স্পোর্টস ডেস্ক | ০৭ জুন, ২০১৯
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ক্রিকেটার এমএস ধোনির গ্লাভস থেকে সামরিক বাহিনীর একটি প্রতীক সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ধোনির পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে।
ভারতীয় রিজার্ভ ফোর্স টেরিটোরিয়াল আর্মির একজন সদস্য এমএস ধোনি এবারের বিশ্বকাপে যে গ্লাভস পরে খেলছেন - তাতে বিশেষ একটি বাহিনীর প্রতীক আছে।
আইসিসি বলছে, খেলার সময় এরকম প্রতীক সম্বলিত গ্লাভস পরা বিশ্বকাপের বিধিমালার লঙ্ঘন। তবে এটি পরার কারণে তাকে কোন জরিমানা করা হয়নি।
আইসিসি বলছে, তাদের নীতিমালা অনুসারে উইকেট-রক্ষকদের গ্লাভসে শুধু নির্মাতাদের প্রতীক থাকতে পারে, এর বাইরে অন্য কিছু নয়।
আইসিসির পক্ষ থেকে এরকম একটি আদেশের পর ভারতীয় ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ বলছে যে তাদের ক্রিকেটার এই নীতি মানতে বাধ্য নন।
ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড বিসিসিআই এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ধোনির গ্লাভসের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্যে তারা আইসিসিকে একটি অনুরোধ পাঠিয়েছেন।
তবে তিনি এও জানিয়ে দিয়েছেন যে আগামী ম্যাচগুলোতেও ধোনি এই গ্লাভস পরেই খেলবেন।
ভারতীয় সামরিক বাহিনীর এই প্রতীকটির নাম বলিদান ব্যাজ। দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ভারতের প্রথম ম্যাচে ধোনি এই গ্লাভসটি পরে খেলার কারণে অনেক ভারতীয় তার ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন।
এই গ্লাভস পরে ধোনির খেলার ছবি এবং ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হয়ে যায়।
আইসিসির এই নির্দেশ বহু ভারতীয়কে ক্ষুব্ধ করেছে। এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনাও করেছে তারা।
অনেকেই টুইট করে বলেছেন যে তারা তাদের ক্রিকেটার ধোনি এবং সামরিক বাহিনী দুটো নিয়েই দারুণ গর্বিত।
গ্লাভস নিয়ে চিন্তা না করে আইসিসিকে তারা বরং আম্পায়ারিং-এর বিষয়ে মনোযোগ দিতে বলেছে।
তারা বৃহস্পতিবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচের কথা উল্লেখ করেন - যেখানে তিন বলের মধ্যে দু'বার ক্রিস গেইলকে ভুল করে আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু দুবারই রিভিউর পর আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।
সামরিক বাহিনীর সাথে সম্পর্কের কারণে এবারই যে প্রথম ধোনিকে নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে তা নয়। এর আগে গত মার্চ মাসেও তিনি আন্তর্জাতিক এক ম্যাচের সময় সতীর্থ খেলোয়াড়দের কাছে তিনি সামরিক ধাঁচের কিছু ক্যাপ সরবরাহ করেছিলেন।
ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিহত নিরাপত্তা বাহিনীর ৪০ জনেরও বেশি সৈন্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই তিনি এই ক্যাপটি অন্যান্য ক্রিকেটারদেরকেও পরতে দিয়েছিলেন।
ওই হামলার পর ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদের সেন্টিমেন্ট তীব্র হয়ে ওঠে এবং পাকিস্তানের সাথে দেশটির যুদ্ধাবস্থাও তৈরি হয়েছিল।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সেসময় ভারতের বিরুদ্ধে খেলায় রাজনীতি নিয়ে আসার অভিযোগ করা হয়েছিল। ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যেও তারা আহবান জানিয়েছিল আইসিসির কাছে।
কিন্তু জবাবে আইসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে ভারতীয় ক্রিকেটারদেরকে ওই টুপি পরতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারপরেও এই সিদ্ধান্তটি নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল।
কারণ এর আগে এরকম অভিযোগ ওঠার পর আইসিসির পক্ষ থেকে ক্রিকেটারদেরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল।