Sylhet Today 24 PRINT

বিশ্বকাপে প্রত্যাশা পুরণ করতে পারেননি যেসব মহাতারকা

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

স্পোর্টস ডেস্ক |  ১৪ জুলাই, ২০১৯

বড় মঞ্চে বড় তারকাদের নিয়ে আশা করে থাকে সব দল। যদি সেই টুর্নামেন্টের আগে সেই ক্রিকেটাররা দুর্দান্ত ফর্মে থাকেন, তবে প্রত্যাশার মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়। অন্যদিকে বিশ্বকাপ মানেই চাপ, অনেক বড় খেলোয়াড়দের দেখা গিয়েছে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ কিংবা অন্য টুর্নামেন্টে খুব ভালো করলেও বিশ্বকাপের মঞ্চে এসে ভড়কে যান। চলতি বিশ্বকাপেও অনেক ক্রিকেটারের ওপর ছিল সমর্থক ও ভক্তদের প্রত্যাশা। কিন্তু তারা সবাই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। জেনে নেওয়া যাক তেমন কয়েকজন সম্পর্কে।

তামিম ইকবাল

বাংলাদেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল গত ৪ বছরে বিশ্বেরই অন্যতম সেরা ওপেনার হয়ে উঠেছিলেন। ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ এই চার বছরে তামিম ইকবালের ব্যাটিং গড় সর্বনিম্ন ছিল ৪৫.২২, সর্বোচ্চ ৮৫.৫০ রান। ব্যাটিংয়ের মারকুটে ভাব আগের মতো না থাকলেও তামিম ইকবাল গড়ের দিক থেকে এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা ওপেনিং ব্যাটসম্যান। কিন্তু তামিম বিশ্বকাপের মঞ্চে ৮ ম্যাচে রান করেন ২৩৫। স্ট্রাইক রেট মাত্র ৭১।

রানের দিক থেকে তামিম বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিন নম্বরে থাকলেও ইনিংসের শুরুতে তার ধীরগতির কারণে অনেক ম্যাচেই পরের ব্যাটসম্যানদের ওপর তা চাপ তৈরি করেছে। স্বভাবসুলভ মারকুটে ব্যাটিং এড়ানোর চেষ্টা করেও বেশ কয়েকটি ম্যাচে ৩০-৪০ বল খেলেই আউট হয়ে গেছেন।

ক্রিস গেইল

এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় ফ্লপ মেরেছেন 'দ্য ইউনিভার্স বস' খ্যাত ক্রিস গেইল। তিনি বিশ্বকাপ শুরু করেছিলেন ৫০ রানের একটি ইনিংস দিয়ে। এরপর যথাক্রমে ২১, ৩৬ ও ০ রান। নিউজিল্যান্ডের সাথে ৮৭ রানের একটি ইনিংস খেললেও সেটা দলকে জেতাতে যথেষ্ট ছিল না। শেষ তিন ম্যাচে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সাথে মোট রান তোলেন ৪৮। ৯ ম্যাচে ২৪২ রান তোলেন তিনি, স্ট্রাইক রেট ৮৮। এই পরিসংখ্যান গেইলের সুনামের সাথে একেবারেই মানানসই নয়।

মার্টিন গাপটিল

ভক্তদের সম্ভবত সবচেয়ে হাতাশ করেছেন মার্টিন গাপটিল, যদিও তার দল ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ফিফটি করে শুরু করেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে তার ব্যাটে বল আসছিল দারুণভাবে। কিন্তু বিশ্বকাপ যত সামনে এগিয়েছে গাপটিলের ব্যাটে রান আর আসেনি। এমনকি দুটো ডাকও আছে তার। মার্টিন গাপটিলের দুর্দান্ত থ্রোতে সেমিফাইনালে আউট হন মাহেন্দ্র সিং ধোনি

লিগ পর্বে আটটি ম্যাচে ১৬৬ রান তুলেছেন মার্টিন গাপটিল। অথচ চার বছর আগে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে তিনিই ছিলেন সুপার স্টার। সেবার সর্বোচ্চ ২৩৭ রান সহ ৯ ম্যাচে মোট ৫৪৭ রান তোলেন মার্টিন গাপটিল। বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। অবশ্য এবার দলকে রান দিতে না পারলেও অসামান্য ফিল্ডিংয়ের জন্য নিউজিল্যান্ড সমর্থকরা তাকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। বিশেষ করে সেমিফাইনালে ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ডিরেক্ট থ্রোতে রান আউট করে দলকে ফাইনালে নিতে ভূমিকা রাখেন এই ব্যাটসম্যান।

গ্লেন ম্যাক্সওয়েল

বিধ্বংসী গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ওপর ভরসা রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া, পাঁচ বা ছয় নম্বরে ব্যাট করে অনেক ম্যাচেই খেলা ঘুরিয়ে দেয়ার সামর্থ্য তার আছে। এই বিশ্বকাপেও কঠিন পরিস্থিতিতে ব্যাট হাতে মাঠে নামতে হয়েছে তাকে। কিন্তু একটি ম্যাচেও প্রত্যাশিতভাবে ব্যাট করতে পারেননি। যে কারণে বেশ কয়েকটি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া বড় রান পাওয়ার সুযোগ থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ৯ ম্যাচে ম্যাক্সওয়েল তুলেছেন ১৫৫ রান। অর্থাৎ গড় মাত্র ২২.১৪ যা তার মত ব্যাটসম্যানের জন্য অনেক কম।

আন্দ্রে রাসেল

বিশ্বকাপের আগে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের পারফরম্যান্সের পর আন্দ্রে রাসেলকে নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হচ্ছিল প্রতিপক্ষদের। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সি গায়ে দেয়ার পরই যেন বিবর্ণ হয়ে গেলেন তিনি। মাঝপথে হাটুঁর চোটের কারণে রাসেলের বিশ্বকাপ শেষ হয়। ৪ ম্যাচে মাত্র ৩৬ রান তোলেন তিনি।

রশিদ খান

আফগানিস্তানের রশিদ খান বিশ্বেরই অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন গত ৩-৪  বছরের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের কারণে। বোলিং র‍্যাঙ্কিংয়ে তার অবস্থান ৮ নম্বরে। মাত্র ৬৮টি ওয়ানডের ক্যারিয়ারে তার উইকেট সংখ্যা ১৩১। যদিও বেশিরভাগ উইকেটই আইসিসির সহযোগী দেশগুলোর বিপক্ষে। বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি আসরে সফল হলেও বিশ্বকাপে রশিদ খান ছিলেন একদমই ফ্লপ।

৯ ম্যাচে ৭১ ওভার বল করেন আফগানিস্তানের এই লেগ স্পিনার। রান দিয়েছেন ৪১৬, উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৬টি। অর্থাৎ তার গড় ছিল ৬৯.৩৩ যেটা তার মত বোলারের জন্য একেবারেই সুবিধার নয়। যদিও আফগান দলকে নিয়ে কেউই খুব বড় কিছু আশা করেননি, কিন্তু নয়টি ম্যাচের সবগুলোতেই তাদের পরাজয় যেন রশিদ খানের এই ব্যর্থতাকে আরো বড় করে তুলছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.