্ডারি মারেন। ১১ রান করে বাংলাদেশ। পরের ওভারের জোমেল ওয়ারিকানের কাছে বোল্ড হন ইমরুল কায়েস। মাত্র ২ রান করেন তিনি ৫ বল খেলে। রোস্টন চেজের বলে এরপর বিদায় নেন সৌম্য। ১০ বলে ১১ রান করে কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে ক্যাচ দেন এই ওপেনার।
এরআগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের হয়ে শিমরন হেটমায়ার (৬৩) ও শেন ডাওরিচ (৬৩) ছাড়া কেউই দৃঢ়তা দেখানে পারেননি। অন্যরা একরকম আসা-যাওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন।
এর আগে প্রথম ইনিংসে সম্মানজনক সংগ্রহ গড়ে তাইজুল ও নাঈমের চমৎকার ব্যাটিং দৃঢ়তায়। নবম উইকেটে এ দুজনের ৬৫ রানের জুটি দলের সংগ্রহটাকে বড় করতে অন্যতম ভূমিকা রাখে।
আর মুমিনুল হকের চমৎকার সেঞ্চুরি বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের পথ দেখায়। যদিও শুরুটা ভালো হয়নি। ম্যাচের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার সৌম্য সরকার (০)। বেশ কিছুদিন পর ফিরে দলের শুরুটা ভালো এনে দিতে পারেননি এই বাঁহাতি ওপেনার। আরেক ওপেনার ইমরুল ফেরেন ৪৪ রান করে। বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মোহাম্মদ মিঠুনও (২০)।
পরে মুমিনুল ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি করে দলকে বড় সংগ্রহের পথ দেখিয়ে ছিলেন।খেলেন ১২০ রানের চমৎকার একটি ইনিংস। এই সেঞ্চুরি করে তিনি ছুঁয়ে ফেললেন তামিম ইকবালকে। দুজনের এখন আটটি করে টেস্ট শতক।
তবে একটি জায়গায় এগিয়ে মুমিনুল। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ছয়টি সেঞ্চুরি করেন তিনি। যেখানে তামিমের একটি।
তবে মুমিনুল সাজঘরে ফেরার পরই বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের আশা শেষ হয়ে যায়। এরপর পরই অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম (৪) দ্রুত ফিরে গেলে কিছুটা চাপে পড়ে যায় দল।তাঁর পথ ধরে দ্রুত ফিরে যান মাহমুদউল্লাহও (৩)।
তখনো ভরসা ছিল সাকিব পিচে আছেন। কিন্তু তিনিও ৬৮বলে ৩৪ রানের একটি ইনিংস খেলে আউট হলে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দল।
তবে নবম উইকেটে তাইজুল ইসলামও অভিষিক্ত নাঈম হাসান দারুণ দুটি ইনিংস খেলে বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই ইনিংসেও ভালো কিছু করা সম্ভব। তাইজুল ৩৯ রানে অপরাজিত থাকলেও নাঈম ২৬ রান করে আউট হন।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে চেজের এলবিডাব্লিউর আবেদনে মোহাম্মদ মিঠুনকে আউটের সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান। তাকে নিয়ে মুমিনুল প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু চেজের শিকার হন তিনি এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ে। ১২ রান করেন মুমিনুল ১১ বল খেলে। পরের ওভারে সাকিব স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের ক্যাচ হন। মাত্র ১ রানে তিনি মাঠ ছাড়েন ওয়ারিকানের বলে।