Sylhet Today 24 PRINT

তামিমের ২০০তম ওয়ানডে আজ

স্পোর্টস ডেস্ক |  ০২ জুলাই, ২০১৯

বিশ্বকাপে আজ বার্মিংহামের এজবাস্টনে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডেতে ২০০তম ম্যাচ খেলার মাইলফলক ছোঁবেন তামিম ইকবাল।

তাঁর প্রথম, ৫০তম, ১০০তম ও ১৫০তম ম্যাচের স্কোরকার্ড দেখলে আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়। হবে না। দ্বিশতক রাঙাতে পারবেন না। কিন্তু খেলোয়াড়টি তামিম ইকবাল। আর প্রতিপক্ষ দলটি ভারত। ফর্ম যা–ই হোক, তামিমের ব্যাট চওড়া হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও কিন্তু কম নয়।

ওয়ানডেতে তামিমের অভিষেক ২০০৭ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সে ম্যাচে যাত্রা শুরু করেছিলেন ৫ রানে আউট হয়ে। দুই বছর পর তামিমের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫০তম ম্যাচটি ছিল ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের প্রথম ফাইনাল। রাঙিয়ে দিতে পারেননি। আউট হয়েছিলেন মাত্র ১৮ রানে।

আবারও দুই বছরের ব্যবধানে দেখা পেয়ে যান শততম ম্যাচের। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে গিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে ৩ রানে আউট হয়েছিলেন তামিম। পরের ৫০টি ম্যাচ খেলতে সময়টা একটু বেশি লেগে যায়। প্রায় চার বছর। চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ৬১ করে আউট হয়েছিলেন তামিম। তাঁর মাইলফলকের ম্যাচগুলোয় এ ইনিংসটাই যতটুকু সবেধন নীলমণি সাফল্য।

পরের ৫০টি ম্যাচ খেলতেও প্রায় চার বছর সময় লাগল তামিমের। কথাটা একটু আগেভাগেই বলা হয়ে গেল। ভারতের বিপক্ষে আজ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু না ঘটলে তামিম খেলছেন তা নিশ্চিত। আর এ ম্যাচটা হবে ওয়ানডেতে তামিমের ২০০তম ম্যাচ। আর বাংলাদেশের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই।

হারলেই ধূলিসাৎ হবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার আশা। এমন ম্যাচে ওয়ানডেতে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান, সেঞ্চুরি ও ফিফটির মালিকের কাছ থেকে বড় ইনিংস আশা করতেই পারে বাংলাদেশ।

আশা কী, বিষয়টি এখন সময়ের দাবি। বিশ্বকাপের এ পথ পর্যন্ত ব্যাটিংয়ে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সিনিয়রদের মোটামুটি সবাই পারফর্ম করেছেন। শুধু তামিমের ব্যাট দপ করে জ্বলতে গিয়ে বারবার নিভে যাচ্ছে। এ নিয়ে সমর্থক, সতীর্থের চেয়ে তামিমের হতাশাই সবচেয়ে বেশি। চলতি বিশ্বকাপে থাকতেই তা জানিয়েছেন। আর কে না জানে, তামিমের ভালো করার খিদে অন্য রকম। প্রতিটি ম্যাচ ধরে ধরে প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। কিন্তু বিশ্বকাপ এলেই তামিমের যেন কী হয়। এবারও যেমন ব্যাটে-বলে তেমন একটা হচ্ছে না।

সহজ কথায়, বিশ্বকাপ শুরুর আগের তামিম আর বিশ্বকাপের তামিম এক না। শুধু বাংলাদেশ দলের বাকি ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে তুলনা করলেই পার্থক্যটা টের পাওয়া যায়। ৬ ম্যাচে তামিমের স্ট্রাইকরেট ৭৪.২৭। মাশরাফি বিন মুর্তজা বাদে দলের বাকি সব ব্যাটসম্যান-অলরাউন্ডারদের স্ট্রাইকরেটও তামিমের ওপরে। ব্যাটিং গড় ৩৪.১৬, ফিফটি মাত্র ১টি। এ ৬ ম্যাচের প্রায় প্রতিটিতেই তামিম ভালো শুরু পেয়েছেন। কিন্তু সেট হওয়ার পর বড় ইনিংস খেলে আসতে পারেননি। তাতে বল ও রানের ব্যবধানটাও চোখে বিঁধে থাকার মতো।

বিঁধে থাকা এ কাঁটা আজ কি উপড়ে ফেলতে পারবেন তামিম? নতুন ম্যাচ মানেই নতুন করে প্রস্তুতি, মানসিক ব্যাপারটাও থাকে আলাদা। আর ভারতের বিপক্ষে তামিমের ব্যাট বরাবরই বেশ চওড়া। যে দুজন ব্যাটসম্যান ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৭টি ফিফটি পেয়েছেন, তামিম তাঁদের একজন—সাকিব আরেকজন। এ ছাড়া নিরপেক্ষ মাঠে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র জয়ে তামিমের অবদানও স্মরণীয়। এক কথায়, ওই ম্যাচে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা শটগুলোর একটি খেলেছেন তামিম।

ঠিক ধরেছেন। ২০০৭ বিশ্বকাপ, পোর্ট অব স্পেন, ডাউন দ্য উইকেট এসে মিড উইকেট দিয়ে জহির খানকে বাতাসে ভাসানো সেই ছক্কা, যা গিয়ে পড়েছিল গ্যালারির দ্বিতীয় তলায়। সেই তামিম আর এই তামিমে কত পার্থক্য! সেটি ছিল তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ম্যাচ। টগবগে তরুণ স্ট্রোকমেকার আরকি! সময় গড়িয়ে সেই তামিম এখন অনেক পরিণত। আজ ভারতের বিপক্ষে কিন্তু পরিণত তামিমকেই দরকার—যিনি ইনিংস গড়ে অন্তত ৩৫-৪০ ওভার পর্যন্ত টেনে দিতে পারবেন।

আর আজ ভেন্যু যেহেতু বার্মিংহামের এজবাস্টন, এ মাঠেও ভারতের বিপক্ষে ভালো একটি ইনিংস রয়েছে তামিমের। সেই যে দুই বছর আগে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল। ভারতের বিপক্ষে সে ম্যাচে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তামিম। বাংলাদেশ হেরেছিল, কিন্তু তামিম ৮২ বলে ৭০ রানের সেই ইনিংসে ত্রাসের সঙ্গে সৌন্দর্যের সঞ্চার করেছিলেন।

সেই একই মাঠ, একই প্রতিপক্ষ, ভয়াল-সুন্দর তামিমকে ভীষণ প্রয়োজন তাঁর দলেরও। তামিম শুনতে পাচ্ছেন, ২০০-র মঞ্চ কিন্তু ডাকছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.